কমিউনিস্টদের ঘরে যুবদের শ্রীকোনও স্থান নেই: বিপ্লব।।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-চুলে পাক
ধরার আগ পর্যন্ত কোনও মূল্যই থাকে না কমিউনিস্টদের ঘরে।জাতীয় যুব দিবসের এক অনুষ্ঠান থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব রবিবার বোঝাতে চাইলেন, কোনও উপদাধিকারী কিংবা বিধায়ক পদে সামান্য টিকিট পেতে গেলেও কমিউনিস্টদের চুলে পাক ধরাতে হয়। মিনিট খানেকের ব্যবধানে তার বক্তৃতায় তুলে ধরলেন যে কীভাবে চুলে পাক না ধরলেও ভারতীয় জনতা পার্টিতে মুখ্যমন্ত্রীর মতো পদে আসীন হওয়া যায়। তার উদাহরণ, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, গোয়ার মতো রাজ্যগুলি। বললেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব।
আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের এক নং হল ঘরে এ দিন ছিলো – ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা আয়োজিত ‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক রাজ্যভিত্তিক এক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বললেন, যুবরা শুধু উৎসাহ আর অনুপ্রেরণা চায়। যেখানেই আশা এবং ভরসা পাবে সেখানেই এগিয়ে আসবে যুবসমাজ। বামেদের সাথে তুলনা টেনে তিনি বলেন, কমিউনিস্টরা শুধু যুবদের ব্যবহার করে। এটা ইতিহাস ঘাটলেই বোঝা যায়। আর বিজেপির ঘরে পঞ্চাশের কোঠা পেরোনোর আগেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়া যায়। পঁচিশ-ছাব্বিশ হলেই বিধায়ক হওয়া যাচ্ছে। আর পঁয়ত্রিশ হলে তো মন্ত্রীই হওয়া যায়। মন্ত্রী সুধাংশু দাসের উদাহরণ টেনে উপস্থিত যুব সমাজের কাছে এ দিন আরও একবার যুব সমাজকে উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত করেন তিনি। উদাহরণ দিলেন প্রদেশ যুব মোর্চা সভাপতির প্রসঙ্গ টেনেও।
তিনি বলেন, যুবদের মধ্যে আশা- আকাঙক্ষা এবং উর্জা এই তিন যখন জুড়ে যাবে তখন অনায়াসেই আপনার
সাথে জুড়ে যাবে যুবসমাজ। যুবদের স্বপ্ন শাকার করতে যারা উৎসাহ প্রদান করতে পারবে, তারাই ভালো নেতা হতে পারবে বলেও এ দিন মনে করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন, কমিউনিস্টদের কাছে যুবদের কোনও স্থান নেই। এটা বোঝাতে হবে যুবসমাজকে। প্রসঙ্গক্রমে যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি নিজের উদাহরণ টানতেও পিছুপা হলেন না এ দিন। বলেন, ২০১৮ সালে তিনি যখন নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেন তখন তিনি দেখতে পান তার যারা প্রতিপক্ষ ছিলেন তারা সবাই সত্তরোর্ধ্ব। মানিক সরকার, জিতেন্দ্র চৌধুরী, বাদল চৌধরী ছাড়াও প্রয়াত দাসদের উদাহরণ দিলেন তিনি। বললেন, আদৌ কী তারা পারবে যুব সমাজের সাথে এগিয়ে আসতে?
তার কথায়, বিগত দিনে রাজ্য থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করতে বিরোধীদের যে যোগ্যতা দরকার ছিলো তা ছিলো না কংগ্রেসের কাছে। যে কারণে দীঘ পঁয়ত্রিশ বছর শাসন করে গিয়েছেন তারা। তার আফশোস, সে সময় যদি ভারতীয় জনতা পার্টি এ রাজ্যে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তো তবে আর ক্ষমতায় টিকে থাকা হতো না তাদের। তিনি বলেন, এই ভূমি মা ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের। এই ভূমি মহারাজা বীর বিক্রমের। আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার ছিলেন তিনি। স্বামী রিবেকানন্দের মতোই একেবারে অল্প বয়সে রাজ্যকে উন্নত শিখরে পৌঁছে দিয়ে যান তিনি। যেমন করে গোটা বিশ্বের কাছে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ, ঠিক সেভাবেই এ রাজ্যে একটি বিমানবন্দর, একাধিক স্কুল কলেজ নির্মাণ করে নজির রেখে যান মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুর। তিনি বুঝিয়ে দেন যে যুবদের মধ্যেই উর্জা বেশি থাকে।
অনুষ্ঠানে এ দিন বক্তব্য রাখেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে প্রদেশ যুব মোর্চার সভাপতি সুশান্ত দেবও। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি বলেন, দীর্ঘদিন ইতিহাসকে বিকৃত করে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, শৈশবকালে আমরা যখন পড়াশোনা করি তখন শুধুমাত্র সোসিয়ালিজম আর ক্যাপিটালিজম-এর কথাই বলা হতো। আর এখন প্রধানমন্ত্রী মোদির জমানায় জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে এসেছে যুবসমাজ। রাজ্যেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটি প্রতিফলিত হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতিগুলিও এখন যুবরা চালাচ্ছে। সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও এখন পরিবর্তন আনা হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব পঁয়তাল্লিশ বছরের সীমারেখার বিষয়টিও তুলে আনলেন। তিনি বলেন, আগামী দিনেও যুবদেরকে কীভাবে অনুপ্রাণিত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। অনুষ্ঠানে প্রদেশ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিপিন দেববর্মা, জিমনাস্ট দীপা কর্মকারও উপস্থিত ছিলেন।
রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও এ দিন নানা অনুষ্ঠানে পালিত হয় জাতীয় যুব দিবস। বিভিন্ন মণ্ডল, সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস কিংবা বিভিন্ন রামকৃষ্ণ আশ্রমগুলিতেও পালন করা হয় দিনটি। প্রদেশ কংগ্রেস ভবনেও যুব দিবস পালন করা হয়। এছাড়াও রাণীরবাজারস্থিত রামকৃষ্ণ সারদাশ্রমে নানা কর্মসূচিতে পালন করা হয় স্বামী বিবেকানন্দের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী। কল্যাণপুরে ব্লক যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তার এই জন্মদিন পালনের অঙ্গ হিসাবে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পানিসাগরের তথ্য ও সংস্কৃতির দপ্তর, শিক্ষা দপ্তর এবং পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের যৌথ উদ্যোগে এদিন সকালে পানিসাগর টাউন হলে পালন করা হয় দিনটি। বিধায়ক বিনয়ভূষণ দাস এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

