এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অষ্টাদশ লোকসভায় স্পীকার নির্বাচিত হয়েই ফের বিতর্কে জড়ালেন ওম বিড়লা।সপ্তদশ লোকসভায় সংখ্যার জেরে বিজেপি। এবং স্পীকার ওম বিড়লা লোকসভায় বহু বিতর্কে জড়িয়েছেন।কিন্তু অষ্টাদশ লোকসভায় স্পীকার নির্বাচন নিয়ে যখন ধরে নেওয়া হয়েছিলো যে ভোটাভুটি হবে তখন ওম বিড়লাই যে এনডিএ শিবিরের স্পীকার পদে পুনরায় পছন্দের প্রার্থী হবেন তা প্রথমে টের পাওয়া যায়নি। স্পীকার পদে ওম বিড়লার মনোনয়ন করে মোদি শাহরা বিরোধী ইন্ডিয়াকে এটা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, বিরোধীরা যতই বলাবলি করুক যে, এবার জনতার রায় অন্য খাতে রয়েছে, শাসক শিবির তা পাত্তা দিতে নারাজ।বরং কিছুই হয়নি’ এমন ভাব নিয়েই শাসক শিবির চলতে চাইছে এবং বিরোধীদের বার্তা দিতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার টিম কোন মতেই মানতে চাইছে না যে এবার আর বিজেপি সরকার নয়, এনডিএ সরকার।২ দফায় যথাক্রমে ২৮২, এবং ৩০৩-এর সংখ্যা নিয়ে নামে এনডিএ সরকার চালালেও এবারই নরেন্দ্র মোদিকে প্রতি পদে পদে ‘এনডিএ সরকার’ হিসাবে চলতে হবে।এবং শরিক দলগুলিকে তুষ্ট করতে হবে আগে।তাই মোদি-শাহ’র তুরুপের তাস ছিল এবার স্পীকার নির্বাচন।বিরোধীরা ডেপুটি স্পীকারের দাবি করলেও সেই শর্ত মানতে চায়নি বিজেপি শিবির।শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়া স্পীকার পদে প্রার্থী দাঁড় করালেও,তা নিয়ম রক্ষার লড়াই তা সকলেরই জানা ছিল।তাই ওম বিড়লাকে জিতিয়ে আনতে মোদি-শাহকে কোন বেগই পেতে হয়নি।প্রশ্ন হলো ওম বিড়লাকে কেন দ্বিতীয়বার বাছলেন মোদি-শাহ? জিএমসি বালাযোগী,বলরাম জাখরাদর নামের পাশে ইতিহাসের কীর্তিগাথা হিসাবে ওম বিড়লা চলে এলেও ওম বিড়লার বাছাইয়ের পেছনে মোদি-শাহ’র অন্যরকম সমীকরণ কাজ করছে।প্রথম সপ্তদশ বিধানসভায় অধিবেশনে একতরফা চালাতে এবং বিরোধীদের কন্ঠরোধ করতে ওম বিড়লা নিরলস কাজ করে গেছেন। একসাথে একদিনে ৭৮ জন সাংসদকে সংসদ থেকে বহিস্কার করার রেকর্ড গড়েছিলেন স্পীকার ওম বিড়লা।সব মিলিয়ে যে সংখ্যা ১১৩-১১৪ তে গিয়ে দাঁড়ায়। যা দেশের ইতিহাসে কোনদিন হয়নি।এরপর খালি সংসদে একের পর এক বিল পাসে সিলমোহর দেন স্পীকার বিড়লা সাহেব।
বিরোধীদের মাইক বন্ধ করা দেওয়া তো ছিল তার রোজকার বিষয়।উপরন্তু রয়েছে দল ভাঙানোর খেলা। শিবসেনাকে ভাঙা হয়েছে। এনসিপিকে ভাঙা হয়েছে। স্পীকার নীরব, কোন ভূমিকা নেই।সংসদে শাসক দলের সাংসদদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে কার্যত চুপ থেকেছেন।এমনকী ধর্ম নিয়ে কদর্য আক্রমণ করলেও শাসক দলের সাংসদকে তিনি কিছু বলেননি।যদিও বিরোধী দলের সাংসদরা মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠামাত্র তা তিনি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সংসদের এথিক্স কমিটির কাছে।সেই এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান এবার ভোটে হেরে গিয়েছেন।কিন্তু বহিষ্কার হওয়া সাংসদ মহুয়া ফের জিতে এসেছেন।বহু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সাক্ষী এক স্পীকার ফের স্পীকার পদে বসিয়ে মোদি-শাহরা ফের বিরোধীদের ঘায়েল করার প্ল্যান করেন।যার ইঙ্গিত পাওয়া গেল প্রথম দিন থেকেই।স্পীকার পদে নির্বাচিত হবার পর ওম বিড়লার বেজায় স্তুতি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, আশা করি বিরোধীদের ‘ভয়েস’ সংসদে উচ্চারিত হতে স্পীকার এবার সহায়তা করবেন।স্পীকার হচ্ছেন সংসদের অভিভাবক। বিচারক।তিনি নিরপেক্ষ থাকবেন এটা সবাই আশা করেন।তাই স্পীকার নির্বাচন সর্বসম্মতভাবেই হয়।এটাই প্রচলিত রীতি।কিন্তু অষ্টাদশ লোকসভা সেই রীতি ভাঙল। স্পীকার নির্বাচন এবারই প্রথম সর্বসম্মতভাবে হয়নি। এর অর্থ বিরোধীদের সাথে স্পীকারের সংঘাত অনিবার্য। দ্বিতীয় দিনেই টের পেলো সংসদ।
ঘটনা এক: কংগ্রেসের শশী থারুর শপথ নিয়ে ‘জয় সংবিধান’ বলতেই স্পীকার বলে ওঠেন সংবিধানের শপথই তো নিচ্ছেন। কংগ্রেসের দীপেন্দ্র হুড্ডা বলে ওঠেন, এতে স্পীকারের আপত্তির কী আছে?স্পীকার ওম বিড়লা জবাবে বলেন, কিসে আপত্তি আর কীসে আপত্তি হবে না তার পরামর্শ আপনার কাছ থেকে নেব না। ধমক দিয়ে তাকে বসিয়ে দেন।
ঘটনা দুই:-রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের উপর বলতে উঠেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, দেশের ছাত্ররা নীট নিয়ে উদ্বিগ্ন। এজন্য আমরা আলোচনা করতে চাই।একটা বার্তা যাক ছাত্রদের কাছে।এমন সময়ই রাহুল গান্ধীর মাইক বন্ধ হয়ে গেল।রাহুল গান্ধী মাইক চালুর দাবি জানান, স্পীকারের কাছে।স্পীকার জানান তার কাছে মাইক বন্ধের স্যুইচ থাকে না। সঙ্গে সঙ্গে টিভি ক্যামেরার মুখ ঘুরে গেল স্পীকারের দিকে। একে সংসদে বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত, বিরোধীদের সংসদে গলা অবরুদ্ধ করার চেষ্টা বলে অভিহিত করেছে ইন্ডিয়া জোট।
উপরোক্ত ২ টি ঘটনায়ই স্বিকার বিড়লা সাহেব জানিয়ে রাখলেন যে, ২৪০ হলেও তিনি মচকাবেনও না। ভাঙবেনও না। বিরোধীবা এবার যা বোঝার বুঝে নিন।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

9 hours ago

সাব ইনস্পেক্টর অব এক্সাইজ নিয়োগে, সরকারের নিয়োগনীতি কার্যকর করছে না টিপিএসসি, ক্ষুব্ধ বেকাররা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০১৮ সালে নতুন নিয়োগনীতি চালু করেছে রাজ্য সরকার। ২০১৯ সাল থেকে রাজ্য সরকারের…

10 hours ago

কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপক প্রচার সত্ত্বেও,হাসপাতালে জনঔষধির সস্তা ওষুধ সংকটে রোগীরা বঞ্চিত!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সস্তায় ভালো গুণমানসম্পন্ন জনঔষধি তথা জেনারিক মেডিসিন…

10 hours ago

শান্তিরবাজারে ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন জগন্নাথ পাড়া!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শান্তিরবাজারে সিনিয়র টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হলো জগন্নাথপাড়া প্লে সেন্টার টিম। রবিবার বাইখোড়া ইংলিশ…

10 hours ago

বামফ্রন্টের রেখে যাওয়া ১২,৯০৩ কোটি সহ,রাজ্যে বর্তমানে ঋণের পরিমাণ ২১,৮৭৮ কোটি টাকা: অর্থমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৩-২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত রাজ্য সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২১.৮৭৮ কোটি…

11 hours ago

ক্রাইম ব্রাঞ্চের শক্তিবৃদ্ধিতে গুচ্ছ পদক্ষেপ : মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বিগত ছয় মাসে ত্রিপুরা পুলিশ ক্রাইম ব্রাঞ্চকে ২২টি মামলা হস্তান্তর করা হয়েছে।২০২৪ সালের…

11 hours ago