কারায় দুর্নীতির উপাখ্যান-২ চাল চুরি কাণ্ডে সরকার ও মন্ত্রীর ভূমিকা ঘিরে বিস্ময়!!

 কারায় দুর্নীতির উপাখ্যান-২ চাল চুরি কাণ্ডে সরকার ও মন্ত্রীর ভূমিকা ঘিরে বিস্ময়!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় কারাগারে নজিরবিহীন ‘চাল চুরি কাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে বাঁচাতে তোড়জোড় ঘিরে প্রশ্ন’ শীর্ষক সংবাদ মঙ্গলবার দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত হওয়ার পরই বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এতবড় দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও বিশেষ করে রাজ্য সরকার এবং দপ্তরের মন্ত্রীর নির্বিকার ভূমিকা ঘিরে জনমনে বড় ধরনের প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।এ ক্ষেত্রে দপ্তরের মন্ত্রীর ভূমিকা বেশ সন্দেহজনক বলে মনে করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় কারাগারে ৫০ বা ১০০ বস্তা চাল চুরি হয়নি, চুরি হয়েছে ২০০২ বস্তা। অর্থাৎ ১ লক্ষ ১০০ কেজি চাল হাফিজ করে দেওয়া হয়েছে। স্টোর থেকে শুরু করে যাবতীয় সরকারী নথিতে দফায় দফায় চাল রিসিভ (গ্রহণ) করা হয়েছে বলে এন্ট্রি রয়েছে। চালের বিল প্রদান করা হয়েছে। অথচ স্টোরে চাল মজুত হয়নি। জেলার ইনচার্জ দেবাশীষ শীলের জ্ঞাতসারেএই দুর্নীতি হয়েছে। তিনিই এই নজিরবিহীন দুর্নীতির মূল মাথা।কারণ তিনিই যাবতীয় নথিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।বিল প্রদান করেছেন।তদন্তে সবকিছু প্রমাণ হয়েছে।অথচ দপ্তরের মন্ত্রী রহস্যজনকভাবে নীরব। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির মূল মাথাকে বিভাগীয় তদন্তের আওতার বাইরে রাখতে, এমনকী মূল মাথাকে বাঁচাতে মন্ত্রী নিজেই কুচক্রীদের জালে জড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রীর অফিসে এবং মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠ কর্মচারী যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ।প্রশ্ন হচ্ছে, ওই কর্মী কি মন্ত্রীর নির্দেশে এইসব করছেন? সবথেকে বড় কথা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় কারগারে চাল চুরি সম্পর্কে মন্ত্রী নিজেই ওয়াকিবহাল।তদন্তেও প্রমাণিত।তারপরও তিনি নীরব কেন?প্রশ্ন এখানেই। মন্ত্রীর উপর এ ব্যাপারে বাইরে থেকে কোনও চাপ নেই তো? এ নিয়েও জল্পনা চলছে।তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, তাদের তদন্ত শেষ করে রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে, “… It is found that there is entry of 100, 100 kg rice on the date of 25/03/2023 and the said register has been signed by the storekeeper along with jailor i/e and Deputy Superintendent, KTS, whereas the entire quantity of the rice was not received.The_ fact was known to all.এরপরও সরকার এবং দপ্তরের মন্ত্রী নীরব কেন? প্রশ্ন জনমনে। তদন্ত কমিটির জেলার ইনচার্জ দেবাশীষ শীলকে মুখ্য অভিযুক্ত করে অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কারা দপ্তরে সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশ মোতাবেক কারামন্ত্রীর অনুমোদনের পর দপ্তর যথারীতি চার্জশিট গঠন করে। সেই চার্জশিটে প্রধান অভিযুক্ত দেবাশীষ শীলের বিরুদ্ধে ৬টি মারাত্মক চার্জ আনা হয়।এক, ব্যক্তিগত স্বার্থে এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহার করা। দুই, সরকারী তথ্যে হেরাফেরি এবং মিথ্যাচার করা।তিন, বদ উদ্দেশ্যে সরকারী কাজ সম্পাদন,অনিয়ম এবং অবহেলা করা। চার, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অমান্য করা এবং অবাধ্য হওয়া। পাঁচ, সরকারী কাজে অনৈতিক পরিতৃপ্তি পেতে আগ্রহ। ছয়, অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক বাসনা এবং সরকারী অর্থ নয়ছয় করা। চার্জশিটের মেমো নং FX-674 / IGP/ 2022/5146-49 dated 5/7/2023.কিন্তু রহস্যজনক ঘটনা হলো, গত তিন মাস ধরে দেবাশীষ শীলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদম্ভের (ডিপার্টমেন্টাল প্রসেডিং) ফাইল আটকে রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে, তাও রাজ্যের ইতিহাসে বিরল।তাতে শুধু সরকারের ভাবমূর্তিই কালিমালিপ্ত হবে না, সরকারের এবং মন্ত্রীর স্বচ্ছতা ও সততা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।পশ্চিমবঙ্গে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে খোদ এক মন্ত্রী বর্তমানে ইডি’র হেপাজতে। অথচ এই রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকারের কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদিদের চাল চুরি কাণ্ড প্রমাণ হওয়ার পর, ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা- উল্টো মূল অভিযুক্তকে বাঁচাতে চাইছে একটি মহল। এ নিয়ে কারা দপ্তরেও কর্মচারীদের মধ্যে গুঞ্জন চলছে।প্রশ্ন হচ্ছে, কীসের বিনিময়ে চাল চুরি কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্তকে পার পাইয়ে দেওয়ার প্রয়াস চলছে খোদ মন্ত্রীর অফিসে?জানতে চায় রাজ্যবাসী।

এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.