Dainik Digital

Recent Posts

সবজি খেতে পোকার আক্রমণ বাজারে মূল্য হ্রাস, উদ্বেগ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বিভিন্নঅঞ্চলে সবজি চাষিদের ফসলে নানা ধরনের পোকার আক্রমণ হচ্ছে। বামুটিয়া কৃষি মহকুমাধীন এলাকার…

3 hours ago

চন্দন সেনগুপ্ত স্মৃতি জাতীয় নাট্যোৎসব শুরু হচ্ছে ১৫ থেকে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-নাট্যভূমির উদ্যোগে নাট্যপ্রেমীদের আকাঙিক্ষত চন্দন সেনগুপ্ত স্মৃতি জাতীয় নাট্য উৎসব আগামী ১৫ জানুয়ারী…

3 hours ago

মিডিয়ার স্বাধীনতা।।

গত বছরের মে মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলে গৃহীত হয় গত বছরের মে মাসে ইউরোপীয় ই…

4 hours ago

ভাঙনের পথে।।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে আরও সংখ্যা বাড়িয়ে,তিনশোর বেশি আসন নিয়ে বিজেপির ক্ষমতায় ফেরার পরে অনেক রাজনৈতিক…

1 day ago

জিবি, আইজিএমে ওষুধ সঙ্কটে রোগীরা চরম বিপাকে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যসরকার হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনায় রোগীর দুর্ভোগ কমাতে সচেষ্ট হয়েছে…

1 day ago

সিপিএমকে তুলোধোনো করে বিপ্লব মানিক সরকারও কমিউনিস্ট নন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এই রাজ্যে যে কৃষ্টি সংস্কৃতি ঐতিহ্য ছিল, তা দীর্ঘ কমিউনিস্ট শাসনকালে হারিয়ে গিয়েছিল।…

1 day ago