কারায় দুর্নীতির উপাখ্যান – ১, চাল চুরি কাণ্ডে মূল মাথাকে বাঁচাতে তোড়জোড় ঘিরে প্রশ্ন।।

 কারায় দুর্নীতির উপাখ্যান – ১, চাল চুরি কাণ্ডে মূল মাথাকে বাঁচাতে তোড়জোড় ঘিরে প্রশ্ন।।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়ার কথা বারবার জোর দিয়ে বলেন। অথচ তার সরকারের অধীনস্ত রাজ্য কারা দপ্তরে দুর্নীতি একেবারে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে।

সব থেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, বর্তমান কারা দপ্তরের মন্ত্রী শান্তনা চাকমা দুর্নীতির সব খবর এবং তথ্য জেনেও, রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। শুধু তাই নয়,মন্ত্রীর ভূমিকাও রহস্য জনক।তিনি মূল অভিযুক্তের পক্ষ নিয়ে,তাকে বাঁচানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর স্বচ্ছ প্রশাসনের স্লোগান ঘিরে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।গত ১৮ এবং ১৯ মে দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রথম পাতায় বিশালগড় কেন্দ্রীয় কারগারে নজিরবিহীন চাল চুরি কাণ্ডে তথ্যমূলক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ‘চারশ বস্তা চাল বেহদিশ, কেন্দ্রীয় কারাগারে বড় ঘোটালা হাতেনাতে ধরলেন খোদ মন্ত্রী’ এবং ‘রিপোট গেলো মন্ত্রীর টেবিলে, কেন্দ্রীয় কারাগারে চাল চুরি কাণ্ডে পাঁচজনকে শোকজ’ শীর্ষক সংবাদগুলি প্রকাশিত হয়েছিল।আজ প্রায় পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, সরকার এবং দপ্তর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টো দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতে ময়দানে নেমেছে একাংশ। সাথে দপ্তরের মন্ত্রীকেও এই উদ্যোগে সামিল করেছে ওই স্বার্থন্বেষী মহলটি।কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবাহমান চাল চুরি কান্ডে যে সব তথ্য উঠে এসেছে, তা জানলে রাজ্যবাসীর চোখ কপালে উঠবে।গত ১৮ এবং ১৯ মে প্রকাশিত খবরে ৪০০ বস্তা চাল বেহদিশ বলা হয়েছিল। বাস্তবে দুর্নীতির সার্বিক তদন্তের পর কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসে। ৪০০ বস্তা নয়, চুরি হয়েছে ২০০২ বস্তা চাল। চুরি করা চালের পরিমাণ ১ লক্ষ ১শ কেজি। শুধু তাই নয়, কোনও রকম ই-টেন্ডার ছাড়া, চালের প্রতি কেজিতে দাম বাড়িয়ে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ঘুমে রেখে সমগ্র চুরিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল।এই চুরি কাণ্ড মন্ত্রীর নজরে আসার পরই ক্ষুব্ধ

কারামন্ত্রী শান্তনা চাকমা গত ১১ মে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে পুরো চাল চুরি কাণ্ডের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।তদন্ত কমিটিতে ছিলেন, এসডিএম বিশালগড়, এএসডিএম বিশালগড় এবং সাবডিভিশনাল ফুড কন্ট্রোলার, বিশালগড়।তিনজনের এই তদন্ত কমিটি যথা সময়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছে।সেই তদন্ত রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে কেন্দ্রীয় কারাগারে নজিরবিহীন চাল চুরির সীমাহীন দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।শুধু তাই নয়,এই সীমাহীন দুর্নীতির মূল মাস্টার মাইন্ড এবং অভিযুক্ত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ইনচার্জ দেবাশীষ শীলকে।এখানেই শেষ নয়, তদন্ত রিপোর্টে শ্রীশীলের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।তাতে জেলার ইনচার্জ দেবাশীষ শীলের গ্রেপ্তার হওয়া ও জেলে যাওয়া উচিত।কিন্তু বিস্ময়কর ঘটনা হলো, এতবড় ঘোটালার পরও মূল অভিযুক্তকে বাঁচাতে উঠে পরে লেগেছে একটি অংশ।মন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি হলো। কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার পর মন্ত্রীর অনুমোদনেই দপ্তর জেলার ইনচার্জ দেবাশীষ শীল সহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে। চার্জশিটে দেবাশীষ শীলের বিরুদ্ধে ৬ টি মারাত্মক চার্জ আনা হয়।চার্জশিটের মেমো নং F.X-674/IGP/ 2022/514649 dated 5th July 2023।অভিযোগ, রহস্যজনক ভাবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের ফাইল আটকে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শ্রী শীল এখনও বহাল তবিয়তে কেন্দ্রীয় কারাগারে চাকরি করেছেন। নতুন জেলার এসে জয়েন করার পরও অলৌকিক ক্ষমতা বলে এই বামমার্গী (যিনি ২০১৭ সালেও কমিউনিস্ট পার্টিকে চাঁদা দিয়েছেন) জেলার ইনচার্জের পদ আগলে আছেন।জানা গেছে, যেভাবে তাকে বাঁচানোর জন্য আদা-জল খেয়ে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছে, তাতে আগামীদিনে মন্ত্রীও আইনি সমস্যায় জড়িয়ে যেতে পারেন।শুধু তাই নয়, এতে সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.