অদ্য প্রত্যুষে দেশের রাজধানীর বুকে যে ভোটগ্রহণ হবে, দিল্লী বিধানসভায় ইতিপূর্বে তেমন ইঙ্গিতবাহী, রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরির প্রশ্নে এমন গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আগে হয়নি। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রত্যাবর্তন নাকি পরিবর্তন? ছাব্বিশ বছর পর ফের দিল্লী বিধানসভায় গেরুয়া পতাকা উড়বে, নাকি প্রধানমন্ত্রীর গদিতে হ্যাটটি্রকধারী নরেন্দ্র মোদি দিল্লীতে পরাজয়ের হ্যাটটি্রক করবেন? মোদি ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক ২০১৫ এবং ২০২০ সালের দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পর্যুদন্তু করেই জনতার সুনামি সমর্থন নিযে় দু’বার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন কেজরিওয়াল। অনেকে মনে করেন কেজরিওয়াল বিজেপির ট্রোজান হর্স (গ্রিক পুরাণে বর্ণিত ট্রয়ের যুদ্ধে গ্রিক সৈন্যদের ব্যবহৃত কাঠের তৈরি ফাঁপা দৈত্যাকার ঘোড়া, যেটির পেটের ভিতরে বসে গ্রিক সৈন্যরা ছন্নবেশে ট্রয় শহরে প্রবেশ করে যুদ্ধ জয় করেছিল)। শুধু আপ সুপ্রিমো একা নন, তৃণমূল সুপ্রিমো সম্পর্কেও অনেকে এ ধরনের অভিমত পোষণ করেন যে, এরা নাকি ছদ্মবেশে বিরোধী শিবিরের ঐক্য ভাঙিয়ে, কংগ্রেসকে দুর্বল করে বকলমে বিজেপির সুবিধা করে দেন। তবে বিজেপির সঙে্গ মতাদর্শগত নৈকট্যের প্রশ্নে তৃণমূল নেত্রী একেবারেই নন, বরং কেজরিওয়াল অনেক এগিয়ে। বিজেপির মতো কেজরিওয়ালও রামরাজ্যের কথা বলেন। ফারাক বলতে ‘জয় শ্রীরাম’ না বলে কেজরি বলেন ‘জয় হনুমান’কেজরিওয়ালও ভোটের আগে ‘সনাতন সেবা সমিতি’ খুলে ফেলেছেন। হিন্দু ধর্মগুরুদের সামনে রেখে ভোটের প্রচার করছেন। হিন্দু পুরোহিত ও শিখ গ্রন্থিদের জন্য মাসিক অনুদানের কথা বলছেন। দিল্লীজুডে় বিজেপি রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিযে় ধুয়ো তুললেও আপ সরকার তা নিযে় পাল্টা প্রশ্ন তোলেনি। উলে্ট তীর্থযাত্রা ঘোজনা থেকে রামায়ণের সুন্দর কাণ্ডের পাঠ আযে়াজন করে প্রচার সমাপ্ত করেছে। নির্বাচনি ইস্তেহারে বিজেপি এবং আপ দু’জনই পাল্লা দিযে় খয়রাতির ঘোড়া ছুটিযে়ছে। তুলনায় কংগ্রেস অনেকটাই নিষ্প্রভ। প্রচারের শেষ লগে্নও কংগ্রেস ছিল স্লোগানহীন, দৃশ্যত দিশাহারা। তবু এমনটা হতেই পারে যে, সংখ্যালঘু (১২.৬৮ শতাংশ মুসলিম) এবং দলিত (প্রায় ১৭ শতাংশ) ভোট আপ ও কংগ্রেসে বিভক্ত হযে় তার সুফল ঘরে তুলল বিজেপি। দিল্লীতে ৬৭ শতাংশের বেশি বাডি়তে মধ্যবিত্তের বাস। এই ভোটারদের একটা বড় অংশ কেন্দ্রীয় বাজেটে কর ছাড়ের ধুন্ধুমার ঘোষণায় বিজেপির দিকে ঝুঁকবে সেটাই স্বাভাবিক। আন্না হাজারের দুর্নীতি-বিরোধী অহিংস আন্দোলনের গর্ভ থেকেই জন্মলাভ করেছিল নিজেদের স্বতন্ত্র ঘরানার স্টার্টআপ রাজনৈতিক দল বলে দাবি করা আম আদমি পার্টি। পরবর্তীতে এটা প্রমাণিত যে, আন্নার সেই আন্দোলন নরেন্দ্র মোদির গুজরাট থেকে দিল্লী আগমনের পথ অনেকটাই কুসুমাস্তীর্ণ করে দিযে়ছিল। গরিষ্ঠ জনমনে ধারণা তথা পারসেপশন রোপণ করার