ওয়াইফাই থেকে জুতো পালিশ, কাদিরের ক্যাবে চড়লেই চমক।
বড় শহরে মানুষের কাছে যাতায়াতের বড় ভরসা ‘অ্যাপ ক্যাব’। বর্ষামুখরিত রাত হোক অথবা বন্ধুর বার্থ ডে পার্টি! মোবাইলের এক ক্লিকেই ঘরের দুয়ারে এসে হাজির হয় ক্যাব। অনেকে রসিকতা করে বলেন, ভাল ক্যাব চালক ভাগ্যে জুটলে যে কোনও সফর হয়ে উঠে মনোরম। যদিও ক্যাব সম্পর্কে বহু যাত্রীর অভিযোগ, চালকরা সঠিক সময়ে আসেন না, অকারণে ট্রিপ ক্যানসেল করে দেন, গাড়ির এসি চালু করেন না ইত্যাদি। কিন্তু দিল্লিতে আবদুল কাদির নামে এক ক্যাব চালক ক্যাব-সফরের সংজ্ঞাই কার্যত বদলে দিয়েছেন।ওই চালক এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন সেনশেসন। কাদিরের গাড়িতে উঠলে একজন যাত্রী প্রায় সব ধরনের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বিভিন্ন শুকনো খাবার থেকে পানীয়, ওয়াইফাই থেকে সংবাদপত্র সবই পাবেন। সর্বোপরি পাবেন বিনামূল্যে জুতো পালিশ করার সুবিধাও।
গত ২৬ জুন শ্যামলাল যাদব নামের এক যাত্রী টুইটারে নাদিরের গাড়ির ভিতরের ছবি (সঙ্গের ছবি) পোস্ট করে লেখেন, ‘আজ আমি ‘উবার’-এর পরিষেবা নিয়েছি। ড্রাইভারের উদারতায় আমি মুগ্ধ। এই চালক গত সাত বছরে কোনও যাত্রীর রাইড বাতিল করেননি। তার গাড়িতে অনেক কিছু আছে। হ্যাঁ, ফার্স্ট এইড কিট থেকে শুরু করে রাইডারদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র,এবং যা ব্যবহারের জন্য আবদুল কোনও অতিরিক্ত চার্জ নেন না।” বহু মানুষ মন্তব্যের ঘরে ক্যাব চালকের প্রশংসা করছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য নিজের ক্যাবে একটি দানবাক্স রেখেছেন চালক। যাত্রীর মন চাইলে সেখানে কিছু দান করলে কাদির সেই টাকা যথাস্থানে পৌঁছে দেন।স্থানীয় মানুষের অনেকেই এই প্রতিবেদককে জানান, মিনারেল ওয়াটার এবং কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ওষুধ, বিস্কুট, পারফিউম, দৈনিক পত্রিকা, মাস্ক, জুতার পালিশ, ডাস্টবিন, ছাতা সবই আছে আবদুল কাদিরের এই ক্যাবে। তিনি ক্যাবে একটি নোটিশও রেখেছেন, যাতে লেখা আছে- ‘আমরা প্রত্যেক ধর্মের মানুষকে সম্মান করতে জানি’। ওই ক্যাবে ‘বিনীত আবেদন’ মর্মে আরও লেখা আছে, “আমাদের একে অপরের প্রতি বিনয়ী হওয়া উচিত এবং যারা সমাজের জন্য ভাল কাজ করে তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া উচিত।’ শুধু তাই নয়, ওই ক্যাবে আর একটি নোটিশে লেখা, ‘এই ক্যাবের সব সুবিধা একদম ফ্রি এবং এতে ওয়াই-ফাই সুবিধাও আছে।