এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

‘তিনকাল’ প্রকাশনার ‘ছোটবোন’ সিরিজের একটি বই । ঝাঁ – চকচকে স্ট্যান্ডার্ড ১০০ জিএসএম কাগজে ছাপা । ডিকলারেশন পেইজ এবং উৎসর্গের নান্দনিক দিক চোখে পড়ার মতো।
গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে ৩২ টি কবিতা । নব্বুইয়ের দশক থেকে লিখছেন কবি প্রবীর চক্রবর্তী । সুপরিচিত মুখ।’ কাছের মানুষ খুঁজতে খুঁজতে ‘ কবির চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ।
মানুষ খুঁজে না পাবার ব্যাকুলতা , মানুষের বহুমুখী চরিত্র , আতঙ্কের দিন ফিরে আসার কষ্ট , মানুষের প্রেমের দৈনতা , মুখ ও মুখোশের দূরত্বের আখ্যান , মানুষের জীবন – সার্কাস , যাপনে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভালবাসার বাস্তবতা কবিকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে অহোনিশি সেই সব হৃদয়তাড়িত কথা কবি বিবৃত করেছেন দক্ষ কারিগরের মতো । তার কাব্যগাথা এবং শিল্পবোধ পাঠককে আনন্দ দেবে।
‘ কি করে যাপন করো মধুমাস ‘ কবিতায় কবির আক্ষেপ— ‘ বলো অসুখী মানুষ / কি করে যাপন করো মধুমাস / এত আবির রঙের কুহক…”
যাপনের ‘ দুঃস্বপ্নঘোর ‘ কবিকে ‘ স্বপ্নঘোর ‘ করে তোলে— ‘ ভালোবাসা মাদারির খেলা ‘ কবিতায় কবি স্বার্থক বোধছবি চিত্রায়ণ করেছেন ‘ … সাপিনীর গর্ত থেকে তার লেজ দেখা যায় / টেনে তুলি , বিষ মাখি সমস্ত শরীরে ….’
কবি তার কাব্যিক কারুকাজে চিত্রায়িত করেন : ভালবাসার দিনগুলি তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে গেলে অদ্ভুত এক অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে , ‘ মানুষ তার কাছের মানুষকে কোন দিনই বুঝতে পারে না বলে / একটা চিরকালীন অসুখের ভেতর কোনমতে বেঁচে থাকে …।’
‘ ছায়াবাজি ‘ কবিতায় নিজের সঙ্গে কবির ছায়াবাজির নিপুণ কাব্যগাথা । কবি বলছেন , ‘ শরীরের কালো কালো অংশ / নড়েচড়ে ছায়াবাজি করছে ।….
কবি তার হৃদয়ে আঁকা ‘ ফুলবউ’কে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন , ‘ ভালোবাসা ফুরিয়ে গেলে কুড়িয়ে পাওয়া যায়না / নীলকন্ঠ পাখি উড়ে হৃদিপদ্ম হতে / তারে তবু খবর দিও আমায় দেখে যেতে।’
কবিতা ‘ বায়স্কোপ ‘ । কবির বোধব্যাঞ্জনায় মন ভারাক্রান্ত হয়-
— ‘ কারা যেন চুপিচুপি সরিয়ে নিয়েছো শবাধারগুলি / … জাদুনগরী থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসছে মানুষ / তাদের হাতে দলীয় পতাকা / … এখন তাদের দিয়েই তৈরি হবে নতুন বায়স্কোপ।
গোটা বই জুড়ে অজস্র লাইনের ছড়াছড়ি যা পাঠক মনে দাগ কেটে যাবে । ‘ ক্ষ্যাপা খুঁজে ফিরে পরশ পাথর ‘ কবিতায় শঙ্কিত কবি আহ্বান জানাচ্ছেন ‘ অন্ধকারে কারা ফিসফিস করে ডাকছে / ক্ষ্যাপা ফিরে আয় , দিনকাল বড় খারাপ।’
কবি বিশ্বাস করেন ‘ ভালো মানুষেরা স্বার্থের জন্য খারাপ মানুষদের / গোপনে ব্যবহার করে তাদের উচ্ছিষ্ট করে দেয়।’
কবি দেখতে পাচ্ছেন , পাল্টে যাচ্ছে মানুষের ক্ষুধাও । ‘ সম্পদ ‘ কবিতায় তিনি লিখেছেন- ‘ … কেবল ভাতের জন্য , রুটির জন্য যে ক্ষুধা ছিল / তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে জীবনের কোষে কোষে । / … শরীর ও মনের গোপন সংগ্রহে মিশে আছে / এই লালিত ক্ষুধা।’
গোটা কাব্যগ্রন্থ জুড়ে নিপুণ দক্ষতায় কবি বিস্তার করেছেন কাব্যগাঁথা । যা চেতনার পর্দায় তীব্র হর্সপাওয়ার যুক্ত আলো ছড়িয়ে দেবে । বইটি পাঠক মহলে সমাদর পাবে কোনও সন্দেহ নেই। ——প্রবীর চক্রবর্তী

Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

14 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

14 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

14 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

14 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

1 day ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

1 day ago