ওস্তাদের মার!!

 ওস্তাদের মার!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-কথায় আছে ওস্তাদের মার শেষ রাতে।আর সেই ওস্তাদের মারে শেষ রাতে এসে বিশ্বকাপ নিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।গোটা লীগে ভালো খেলেও বিশ্বকাপ জিততে ব্যর্থ হয়েছে রোহিত শর্মার দল।আরেকবার প্রমাণ হল যে বড় মঞ্চে ভারত এখনও যোগ্য দল নয়। আমেদাবাদে রবিবার দিনে রাতের ম্যাচে সব বিভাগেই ভারতকে হেলায় হারিয়ে বিশ্বকাপ নিজেদের পকেটে পুরে নিল প্যাট কামিন্সের দল।সব ভালো তার শেষ ভালো যার। ভারতের শেষটা ভালো হল। না। অথচ ভারত শুরুটা করেছিলা এই বিশ্বকাপে একেবারে চমকপ্রদ।একেবারে অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছিল ভারতকে।উল্টোদিকে শুরুটা একেবারে ভাল করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া,এমনকী আনাড়ি আফগানিস্তানের কাছে হেরে বিদায় নেবার অবস্থায় এসে গেছিল কামিন্সের দল।কিন্তু গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নামের এক অস্ট্রেলীয় দেখিয়ে দিয়েছিলো সেদিন কীভাবে বুক চিতিয়ে ম্যাচ জেতাতে হয়।এবারের বিশ্বকাপে এই ম্যাচটা ছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে টার্নিং পয়েন্ট।লীগ ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়া ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকে। এরপর সেমিফাইনাল এবং পরে ফাইনাল।ভারতের কাছে বিশ্বকাপে ছিল ব্যাপক প্রত্যাশার চাপ।১৪২ কোটির দেশ এবার প্রত্যাশা করেছিলো যে নিশ্চিতভাবে রোহিত শর্মার হাতেই ওঠছে শিরোপা।কিন্তু কোথায় কী, ফাইনালে যে ভারত এভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে তা ভারতের এত বড় সমর্থক স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি।দিকে দিকে যজ্ঞ,প্রার্থনা, জায়েন্ট স্ক্রীনে খেলা দেখার প্রস্তুতি। বাজি, আলোর রোশনাই সবই রাখা ছিল।স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মাঠে।ভারত জিতলে কত কী ঘোষণা হয়ে যেত কে জানতো।কিন্তু বিধাতা অন্যরকম কিছু ঠিক করে রেখেছিলো ভারতের ভাগ্যে। শেষ পর্যন্ত ট্রফি জেতা হলো না। কপিল দেব,মহেন্দ্র সিং ধোনিদের সাথে এক মঞ্চে আসতে পারলেন না রোহিত শর্মা।১৯৮৩ সালে ভারত যখন লর্ডসের ঢুকে বিশ্বক্রিকেটের সেরার শিরোপা পেয়েছিলো তখন আজকের মতো মিডিয়া ছিল না।এত প্রচার ছিল না। কপিল দেব নিখাঞ্জের মতো হরিয়ানার এক ‘হ্যারিকেন লর্ডসের ঢুকে ভারতের পতাকা উড্ডীন করে দেশে ফিরছিলেন।তখন ক্রিকেটকে ঘিরে এত অর্থ ছিল না। ক্রিকেটাররা সাদামাটা জীবনযাপন করতেন।এত সেলিব্রেশন ছিল না। ক্রিকেটাররাও সেলিব্রিটি ছিলেন না।২০১১ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনিও যখন বিশ্বকাপ জিতেছিলেন সেসময় আজকের মতো এতো মারমার কাটকাট অবস্থা ছিলো না।এবারের ১৪২ কোটির প্রত্যাশাটা ছিল একটু অন্যরকম।মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া সর্বোপরি শাসকের প্রচার যন্ত্র,এই বিশ্বকাপকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়।শেষপর্যন্ত অবশ্য স্বপ্নভঙ্গ হয় ভারতের।ব্যাট, বলে, ফিল্ডিং, ক্যাপ্টেনসি, সব ক্ষেত্রে রবিবার দিনটি ছিল অস্ট্রেলিয়ানদের।দিনের শুরুটা হয়েছিলো টস জেতা দিয়ে।টসে জিতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স যখন ফিল্ডিং নেবার সিদ্ধান্ত নেন তখন কিছুটা অবকাই হয়েছিলো ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে খুশি হয়েছিলেন রোহিতরা।আড়ালে বসে প্যাট কামিন্স হেসেছিলেন।কেননা তিনি যে উইকেটের চরিত্র বা ভাল করে বুঝতে পেরেছিলেন গত কদিন ধরে।শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়ারা রবিবার ফাইনালে ভালো হোমওয়ার্ক করেছিলো।ভারতের প্রতিটি ব্যাটারকে নিয়ে ভাল করে হোমওয়ার্ক করে এসেছিলো অসিরা।সেই অনুযায়ী বল করতেই ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে। কোনরকমে ২৪০ রান স্কোর বোর্ডে তুলে ইজ্জত রক্ষা করে ভারত।কিন্তু এসময়ে ২৪০ রান করাটা ডালভাতের শামিল।ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলতে থাকেন যে উইকেট স্লো,উইকেটে ২৭০-২৮০ রান করলেই ভারত ম্যাচটা জিতে যাবে।কিন্তু ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের বোকা বানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া টিম। অস্ট্রেলিয়া টিমের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে ভারত তিনশ রান করলেও হেলা ভারতকে হারাতে পারত অস্ট্রেলিয়া।হ্যাঁ,পীচকে ভালো করে বুঝেই তবেই কিনা টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলো কামিন্স।কামিন্স ক্যাপ্টেন টা রবিবার বেশ করেছিলেন। এনিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ জিতলো অস্ট্রেলিয়া।টেস্ট ক্রিকেটের পর ফের একদিনের ক্রিকেট বিশ্বসেরা ক্যাঙারুরা। অভিনন্দন কামিন্সদের।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.