কম ভাড়ার বিমান উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যে চালু, বঞ্চিত ত্রিপুরা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-বিমান পরিষেরার দিকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের মধ্যে একমাত্র বঞ্চিত ত্রিপুরা রাজ্য। শুধু বঞ্চিতই নয়,চরমভাবেই বঞ্চিত।বিমান পরিষেবায় যে ত্রিপুরা বঞ্চিত তা কেন্দ্রীয় সরকারেরও অজানা নয়, কেন্দ্রীয় সরকারও বিমান পরিষেবায় ত্রিপুরার বঞ্চনা ও অবহেলার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অবগত আছে বলে বিমানবন্দর ও বিমান সংস্থার দাবি।তা না হলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান সংস্থা অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান অত্যন্ত কম ভাড়ায় ত্রিপুরা বাদে উত্তর পূর্বাঞ্চলের অপর ছয় রাজ্যেই কীভাবে চালু রয়েছে তা নিয়ে রাজ্যবাসী সহ বিভিন্ন মহলেই প্রশ্ন উঠেছে।গত বেশ ক’বছর ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান সংস্থা অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান আসাম,অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও মেঘালয়- উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই ছয় রাজ্যে কম ভাড়ায় বিমান পরিষেবা দিচ্ছে।উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই ছয় রাজ্যের মধ্যে অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান যোগাযোগ থাকায় সেই সব রাজ্যগুলির মানুষ বিমান পরিষেবার ভালো সুবিধা পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নিজস্ব বিমান আগে এয়ার ইন্ডিয়া ছিল।কিন্তু গত দু’বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার বেসরকারী টাটা সংস্থার কাছে অনেক আপত্তি সত্ত্বেও এয়ার ইন্ডিয়াকে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়াকে বিক্রি করে দেওয়ার পরও কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান রয়েছে। আগে এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী হিসেবে অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান চালু ছিল। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়াকে বিক্রি করে দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকারের মালিকানাধীন প্রধান ওএকমাত্র বিমান সংস্থা হলো অ্যালাইন্স এয়ার। অ্যালাইন্স এয়ারের হাতে এয়ারক্রাফট তথা বিমান রয়েছে সর্বমোট ২১টি। বিমানগুলির মধ্যে ৪৮ আসনের এটিআর যেমন আছে তেমনি ৭২ আসনের এটিআরও রয়েছে। অ্যালাইন্স এয়ারের ১৯ আসনের ডোনিয়ার বিমানও আছে।২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার দেশের সব জায়গায় বিশেষ করে যোগাযোগের দিকে পিছিয়েপড়া রাজ্যগুলির যোগাযোগে উন্নতির জন্য ‘উড়ান প্রকল্প’ চালু করার ঘোষণা দেয়।সেই ঘোষণায় বলা হয়েছিল রিজিওন্যাল কানেকটিভিটিতে উড়ান প্রকল্পে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।উড়ান প্রকল্পের মাধ্যমে যে সব বিমান পরিষেবা দেবে সেই সব বিমানকে পরিষেবা চালু রাখার জন্য ভর্তুকি দেওয়া হবে।তাই উড়ান প্রকল্পের বিমানে যাত্রী ভাড়াও অনেক কম থাকবে।২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের উড়ান প্রকল্প চালুর পর কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান সংস্থা অ্যালাইন্স এয়ার বিস্ময়করভাবে ত্রিপুরাকে একমাত্র বঞ্চিত রেখে উত্তর পূর্বাঞ্চলের আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও মেঘালয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিমান পরিষেবা চালু করে। সেই সব রাজ্যগুলির রাজধানীর বিমানবন্দরগুলির আইজল-গুয়াহাটি, গুয়াহাটি-পাসিঘাট (অরুণাচল প্রদেশ) সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ‘রাজধানী সহ (ত্রিপুরা বাদে) আরও সব বিমানবন্দরের সঙ্গে অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা চালু রয়েছে। গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় সহ আসামের পাঁচটি বিমানবন্দরেই অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান চালু রয়েছে। অরুণাচল প্রদেশের তিনটি বিমানবন্দরে অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান চালু রয়েছে। অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান ভাড়াও খুব কম নেওয়া হচ্ছে। এখানে শুধুমাত্র কয়েকটি কম ভাড়ার রুট উল্লেখ করা হয়েছে। গুয়াহাটি থেকে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে যে বিমানটি শিলং রওয়ানা হয় সেই বিমানের যাত্রী পিছু ভাড়া মাত্র ৭০০ টাকা নেওয়া হয়। ডিমাপুর থেকে শিলংয়ের যে বিমানটি বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে রওয়া দেয় সেই বিমানে যাত্রী পিছু ভাড়া নেওয়া হয় মাত্র ৫০০ টাকা। আইজল- ইম্মলের ভাড়া ৭০০ টাকা, তেজপুর-লখিমপুর ভাড়া ৩০০ টাকা, তেজপুর- ডিব্ৰুগড় ভাড়া ৫৫৪ টাকা। সব সেক্টরেই অ্যালাইন্স এয়ারের ভাড়া খুব কম নেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠেছে কেন ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরের সঙ্গে অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা চালু করা হয়নি? অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা আগরতলায় চালু হলে কলকাতায় যাওয়া আসার ভাড়া পড়ত খুব কম। এই সুবিধা থেকে কেন ত্রিপুরাবাসী বঞ্চিত এই প্রশ্ন ত্রিপুরাবাসীর।কেন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত কম ভাড়ার উড়ান প্রকল্পের বিমান আগরতলায় নেই -প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।ত্রিপুরা সরকার কেন অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা আগরতলা সেক্টরে চালু করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলেও। অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা চালু হলে আগরতলা-কলকাতা রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে ইন্ডিগো ও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে ভাড়া আকাশছোঁয়া নেওয়ার সাহস দেখাতো না বলেই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।রাজ্যবাসী তাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেন। রাজ্য সরকারকে উড়ান প্রকল্পের অ্যালাইন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নিতেই
হবে।