করোনায় ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে ফুসফুস, প্রায় ১০ শতাংশ তরুণের মৃত্যু এক বছরের মধ্যে।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অল্পবয়সিদের মধ্যে আচমকাই যেন মৃত্যুর হার বেড়ে গিয়েছে। বিশেষত, ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া এবং তার জেরে মৃত্যুর ঘটনাও আকছার ঘটছে। তাহলে কি কোভিডই এর জন্য দায়ী? চলতি বছরের মে মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর জানিয়েছিল, বিষয়টি নিয়ে তারা খুঁটিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার আগেই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণের কথা জানাল আইসিএমআর। কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থাটির দাবি, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল, সঙ্কটজনক হয়ে পড়েও যারা আখেরে করোনা জয় করেছিলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক বছরের মধ্যে তাদের প্রায় দশ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে আবার সিংহভাগই মহিলা বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। যদিও এ ক্ষেত্রে ষাটোর্ধ্ব নয়, তরুণ প্রজন্মের সংখ্যাই বেশি বলে দাবি আইসিএমআরের।
এদের অনেকেরই কো-মবিডিটি ছিল বলেও দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটির। তবে সংক্রামিত হওয়ার আগে যারা করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ়ও নিয়েছিলেন, ‘পোস্ট- ডিসচার্জ মর্টালিটি’র প্রেক্ষিতে তারা অন্তত ৬০ শতাংশ বেশি সুরক্ষা পেয়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় গবেষকদের। ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের মধ্যেও একই ট্রেন্ড লক্ষ্য করা গিয়েছে।কীসের ভিত্তিতে এই পর্যবেক্ষণ? রিপোর্ট প্রকাশ করতে গিয়ে আইসিএমআর জানিয়েছে, তাদের অধীন ৩১টি হাসপাতালে সেই সময়ে ভর্তি প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার অত্যন্ত গুরুতর করোনা আক্রান্তের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। যার রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সাল থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ১৭.১ শতাংশের মধ্যে নানাবিধ ‘পোস্ট কোভিড সিমটম্স’ বা করোনা-পরবর্তী সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যার মধ্যে শ্বাসকষ্ট, অকারণে ক্লান্তি, আচমকা ভুলে যাওয়া কিংবা অস্বাভাবিক আচরণের মতো উপসর্গ রয়েছে। আর তারা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক বছরের মধ্যে মারা গিয়েছেন। কো- মবিডিটির পাশাপাশি তাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে রক্তনালির কার্যকারিতা হ্রাস, ফুসফুসের সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত সমস্যাকেই দায়ী করছে আইসিএমআর। তবে তাদের এই সমীক্ষা যে সার্বিক করোনা-রোগীদের উপর নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তারা। গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনা- আক্রান্ত হয়ে যারা সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাদের উপরই সমীক্ষাটি করা হয়েছে। যাদের মৃদু উপসর্গ ছিল, অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত হয়েও যাদের অবস্থা তেমন গুরুতর হয়নি, তাদের এই সমীক্ষা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। বস্তুত, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, অথচ আইসিইউ-তে নয়, তাদের সমীক্ষায় নেওয়া হয়নি। তাই এই সমীক্ষা ঘিরে যাতে অকারণ আতঙ্ক না-ছড়ায় সেই পরামর্শই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যে সব কোভিড আক্রান্তদের লিভার কিংবা কিডনির পুরোনো সমস্যা রয়েছে, তাদের আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা অবশ্যই উচিত বলে দাবি আইসিএমআর-এর।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

ঈদের দিনে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অতর্কিত হামলায় মৃত্যু ৪২ ফিলিস্তিনির!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও থেমে থাকল না গাজার মৃত্যমিছিল। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রের দাবী,…

3 hours ago

কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের নামাজ আদায়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পবিত্র ঈদুল আজহারে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি বন্দিদের জন্য…

3 hours ago

দুবাইয়ের নতুন মহা-প্রকল্প, ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বুর্জ খলিফাকেও!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-দুবাইয়ের আগামী প্রকল্প বুর্জ খলিফার থেকেও "বৃহৎ এবং সুন্দর" হতে পারে—এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন…

3 hours ago

অনূর্ধ্ব ১৪, ১৮ মহিলা ক্রিকেট, বিশালগড় দল গঠনে শীঘ্রই ওপেন ট্রায়াল!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যভিত্তিক অনূর্ধ্ব চৌদ্দ ও অনূর্ধ্ব আঠারো মহিলা ক্রিকেটকে সামনে রেখে বিশালগড় ক্রিকেট…

3 hours ago

কৃষি সংকল্প অভিযানে নয়া জাগরণ,৮ দিনে ১.২০ লক্ষ কৃষকের কাছে পৌঁছেছে কৃষিরথ, প্রশংসিত রাজ্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- টার্গেট ছিলো বারোদিনে সারা রাজ্যে এক লক্ষ বাহাত্তর হাজার কৃষককে এই মেগা…

4 hours ago

পরিবেশ দিবস ও মশকরা!!

গোটা বিশ্বজাড়ের ৫জুন ঘটা করে আর ও একবার আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস উদ্যাপন করা হলো।এদিন আমাদের…

4 hours ago