এমডি পাঠ্যক্রমে এই প্রথম রূপান্তরকামী চিকিৎসক।
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রচারের রোশনাই ছাড়াই ইতিহাস রচনা করলেন হায়দরাবাদের চিকিৎসক রুথ পল জন কোয়ালা (ছবি)। ভারতে তিনিই প্রথম চিকিৎসক যিনি এমডি (ইমার্জেন্সি মেডিসিন), অর্থাৎ চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির সুযোগ পেলেন।ডাক্তার কোয়ালা এমডি করবেন হায়দরাবাদের ইএসআই হাসপাতালে।ডাক্তারিতে স্নাতক হওয়ার বেশ কিছুদিন পরে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে হায়দরাবাদের সরকারি ওসমানিয়া জেনারেল হন।এখানে বর্তমানে তিনি এইচআইভি/এইডস সংক্রান্ত অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) বিভাগে রোগী দেখেন!এখানেই শেষ নয়, এমডি প্রবেশিকা পরীক্ষায়
তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন।অধুনা তেলেঙ্গানার খাম্মামের একটি সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম এই চিকিৎসকের। তবে আশৈশব এক কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে যেতে হয় তাকে। তার বয়স যখন মাত্র আট, রূপান্তরকামী হওয়ার জন্য তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হন। খাম্মাম থেকে চলে আসেন হায়দরাবাদে চরম অপমান, সমাজের গঞ্জনায় কাটে তার শৈশব থেকে কৈশোর।কিন্তু ছোট থেকেই স্কুলে মেধাবী ছিলেন। শরীরে পুরুষ হলেও তার মন ও সত্তাজুড়ে ছিল নারী।হায়দরাবাদের মাল্লা রেড্ডি ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস থেকে এমবিবিএস পাস করেন কোয়ালা।সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আট বছর বয়স থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি আমি। ছোট থেকেই নিজের নিষ্ঠায় অবিচল থেকেছি। কঠোর অধ্যবসায় তো ছিলই, পাশাপাশি ছিল সমাজের বিরুদ্ধে জীবনের প্রতিটি স্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠার লড়াই।২০১৮ সালে এমবিবিএস শেষ করার পর, অন্তত ২০টি হাসপাতাল আমাকে কাজে যোগদান করতে প্রত্যাখ্যান করে। তারা মূলত আমার বাহ্যিক রূপ এবং আমার রূপান্তরকামী জীবনকে কটাক্ষ করেছিল।’ তবে ২০২০ সালে পরিস্থিতি পাল্টায় যখন তিনি অন্য একজন রূপান্তরকামী মহিলা চিকিৎসক ডাঃ প্রাচি রাঠোরের সঙ্গে হায়দরাবাদে ইউএসএআইডি-র ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিকে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কাজে যোগ দেন। সেখান থেকে ক্রমে ওসমানিয়া হাসপাতালে। তবে সেই উত্তরণও মসৃণ ছিল না।তেলেউঙ্গ ওয়ারাঙ্গালের কালোজি নারায়ণ রাও ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ য়েন্সেস(কেএনইউএইচএস) কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছিল, তার এমবিবিএসের শংসাপত্রের সঙ্গে সরকারি নথি মিলছে না।এ প্রসঙ্গে কোয়ালা তাদের জানান, তিনি একজন রূপান্তরকামী। (তখন) মহিলা। কিন্তু যখন তিনি ডাক্তারি পাস করেন, শংসাপত্রে তখন তার পুরুষের নাম ছিল। পরে, তেলেঙ্গানা সরকার থেকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ পরিচয়পত্র হাতে পান কোয়ালা। সেই সূত্রে তাকে ফিমেল ওয়ার্ডে রোগী দেখতে পাঠানো হয়। ডা. কোয়ালার কথায়, ‘২০১৪ সালে। সুপ্রিম কোর্ট রূপান্তরকামীদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে মৌলিক অধিকার পাওয়ার স্বীকৃতি না দিলে আজকে আমি এই জায়গায় আসতে পারতাম না।