অঘটনটা প্রথম নজরে এসেছিল আলিপুর এগ্রি – হটিকালচার সোসাইটির কর্মীদের । প্রায় আশি ফুট উচ্চতার ‘ এলিফ্যান্ট ফুট ট্রি ’ – তে ফল ধরা বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে । আটতলা বাড়ির সমান উঁচু ওই গাছের পরাগ সংযোগে বড় ভূমিকা নেয় বিশেষ এক ধরনের মৌমাছি । গাছে ফল না ধরার কারণ খুঁজতে গিয়ে সোসাইটির বোটানিস্টরা দেখেছিলেন , হর্টিকালচারের বাগানে ওই ধরনের মৌমাছির আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । মুখ্য পরাগ সংযোগকারী পতঙ্গটির অনুপস্থিতিতেই ফল ধরছে না কলকাতার বিরল এই গাছ।হিমালয়ের জঙ্গল থেকে প্রতিবছর নিয়মিত যারা দক্ষিণবঙ্গ পর্যন্ত উড়ে আসত , তারা হঠাৎ আসা বন্ধ করল কেন?মৌমাছির অনুপস্থিতি কি ভয়াবহ দুর্যোগের ইঙ্গিত বহন করছে ? সমস্যা শুধু হিমালয় থেকে দক্ষিণবঙ্গে সীমিত পরিসরে আবদ্ধ নেই ।
সারা পৃথিবীতেই গত কয়েক বছর মৌমাছির সংখ্যা চোখে পড়ার মতো গতিতে কমতে শুরু করেছে বলে বিপদ সক্ষেত দিচ্ছেন পতঙ্গবিদরা ।পরিসংখ্যান বলছে , ভারতে গত ১২ বছর মৌমাছির সংখ্যা কমেছে ৪০ শতাংশ । ফলন বাড়াতে চাষের জমিতে ঢালাও রাসায়নিক সারের প্রয়োগ ফসলে যথেচ্ছ রাসায়নিক স্প্রে এবং শহরাঞ্চলে অতি দ্রুত প্রাকৃতিক পরিবেশের অবক্ষয় এবং নগরায়নের দৌলতেই এমন হচ্ছে বলে মনে করছেন পতঙ্গবিদরা । কীটনাশকের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মৌমাছি । পরাগ সংযোগে সহযোগিতাকারী এই জরুরি পতঙ্গটির বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে । নতুন এ তথ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে । এ গবেষণাপত্রটি ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ জার্নাল ‘ প্রসিডিংস অব দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি’তে প্রকাশিত হয়েছে । গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা লিখেছেন অতিমাত্রায় , নিউনিকোটিনয়েড কীটনাশকের ব্যবহার পতঙ্গদের মধ্যে মহামারী রূপে বন্ধ্যাত্ব ছড়িয়ে দিতে পারে । ডেকে আনতে পারে পতঙ্গ সমাজের বিলুপ্তি । ‘ ব্রিটিশ গবেষকদের পরীক্ষায় , মৌমাছিদের দু’টি দলে ভাগ করে নেন । একদলকে এমন পরাগ রেণু খেতে দেওয়া হয় , যার প্রতিটিতে দু’টি করে নিউনিকোটিনয়েড অণু রয়েছে । অন্য দল মৌমাছিকে স্বাভাবিক পরাগ রেণু খেতে দেওয়া হয়— যাতে কীটনাশক নেই । এভাবে ৩৮ দিন পার হলে বিজ্ঞানীরা পুরুষ মৌমাছির শুক্রাণু সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন । দেখা যায় , কীটনাশকযুক্ত পরাগ গ্রহণকারী মৌমাছিদের মধ্যে প্রজননে সক্ষম জীবিত শুক্রাণুর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে । তারা আর জীবৎকালে কোনও নারী মৌমাছির গর্ভসঞ্চার করতে পারে না। মৌমাছির বংশ ধ্বংস হওয়ার মতো রহস্যজনক কারণে ইউরোপ,উওর আমেরিকা এবং আরও অনেক অঞ্চলে মৌমাছি হ্রাস পাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।তাছারা বিলুপ্তির জন্য পরজীবী কীট,ভাইরাস, ছত্রাক ,কীটনাশককে দায়ী করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের গবেষণার প্রাপ্ত কীটনাশকের প্রভাবে বন্ধ্যাত্ব ঘটার তথ্যটি মৌমাছির বিলুপ্তির ক্ষেত্রে নূতন একটি কারণ যোগ করল। মৌমাছিকেই গবেষণার মুখ্য বিষয় করে এ দেশে কাজ করার মতো যে কয়টা কেন্দ্র রয়েছে , তার মধ্যে অন্যতম কলকাতার সেন্টার ফর অ্যাগ্রোইকোলজি অ্যান্ড পলিনেশন স্টাডিজ । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলজি বিভাগের আওতায় থাকা এই কেন্দ্রের অন্যতম প্রধান গবেষক এবংকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলজির অধ্যাপক পার্থিব বসু বলেছেন , ‘ বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন একবার মন্তব্য করেছিলেন , মৌমাছি অবলুপ্ত হলে তার চার বছরের মধ্যে মানুষ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে । গত কয়েক বছরের পরিস্থিতি বলছে আমরা যেন সেই দিকেই এগোচ্ছি । ‘ পার্থিব বসু আরও বলেছেন , ‘ আমরা দেখছি দ্রুত নগরায়নের ফলে যে ভাবে গাছ নষ্ট হচ্ছে তাতে মৌমাছিদের স্বাভাবিক বাসস্থান নষ্ট হচ্ছে । ‘ পতঙ্গবিদরা জানাচ্ছেন , পৃথিবীতে পরাগ সংযোগের ৭৩ শতাংশই ঘটায় মৌমাছিরা । এদের সংখ্যা কমে যাওয়ার অর্থ ফসল উৎপাদন ভয়াবহ ভাবে ব্যাহত হওয়া । সামনের কয়েক বছরের মধ্যেই এর ফল ভুগতে হবে সবাইকে , অন্তত এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা ।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…