কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি!!

 কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইদানীং কালে পত্র পত্রিকা,টিভি রেডিওতে শুধুমাত্র যান। দুর্ঘটনার খবরই বেশি শোনা যাচ্ছে।এতে অনেক মানুষের অকাল জীবন ঝরে যাচ্ছে। অনেক মানুষ পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে গোটা জীবনের জন্য,আবার যান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।যান দুর্ঘটনার বলি হচ্ছে বেশিরভাগই টিনএজার। কিশোর থেকে যুবক-যুবতী। আবার এদের মধ্যে বেশিরভাগ বাইক অর্থাৎ দুচাকার আরোহী।একটা সময় বাইসাইকেলই ছিল সাধারণ মানুষের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম।যুগ পাল্টিয়েছে।এখন বাই সাইকেলের স্থান নিয়েছে স্কুটি,বাইক এখন তো ১৫/১৬ বছর হলেই মা বাবারা বাচ্চাদের বাইক স্কুটি কিনে দিচ্ছেন আবদার বলে কথা। ফলে এই বাইক স্কুটিই জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।যান দুর্ঘটনার অন্যতম কারণগুলির হলো হচ্ছে বেপরোয়া গতি,হেলমেট না পরা বা পরলেও এর স্ট্রিপ সঠিকভাবে না বাঁধা, ওভারটেক করা, আইন না মানা ইত্যাদি রাজধানী সহ রাজ্যের সর্বত্র ইদানীং যতগুলি যান দুর্ঘটনা ঘটছে এদের মধ্যে বেশির ভাগই হচ্ছে যুবক,কিশোর।রাজ্যে এখন রাস্তাঘাট আগের তুলনায় ভাল। তবে রাস্তা হয়তো তেমন প্রশস্ত হয়নি কিংবা রাস্তার পরিমাণ সংখ্যায় হয়তো তেমন বাড়েনি। কিন্তু সেই তুলনায় যানবাহন বেড়েছে কয়েক গুণ।ছোট এই রাজ্যে যানবাহনের সংখ্যা প্রতি পাঁচজনে একটি।ভাবা যায়!
কোন না কোন বাড়িতে ২ চাকার বাইক স্কুটি হলেও আছে।একটু সম্ভ্রান্ত হল বাইক, স্কুটি, চার চাকার গাড়ি তো রয়েছে।ফলে সব চাপ এসে পড়ছে রাস্তার উপর। একদিকে যানজট হচ্ছে, অন্যদিকে বেশি যানবাহন হবার ফলে কেউ আইনকে পরোয়া করছে না। দ্রুত গতিতে ছুটছে যান।রাস্তা ভাল হওয়া এক্ষেত্রে অভিশাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।রাজ্যের মানুষের একটা বিরাট অংশের মধ্যে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অসচেতনতা রয়েছে। আবার ঘুরিয়ে বললে বলা যায় আইন না মানার একটা প্রবণতা রয়েছে একাংশের মধ্যে।উল্টো দিকে আইন প্রণয়নকারী অর্থাৎ পুলিশ প্রশাসনও সেভাবে আইনের প্রয়োগ করছে না।মানুষকে সচেতন করছে না।সব মিলিয়ে যান দুর্ঘটনা তার মতো করে হচ্ছে।পুলিশ প্রশাসন তার মতো করে চলছে সবই নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা।ফলে বিষয়টি গা সওয়া ভাব হয়ে গেছে যেন।যান দুর্ঘটনা এত মাত্রায় ঘটলেও পুলিশ প্রশাসন এক্ষেত্রে অনেকটা উদাসীন ভূমিকা পালন করছে।রাজ্য পুলিশের যে ট্রাফিক শাখা তা অত্যন্ত দুর্বল।দুর্বল পরিকাঠামো,লোকবলহীন হয়ে চলছে ট্রাফিক পুলিশ।ফলে এনফোর্সমেন্টের বিষয়টি একেবারেই প্রায় উহ্য থাকছে। রাজধানীতে এখন পুরোপুরি ট্রাফিক ব্যবস্থা ইলেকট্রনিক সিগন্যাল ব্যবস্থার উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।ট্রাফিক পুলিশ ব্যস্ত থাকছে শুধু ভিভিআইপিদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে।স্বভাবতই বাইক আরোহী থেকে অন্যান্য দ্বিচক্রযান, ত্রিচক্রযান,চার চাকার ছোট বড় গাড়ি, বড় বড় বাস ট্রাক কেউ কাউকে তোয়াক্কা করছে না।যে যার মতো করে চলাফেরা করছে। যে যেখানে পারছে দাঁড়াচ্ছে।যাত্রী নামছে।উঠছে এ চিত্র পাড়ায় পাড়ায়।মোড়ে মোড়ে স্ট্যান্ড গজিয়ে যাচ্ছে।একেবারে যেন চূড়ান্ত আইনশৃঙ্খলাহীনতা চলছে।
রাজধানীর যদি এই চেহারা তাহলে মফস্সল এবং মফস্সল শহরগুলির চেহারা তো আরও বিবর্ণ।দেখার কেউ নেই,অথচ সব জায়গাতেই গাড়ি ঘোড়া বেড়েছে রাস্তা বাড়ুক আর না বাড়ুক।ফলে যান দুর্ঘটনা পিছু ছাড়ছে না।
জানা যায়,রবিবার সন্ধের পর গোটা রাজ্যে ২ ঘন্টার জন্য পথে নেমেছিল পুলিশ!একেবার শীর্ষ স্তরের পুলিশ আধিকারিক থেকে থানাস্তরের আধিকারিক রাস্তায় নেমে শুধু বাইক আরোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান করে।উদ্দেশ্য মহৎ হতে হবে।শুধু ফাইন আদায় যদি মুখ্য উদ্দেশ্য হয় তাহলে যান দুর্ঘটনা কোনদিন শেষ হবে না। দুটোই করতে হবে পুলিশকে। নরম হয়ে মানুষকে সচেতনতার উপর জোর দিতে হবে।অন্যদিকে গরম হয়ে আইন প্রয়োগ করতে হবে কঠোরভাবে।শুধু ঠান্ডা ঘরে বসে থাকলে হবে না পুলিশ কর্তাদের। ঠান্ডাঘর থেকে রাস্তায় নামতে হবে। আইন প্রয়োগ করতে হবে। কঠোর অবস্থান নিতে হবে পুলিশকে। চালকের হেলমেট ১০০% নিশ্চিত করতে হবে।পেছনের সিটে বসা ব্যক্তির হেলমেট পরা ১০০% সুনিশ্চিত করতে হবে।ট্রাফিক আইন যাতে মানুষ মেনে চলে,এর জন্য সচেতন করতে হবে।পুলিশী মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে পুলিশকে একেবারে ছাড় দিতে হবে।কাজ করতে দিতে হবে।ট্রাফিক পুলিশের ইউনিটকে শক্তিশালী করতে হবে। এক কথায় যান অর্থাৎ দ্বিচক্র, ত্রিচক্র,চার চাকার ছোট বড়, বাস, সব যানকেই একটা শৃঙ্খলের মধ্যে আনতে হবে।এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন মনে করে পুলিশকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই যদি কিছু হয়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.