কংগ্রেস-সিপিএমের জোট অশুভ : মুখ্যমন্ত্রী।

 কংগ্রেস-সিপিএমের জোট অশুভ : মুখ্যমন্ত্রী।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- ধনপুর ও বক্সনগর দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই নির্বাচনি সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বললেন, বিজেপির ধর্ম হচ্ছে মানবতার ধর্ম, মানুষের দুঃখ দুর্দশায় তাদের পাশে থাকতে চায় বিজেপি। কে কোন জাতি বা ধর্মের লোক এ নিয়ে ভাবে না বিজেপি। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটা আওয়াজ তুলে দিতে চেয়েছিল বিরোধী দলগুলি যে, ক্ষমতায় এসে পড়েছে। কিন্তু মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ফলে বিজেপি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। এই উপনির্বাচনের প্রচারে যেখানেই যাচ্ছি প্রচারে ভালে সাড়া পাচ্ছি। মানুষ বলেছে অতীতে যে ভুল করেছে সেই ভুল আর করবে না। পূর্বতন সরকারের কল্যাণে কোনও কাজ করত না। সমস্যা সৃষ্টি করাই ছিল তাদের কাজ। কেবলমাত্র মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করত। কিন্তু বিজেপি সরকার সবাইকে চলতে চাই। এর ফলেই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়তে পারব। এই সরকার মানুষের কল্যাণে নানাবিধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যেখানে সামাজিক ভাতা ছিল মাত্র সাতশ টাকা, সেই ভাতা আজ দুই হাজার টাকা করা হয়েছে। আরও ত্রিশ হাজার মানুষকে এই সামাজিক ভাতার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এবারের বাজেট অধিবেশনে বিরোধীদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বাজেট পেশের সময় বিরোধীরা বাধা দেবার চেষ্টা করে। পবিত্র বিধানসভায় টেবিলের মধ্যে উঠে নাচতে শুরু করলেন। যেন রক শো, বিধানসভায় যাবে, মানুষের জন্য কথা বলবে। কিন্তু বিরোধীরা কী করছে সেই প্রশ্ন ছুড়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস ও সিপিএম আঁতাত করেছে। কিন্তু সিপিএমের ভূমিকা কী? তা রাজ্যের মানুষ ১৯৭৮ সাল থেকেই দেখে এসেছে। যারা প্রতিনিয়ত খুন সন্ত্রাস করে ত্রিপুরায় এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, যাদের নিপীড়নের শিকার হয়েছিল কংগ্রেস কর্মীরা, তাদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে।কংগ্রেস ও সিপিএমের আঁতাতকে তিনি অশুভ আঁতাত বলে আখ্যা দেন। বর্তমানে বিজেপি দলের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। সেজন্য দীর্ঘদিনের কংগ্রেসের সাথী প্রাক্তন মন্ত্রী বিল্লাল মিঞা ও সিপিএম দলের প্রাক্তন মন্ত্রীর ভাই বিজেপি দলে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি দল মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে। আগের সরকারের মতো সমস্যা সৃষ্টি করে না। দীর্ঘ সময়কাল সাতাশ হাজার রিয়াং শরণার্থী ত্রিপুরায় ছিল। সেই সমস্যার সমাধানে কোনও চেষ্টা করেননি। বিজেপি সরকার সেই সমস্যার সমাধান করেছে। রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের বারো দফায় কুড়ি শতাংশ ডিএ দিয়েছে। পূর্বতন সরকারের আমলে কর্মচারীদের মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো, চাঁদা সংস্কৃতির জন্য কর্মচারীরা কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। আজ সেই চাঁদা সংস্কৃতি দূর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের যেসমস্ত ছেলে মেয়েরা খেলাধুলায় পারদর্শী অথচ অর্থের অভাবে অন্যত্র প্রশিক্ষণের জন্য যেতে পারে না তাদের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। নবম দশম শ্রেণীর ছাত্রীদের জন্য বাইসাইকেল দিচ্ছে। এখন থেকে একাদশ দ্বাদশের মেধাবীদের স্কুটি দেবারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তপশিলি জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন স্কিম গ্রহণ করে নানাভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। যারা সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কিংবা রাজ্যস্তরে টিপিএস, টিসিএস পরীক্ষা দিতে চায় তদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। মানুষের সমস্যা নিয়ে এই সরকার কাজ করে। বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব হবে না। সেই জন্যই এই প্রকল্প। বাইশ হাজার যুবককে প্রশিক্ষণ দেবার জন্য পঞ্চাশ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী স্যাটেলাইট টাউনশিপ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে রাজধানী আগরতলার বাইরে ধর্মনগর ও উদয়পুরে এই টাউনশিপ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নগর উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন নগর এলাকার জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মাধ্যমিক পাস ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ প্রকল্প চালু করেছে। প্রতি বছর একশ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এই বৃত্তি দেওয়া হবে। পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের নির্বাচন করা, এরজন্য তিন কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ধনপুরের কাঠালিয়াতে ও বক্সনগর টাউন হল প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে এই দুই কেন্দ্রের প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, মন্ত্রী সুধাংশু দাস ও রতনলাল নাথ, প্রার্থী বিন্দু দেবনাথ প্রমুখ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.