কৌশলই রাজনীতির চালিকাশক্তি। কংগ্রেস দুর্নীতিগ্রস্ত এমন একটি ধারণা দেশবাসীর মনের গভীরে রোপণ করে দিযে়ছিলেন আন্নাই। বাকিটা ছিল কেবল চারাগাছে জলসিঞ্চনের খেলা। দক্ষ খেলোয়াড় হিসাবে মোদি সেই কাজটি করেছিলেন এবং করে চলেছেন। দিল্লীর প্রচারেও ঠিক তাই করেছেন। যে সততার নামাবলি জডি়যে় আপ দলটি ভূমিষ্ঠ হযে়ছিল, সেই দল যে ক্ষমতায় বসে ধীরে ধীরে দুর্নীতির পরাকাষ্ঠা হযে় উঠেছে, মদের (আবগারি) দোকান বিলিবন্টনের চোরাপথে অর্জিত বিপুল অর্থে দিল্লীর বাইরে দেশের অন্যান্য রাজ্যে ডঙ্কা বাজিযে় ভোটে লড়াই করছে, জনমনে। তেমন ধারণাটি প্রতিষ্টিত করতে বিজেপি কোনও কসুর বাকি রাখেনি। দু’কামরার ফ্ল্যাট-জীবন থেকে উঠে এসে রাজনীতিতে ভিআইপি সংস্কৃতিকে প্রত্যাখ্যান করার কথা বললেও কেজরিওয়াল দিল্লীতে নিজের সরকারী বাসভবনকে কার্যত প্রাসাদে পরিণত করেছেন এটা ঘটনা। বিজেপি কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের নাম দিযে়ছে ‘শিশ মহল’। ভোটের বাজারে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের অন্দরের একটি ভিডিও প্রকাশ করে বিজেপি দাবি করেছে, এই মহলে ৫ কোটি টাকার পর্দা আর কোটি টাকার রেলিং বসানো হয়েছে! দুর্নীতি ঠেকাতে লোকপালের প্রতিশ্রুতি দিযে় তিনি দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী হলেও, গত দশ বছরে দিল্লীতেই লোকপাল নিয়োগ হয়নি। আজ দিল্লীর এই নির্বাচনে সর্বাপেক্ষা ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’-এ যদি কেউ থাকেন সেটা কেজরিওয়াল। এবার হেরে গেলে আপ দলটাকেই অটুট রাখা তার পক্ষে মুশকিল হযে় যাবে। দিল্লীতে হারলে পরের পর্বে পাঞ্জাবকে সম্ভবত তিনি আর ধরে রাখতে পারবেন না। তার খেলা এবার এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে পাস-নম্বর পেলেই হবে না, ৭০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৪৫-৫০ আসনে তাকে জিততেই হবে। আপ টায় টায় পাস করলে এই দল দিখন্ডিত করে পাল্টা সরকার গড়ার খেলায় বিজেপি মেতে উঠবে সেটিও স্বাভাবিক।
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের লাইনচ্যুত ট্রেন। ছিটকে গেছে তিনটি কামড়া। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার তিতলাগড় স্টেশনের কাছে।…
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথম সংক্রমণের ৫ বছরের রেষ কাটতে না কাটতেই নতুন করে চিনে খোঁজ মিলেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-গত ৫ আগস্ট হাসিনা জামানার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। তবে…
শুক্রবার মরিশাসের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন আসন্ন ন্যাশনাল ডে বা জাতীয় দিবসের উদযাপনে প্রধান অতিথি…
কোনও চাওয়া যখন পথের থেকে বেশি সংখ্যায় পথবন্ধক তৈরি করে, তাকে পরিত্যাগ করাই বিধেয়। কারণ…
অনলাইন প্রতিনিধি:- নারী নির্যাতন কিংবা মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা রাজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি…