কর্ণাটকে চাপে বিজেপি
আগামী ১০ মে কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচন। গণনা ১৩ মে।গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের নজর এখন দক্ষিনের এই রাজ্যটিতে।কেননা,২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে আগে ২২৪ আসন বিশিষ্ট কর্ণাটক বিধাণসভা নির্বাচনের ফলাফল শসক বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই চাপ বাড়ছে রাজনৈতিক দলগুলির উপর। তবে খবরে প্রকাশ, এই চাপ বিরোধীদের তুলনায় খানিকটা হলেও বেশি বিজেপির উপর। একদিকে নির্বাচনে টিকিট বন্টন নিয়ে পদ্ম শিবিরে ক্ষোভের বিস্ফোরণ, অন্যদিকে লিঙ্গায়েত ভোট। এই দুই চাপ এখন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে বলে খবরে প্রকাশ।যদিও লিঙ্গায়েত ভোট ভাগাভাগি রুখতে ময়দানে নেমেছেন দলের চাণক্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর নেতৃত্বে গত শুক্রবারই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে কর্ণাটক বিজেপির একঝাক শীর্ষ নেতৃত্ব যোগ দিয়েছিলেন। তালিকায় ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা, কর্ণাটক বিজেপির ইনচার্জ অরুণ সিং, শীর্ষনেতা আন্নামালইস শোভা করন্দলাজে, বিএল সন্তোষ প্রমুখ।লিঙ্গায়েত ভোট ভাগাভাগি রুখতে একটি পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে বলে খবর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সেই পরিকল্পনা যদি সফল না হয় তাহলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। শুধু তাই নয়, কর্ণাটকের সফলতার উপর নির্ভর করবে বিএল সন্তোষের মতো তাত্ত্বিক নেতাদের রাজনৈতিক ভাগ্যও।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বয়সের কারণে এবার কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা জগদীশ শেট্রারকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। টিকিট মেলেনি প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভাদির।টিকিট না পেয়ে ও দুই নেতাই বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে শামিল হয়।কংগ্রেস দল শু তাদের লুফেই নেয়নি, নির্বাচনে তাদের প্রার্থী করেছে হাত শিবির শেট্টার ও সাভাদি দুজনেই লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। আরএটাই ভাবাচ্ছে বিজেপিকে।দাক্ষিণাত্যের রাজনীতিতে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের বড় প্রভাব রয়েছে।সুযোগ হাতছাড়া করেনি কংগ্রেস। লিঙ্গায়েত ভোট নিজেদের দিকে ফেরাতে, বিজেপি লিঙ্গায়েত বিরোধী বলে ইতিমধ্যে প্রচারও শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস।লিঙ্গায়েত ভোটের পাশাপাশি প্রার্থী তালিকা নিয়েও পদ্মশিবিরের অন্দরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুঙ্গে বলে খবর। গতবারের জয়ী বেশ কয়েকজন বিধায়ককে এবার টিকিট দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে দলবদলুদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।এই ক্ষোভ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।এমন কঠিন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির উপরই আস্থা রাখছে দল।পরিস্থিতি অনুধাবন করে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রাক্তন মন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পার সাথে আলোচনাও করেছেন। অতীতেও বহু রাজ্যে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও ‘মোদি ম্যাজিকে’ভর করে বাজিমাত করতে দেখা গেছে বিজেপিকে। কর্ণাটকেও এর রিপ্লের আশায় দলের নেতা- কর্মীরা।ইতিমধ্যে কর্ণাটকে প্রচারে গিয়ে সেই সুর বেঁধে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্যের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী মোদির হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।এর থেকে স্পষ্ট, বৈতরণী পার হতে কর্ণাটকে মোদিকে সামনে রেখেই ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার একটি জনসভায় অমিত শাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘এবার কর্ণাটকের নির্বাচন শুধু বিধায়কদের বেছে নেওয়ার জন্য নয়,এবারের ভোট হলো কর্ণাটকের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়ার। এবারের নির্বাচন হলো কর্ণাটককে উন্নত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার এবং রাজনৈতিক স্থিতবস্থা গড়ে তোলার। ‘শাহি কথাতেই স্পষ্ট, চাপে আছে দল। রক্ষাকর্তা একমাত্র মোদি।