১৩৭টি বছর কেটে গেছে মে দিবসের।১৮৮৬ থেকে ২০২৩ সাল।এক এক করে মে দিবসের এতগুলো বছর কেটে যাবার পর শুধু মে দিবসকে প্রভাতফেরী, আর রক্তপতাকার সামনে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত তুলে অতীতকে স্মৃতিচারণ করলে ইতিহাস কখনোই ভবিষ্যতের রাস্তা প্রশস্ত করবে না। বরং আট ঘন্টা কাজ, সম মজুরি আয়, সম্মানজনক মর্যাদার দাবিতে লড়াইয়ের চেতনা থেকে যে শ্রমিক দিবস পালনের সূচনা হয়েছিল,আজ এতগুলো বছর পর বিশ্বে শ্রমজীবী মানুষের পথচলা কতটা মসৃণ হয়েছে, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এটাই ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতিপাদ্য বিষয়।শিকাগোর শ্রমিক সমাবেশ আর রক্তঝরা স্মৃতিকথা নিয়ে এখনও যদি ইতিহাসের পাতায় আলোচনাকে সীমাবদ্ধ রাখতে হয়,তাহলে ইতিহাস স্থবির হয়ে যাবে। ইতিহাসকে জীবন্ত, সময়োপযোগী এবং সভ্যতার অগ্রগতির আলোকযাত্রা হিসাবে তুলে ধরতে হলে আজ ১৩৭ বছর পর মে দিবসের মূল্যায়ন করারও সময় এসেছে।ফরাসী বিপ্লবের সময় সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার
পাশাপাশি আরও যে স্লোগানটি প্যারি কমিউনকে আন্দোলিত করেছিল সেটি হচ্ছে মতপ্রকাশের অধিকার সুনিশ্চিত করা। ঠিক একইভাবে ফরাসী বিপ্লবের চেতনা থেকেই জন্ম নেওয়া মে দিবসের ভাবনা বিশ্বে শ্রমিককে তার শ্রমের অধিকারের পাশাপাশি তাকে কতটা মর্যাদা দিয়েছে, আজ এতগুলো বছর পর সেটা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষকে খুঁজে দেখতে হবে। একটা কথা এখনও হলফ করে বলে দেওয়া যায়, বিশ্ব জুড়ে যতই ঘটা করে শ্রমিক দিবস পালিত হোক না কেন, এখনও যাদের জন্য এই দিবস উদযাপন,তারা কতটা জানেন এই দিনটির মাহাত্ম্য?আর যদি এর ইতিহাস জেনে থাকেনও,শ্রমিকদের এই ইতিহাস তাদের জীবনে কতটা সাড়া ফেলেছে,মে দিবসকে কতটা তারা ভোগ করেছেন সেটাও তাদের জীবনকে দিয়ে যদি উপলব্ধি করতে না পারেন তাহলে মে দিবস শুধুই একটা আড়ম্বর উদ্যাপন ছাড়া আর কিছু নয়।১৩৭ বছরের দীর্ঘ সময়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ না করেও বলা যায়,গত পঞ্চাশ বছরে মানব সভ্যতার অগ্রগতি,বহুমুখী বিকাশ,জীবনের বৈভব সবকিছুই তাক লাগিয়ে বেড়েছে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের হাত ধরে। এতে সমাজের সমৃদ্ধি ঘটেছে,রাষ্ট্রের সম্পদ বেড়েছে,সর্বক্ষেত্রে উৎপাদন বেড়েছে।ঠিক এর পাশাপাশি অন্য এক বিশ্বেরও জন্ম হয়েছে এই সময়ের মধ্যে। এটা হলো,বৈষম্যে ভরা বিশ্ব পরিস্থিতি।একদিকে আকাশছোঁয়া প্রাচুর্য,অপরদিকে ভাঙাচোরা কুঁড়েঘর থেকে আকাশ দেখার দারিদ্র্য। একদিকে ধনীদের বিলাসিতা, অন্যদিকে শিশু ও অসুস্থ নারীকেও পেটের তাগিদে কাজের জন্য ছুটতে যাওয়া।এই অসম পরিস্থিতি প্রযুক্তির চোখ ধাঁধানো উন্নতি সত্ত্বেও কমানো যায়নি, বরং বেড়েছে।বাড়ছে বেকারত্ব। শুধু অদক্ষ শ্রমিকই নয়, উচ্চশিক্ষিত বিশেষ কর্মদক্ষ প্রশিক্ষিত শ্রমিকের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।কিন্তু কর্মসংস্থানের দেখা নেই।লাগামহীন বেকারত্ব সমাজ ও রাষ্ট্রের সামনে বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে।অপুষ্টি,ক্ষুধা, দারিদ্র্য,অশিক্ষা প্রকট হচ্ছে। অথচ পৃথিবীর অর্ধেক সংখ্যক মানুষের কাছে যে সম্পদ রয়েছে, সেই সমপরিমাণ সম্পদ গোটা বিশ্বের ১০ থেকে ১২ জন ধনাঢ্য ব্যক্তির কাছে সঞ্চিত আছে।আর পৃথিবীর অবশিষ্ট মানুষ হয় সম্পদহীন কিংবা আশ্রয়হীন। সংকটকে আরও তীব্র করেছে প্রযুক্তির দৌড়।এতে চাকরির সংকোচন হচ্ছে।ক্রয় ক্ষমতাহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে, মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে ন্যূনতম চাহিদাগুলো সে পূরণ করতে পারছে না।অথচ উৎপাদনের প্রাচুর্য বেড়ে চলেছে।২০১৯ সালের পর থেকে কোভিড উদ্ভুত পরিস্থিতি বিশ্বকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। কর্মচ্যুতি, স্বল্প বেতনে শ্রমিকের
সহজলভ্যতা,বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দেদার মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি – এই সবকিছুর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়া এবং বিশ্বময় অস্থির যুদ্ধ উন্মাদনা।এই সংকট আগামীদিনে বিশ্ব জুড়ে আরও তীব্র আকার নেবে।এর থেকে উত্তরণের জন্য স্থান-কাল-দেশ ভেদে সবার আগে নীরব দর্শকের ভূমিকা ছেড়ে সরকারগুলোকে যেমন অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে তেমনি মানবজাতির সুরক্ষার প্রশ্নে মানুষকেই মুক্তির সন্ধান খুঁজতে হবে।মে দিবসের চেতনাকে শুধু অতীতের ইতিহাসে বন্দি করে রাখলে চলবে না,অন্যথায় নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে যে নতুন নতুন সংকট মানব সভ্যতার সামনে দেখা দিয়েছে ‘তা আরও ভয়ংকর চেহারায় বেরিয়ে আসবে।এটাই জীবন্ত ইতিহাস।সবশেষে কবির কণ্ঠেই বলতে হয়, -ওরা চিরকাল, টানে দাঁড়,ধরে থাকে হাল,ওরা মাঠে মাঠে বীজ বোনে,পাকা ধান কাটে,ওরা কাজ করে নগরে প্রান্তরে। …… শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ-পরে ওরা কাজ করে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…