কংগ্রেসের লেডি লাক !

 কংগ্রেসের লেডি লাক !
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

হিমাচল, কর্ণাটকের পর কি এবার টার্গেট মধ্যপ্রদেশ ?পাঁচ রাজ্যে ভোট হবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই।এই রাজ্যগুলি হলো মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরাম।এর মধ্যে ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু মাঝপথে পাওয়ার পলিটিক্সের খেসারত দিতে গিয়ে কংগ্রেসকে মধ্যপ্রদেশ হারাতে হয়েছে।তাই এবার কর্ণাটকের পর মধ্যপ্রদেশকে টার্গেট করেছে কংগ্রেস। রাজস্থানে কংগ্রেসের ২ শীর্ষনেতার মধ্যে লড়াই রয়েছে। মাঝে রাজ্যে সরকার পড়তে পড়তে বেঁচে যায়। তাই রাজস্থানে অশোক গেহলট এবং শচীন পাইলটের মধ্যে লড়াইয়ে বিজেপি সুবিধা নিলেও নিতে পারে। ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের অবস্থান বেশ মজবুতই।গত কয়েক বছরে ভূপেশ বাঘেল রাজ্যকে বেশ ভালোই চালিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের একটা সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছে শীর্ষ মহল।তেলেঙ্গানা এবং মিজোরামে কংগ্রেস ঝাঁপাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।তাই সম্ভাবনার রাজ্য হিসাবে এবার মধ্যপ্রদেশকে বেছে নিয়েছে কংগ্রেস।২০২৪-এ লোকসভা ভোটের আগে পাঁচ রাজ্যের ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচ রাজ্যের মধ্যে চার রাজ্যই মোটামুটি বড় রাজ্য।এর মধ্যে চার রাজ্যে লোকসভার মোট আসন রয়েছে ৮২টি। (মধ্যপ্রদেশ ২৯, ছত্তিশগড় ১১, রাজস্থান ২৫ এবং তেলেঙ্গানা ১৭)।এই রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস যদি ভালো ফল করতে পারে তাহলে ২০২৪ সালে বিজেপিকে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে কংগ্রেস দল।নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হবার পর কংগ্রেসের খরা শুরু হয়। কোনও রাজ্যেই কংগ্রেস মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না।আবার এমনও হয়েছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল, রাজ্য হারাতে হয়েছে। পাঞ্জাবে কংগ্রেসের কাজিয়ার দৌলতে রাজ্যটি হাতছাড়া হয়। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস শরিক দল হিসাবে ছিল।কিন্তু বিজেপি পাওয়ার পলিটিক্সে হারাষ্ট্র ছিনিয়ে নেয়।রাজস্থান কোনওরকমে এখনও রক্ষা করছে কংগ্রেস।মধ্যপ্রদেশেও কংগ্রেস গত পাঁচ বছর আগে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং কমলনাথের মধ্যে কাজিয়ার সুযোগ নেয় বিজেপি। জ্যোতিরাদিতাকে নিজেপিতে টেনে এনে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটিয়ে দেয় বিজেপি।ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যান শিবরাজ সিং চৌহান।সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের জয় একটা টার্নিং পয়েন্ট মনে করছে দল। হিমাচলের পর কর্ণাটক জিতে নিয়েছে কংগ্রেস।দুই রাজ্যেই কাণ্ডারির ভূমিকায় ছিলেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।কর্ণাটকের জাতপাতের রাজনীতি এবং বিভাজনের রাজনীতি করতে গিয়ে মার খেয়েছে বিজেপি। এবার কর্ণাটক থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আগে থেকেই মধ্যপ্রদেশকে টার্গেট করেছে কংগ্রেস।কংগ্রেস দাবি করছে মধ্যপ্রদেশে এরার ১৫০ আসন চাই।মধ্যপ্রদেশে মোট বিধানসভার আসন রয়েছে ২৩০।পাঁচ রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজ্য মধ্যপ্রদেশ। বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। কংগ্রেসের লেডি লাক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আগেভাগেই মধ্যপ্রদেশের ময়দানে নামাচ্ছে কংগ্রেস। কংগ্রেস মনে করছে হিমাচলে প্রিয়াঙ্কার লেডি লাক কাজ করেছে। এরপর কর্ণাটকেও সফল প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাই এবার মধ্যপ্রদেশে লেডি লাক প্রিয়াঙ্কা সফল হবেন।আগামী মাসেই প্রিয়াঙ্কার জনসভা, রোড শো হবে মধ্যপ্রদেশে।অন্যদিকে বিজেপির ঘরে রয়েছে প্রবল অসন্তোষ। রাজ্যে বিজেপির তিন গোষ্ঠী রয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহানের গোষ্ঠী,জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার এক গোষ্ঠী এবং বিজেপি সভাপতি ভিডি শর্মার অপর গোষ্ঠী।উল্টো দিকে কংগ্রেসের মধ্যে কোনও গোষ্ঠীকোন্দলের খবর নেই। কর্ণাটকে যেমন এবার কংগ্রেস বরাবরই দাবি করে আসছিল যে, তারা একজোট,ঐক্যবদ্ধ। ভোটের আগে থেকেই শিবকুমার এবং সিদ্ধারামাইয়ার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছিল।নির্বাচনের পর ফল ঘোষণার পরও তা জারি ছিল।কিন্তু এর প্রভাব কোনওভাবেই কংগ্রেসের উপর পড়েনি। ফলে কংগ্রেস দারুণ ফল করেছে কর্ণাটকে।অন্যদিকে বিজেপির ঘরে কোন্দলের জেরে মধ্যপ্রদেশে দিশাহারা দল।চাপে রয়েছে বিজেপি। হিমাচল, কর্ণাটকের পর এবার পাঁচ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেস যদি ২ রাজ্যেও ক্ষমতায় চলে আসতে পারে তাহলে কিন্তু বিজেপির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে চলেছে এবং সেই সম্ভাবনাই প্রবল। কংগ্রেস ছত্তিশগড় এবং মধ্যপ্রদেশে ভালো ফল করতে চলেছে। তা হলফ করে বলা যায়। রাজস্থান নিয়ে কংগ্রেস কিছুটা চিন্তায় রয়েছে অন্যদিকে তেলেঙ্গানায় কেসিআরের অবস্থান বেশ মজবুত।সেক্ষেত্রে পাঁচ রাজ্যের মধ্যে এমনও হতে পারে বিজেপিকে একটি রাজ্য নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হতে পারে। তাই সাধু সাবধান! ২০২৪-এর ভোটের আগে তাই শেষ চমক হতে পারে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.