কিছুই ঠিক নেই!

 কিছুই ঠিক নেই!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজনীতিতে এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যেগুলো বরাবরই সাধারণ মানুষের চোখের আড়ালে থাকে। একটু স্পষ্ট করে বললে, মানুষকে বুঝতে দেওয়া হয় না। রাজনৈতিক দল এবং দলের নেতা-নেত্রীরা এমন একটা কৃত্রিম ভাব নিয়ে চলেন, যেন কিছুই হয়নি। সবকিছু ঠিক ঠাক, একেবারে পরিকল্পনামতো চলছে। নিজেরা যেমন চাইছেন,ঠিক তেমনভাবেই সবকিছু পরিচালনা করতে পারছেন। ভিতরে ভিতরে যত মানসিক চাপ, অশান্তি, মতবিরোধ, গোষ্ঠী বিবাদ,টেনশন থাকুক না কেন, জনগণকে সেটা বুঝতে দেওয়া যাবে না। জনগণের সামনে অর্থাৎ লোকসমাজে এমন একটা ভাব নিয়ে চলতে হবে, এমন একটা তথাকথিত সুখী মুখমণ্ডল নিয়ে চলতে হবে, যা দেখে সাধারণ মানুষ ভাববে ‘অল ইজ ওয়েল’।অনেকটা কুৎসিত মুখমণ্ডলকে ‘মেক আপ’ করে পেশ করার মতো বিষয়টি।সমাজের সব ক্ষেত্রেই এই ধরনের প্রবণতা সবথেকে বেশি।শুধু তাই নয়, রাজনীতিতে এই প্রবণতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বলে বিবেচিত হয়।এই কৌশল যারা রপ্ত করতে পারে, রাজনীতির ময়দানে তারাই এগিয়ে যেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
এই কথাগুলি বলার পেছনে একটাই কারণ হলো,বর্তমান রাজ্য শাসকদলের অন্দরে পরিস্থিতিটা ঠিক ওইরকমই৷ এমন ভাব দেখানো হচ্ছে যে, সব কিছু ঠিকঠাক চলছে। একেবারে সুখী পরিবার। আদতে কিছুই ঠিকঠাক নেই।

দলের অন্দরে গোষ্ঠী বিবাদ এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে,কেউ কারো নাম পর্যন্ত শুনতে পারছেন না। রাজ্য বিজেপির বিভিন্ন মহল থেকে এমন বহু আভাস পাওয়া যাচ্ছে।অনেকেই নানা কারণে প্রচণ্ড মানসিক অশান্তি ও চাপের মধ্যে আছেন।কখন ক্ষমতা এবং চেয়ার চলে যায়— এই চিন্তায় রাতে ঘুম হচ্ছে না অনেকের। অথচ ভাবখানা এমন, যেন কিছুই হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। আসলে কিছুই ঠিক নেই বলে খবর।খবরে প্রকাশ, এরই মধ্যে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণের সামাজিক মাধ্যমে করা এক টুইট ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা
আরও তুঙ্গে উঠেছে।

যীষ্ণু দেববর্মণের এই পোস্ট ঘিরে শাসকদলের অন্দরমহলের পরিস্থিতি আরও স্পষ্ট হয়েছে।গত শুক্রবার রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ে সংগঠন মহামন্ত্রী রবীন্দ্র রাজু’র উপস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি, পূর্ব ত্রিপুরা আসনের সাংসদ সহ
আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।কিন্তু সেই বৈঠকে অন্য দুই সাংসদ,প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কেউই উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক যখন চলছিল,তখনই সামাজিক মাধ্যমে যীষ্ণু দেববর্মণের সেই পোস্ট। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ।উল্লেখ্য, নানা কারণেই রাজ্য বিজেপিতে আড়াআড়ি ভাবে একটা বিভাজন তৈরি হয়েছে। সেই বিভাজনটা যে অনেকটা বড় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

ক’দিন আগে রাজ্য এসেছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য প্রভারি সুনীল দেওধর। তিনি রাজ্যে এসে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ থেকে শুরু করে রাজ্যে বিজেপির অনেক কার্যকর্তার সাথেই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।কিন্তু সুনীল দেওধর
সাক্ষাৎ করেননি মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার সাথে।যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাংসদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক সহ আরও অনেকের সাথেই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার বিরোধ রয়েছে। এ কথা রাজ্যবাসী কারোর অজানা নয়। যাকে কেন্দ্র করে রাজ্য বিজেপিতে দীর্ঘদিন ধরে একটা অস্থির পরিস্থিতি চলছে।অর্থাৎ দলের অন্দরে কিছুই যে ঠিক নেই তা কিন্তু স্পষ্ট। সামনেই লোকসভা নির্বাচন।

নতুনভাবে গজিয়ে উঠা তিপ্রা মথার কারণে পূর্ব ত্রিপুরা আসনটি এবার হাতছাড়া হতে পারে বিজেপির।এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই রাজ্য বিজেপি যত দ্রুত সম্ভব প্রকৃত অর্থেই ‘অল ইজ ওয়েল’ হয়ে উঠতে পারবে, ততই মঙ্গল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.