কুরবানির বাজারে নজর কারছে লাখ টাকার বিদেশি পশু

 কুরবানির বাজারে নজর কারছে লাখ টাকার বিদেশি পশু
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

কুরবানি শব্দটি ‘ কুরবুন ’ মূল ধাতু থেকে এসেছে । অর্থ হলো নৈকট্য লাভ করা , সান্নিধ্য অর্জন করা , প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করা । ধন – সম্পদের মোহ ও মনের পাশবিকতা দূরীকরণের মহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর আসে পবিত্র কুরবানি । ইসলাম ধর্মে কুরবানির দিনকে ‘ ঈদুল আজহাও ‘ বলা হয় । আগামী মাসের ৯ জুলাই কুরবানির ঈদ । এখনো পর্যন্ত পশুর হাট না বসলেও বেচাকেনা শুরু হয়েছে পশুর খামারগুলিতে । কুরবানির জন্য গরু আমদানি প্রচুর হলেও এবারের কুরবানির ঈদে পাওয়া যাচ্ছে বিদেশি একাধিক পশুর সম্ভার । গত দু’বছরে করোনার দাপটে সেইভাবে কুরবানির ঈদ অনুষ্ঠিত হয়নি । তাই এবছর বাড়তি দাম দিয়েও বিদেশি পশুর খরিদ্দারের অভাব হবে না বলে আশা করছে খামার মালিকরা । কুরবানি করা যায় এমন পশুর মধ্যে গোটা দেশে গরু ও ছাগলের চাহিদা ব্যাপক । মহিষের চাহিদাও রয়েছে অনেক ।

তবে এবার চাহিদা বেড়েছে উট এবং দুম্বার । রাজস্থানে উটের কিছু খামার থাকলেও পরিসর তেমন বৃহৎ নয় । দুম্বাও দেশি প্রাণী না হওয়ায় খুব একটা দেখা যায় না । তবে , এবারের ঈদকে ভিন্নতা দিতে আগে থেকেই উদ্যোগী ছিলেন বেশ কিছু খামারিরা । এবার কলকাতার সবথেকে বড় কুরবানির হাট খিদিরপুরে মিলবে ভারতীয় দুম্বা , দুবাইয়ের দুম্বা ও ছাগল এছাড়া থাকছে বার্বারি । বার্বারি দুবাইয়ের একটি ভিন্ন প্রজাতির ছাগলের জাত । এদের শিং দেখতে বুনো হরিণের মত । ভারতে এর আগে কুরবানির সময় সচারচর চোখে পড়ত না বার্বারি । কিন্তু এবারের কুরবানির ঈদকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে এখনও পর্যন্ত চাহিদার দিক থেকে বেশ এগিয়ে বার্বারি । পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার বেড়িবাঁধে ‘ সাদিক এগ্রো’র ম্যানেজার জানিয়েছেন , ‘ গরু ছাগলের পাশাপাশি আমরা দুম্বা , বিদেশি ছাগল এবং বার্বারি রেখেছি । গত বছর দুম্বার ভাল চাহিদা ছিল । এবার দুই জাতের দুম্বা আছে । ভারতের আর দুবাইয়ের ।

‘ তার দাবি শেষ পনেরো দিনে প্রায় ৫০ টির মতো দুম্বা আর বার্বারি বিক্রি হয়েছে । এছাড়া ভারতের একটা মিশ্র জাতের ছাগলের চাহিদাও বেড়েছে বলে দাবি তার । ভারতের মিশ্ৰ ছাগলগুলি কিছুটা ভেড়ার মত দেখতে । তবে এবার সবার নজর বার্বারিকে ঘিরে । দুবাইয়ের মরুভূমি এলাকায় পাওয়া যায় বার্বারি । দেখতে অতীব সুন্দর । কুরবানির পশু কিনতে যারা আসেন তাদের নজরকে আকৃষ্ট করাই প্রধান লক্ষ্য থাকে পশু বিক্রেতাদের । কলকাতার খিদিরপুর অঞ্চলে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কুরবানির হাটে পশু বিক্রি করেন মহম্মদ আলম । তিনি বললেন , ‘ কুরবানির ক্রেতাদের মানসিকতা একেবারে একেবারে অন্যরকম ভাল লাগলেই কিনে নিয়ে যান তারা । তাই লাখ দুয়েকের বার্বারিও যে শখানেক এবারের কুরবানিতে বিক্রি হয়ে যাবে এমনটাই আশা আলমের । এবারের কুরবানি নিয়ে বড়ই আশাবাদী উত্তরপ্রদেশের পশু ব্যবসায়ী শেখ রেজাউল । তিনি বলেছেন , ‘ পুরো দমে বেচাকেনা শুরু হলে হয়তো আমরা চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাব । ‘ নদিয়ার বেড়িবাঁধ এলাকায় বেশ কয়েকটি দুম্বার খামার খোলা হয়েছে ।

গত বছর অক্টোবর মাসে প্রচুর সংখ্যায় দুম্বা আর বার্বারির শাবককে কলকাতায় রফতানি করেছিল দুবাই । সেই সময় এক – একটি পশুর গড় ওজন ছিল কেজি পাঁচেক । আর এখন এক – একটি পশুর ওজন একশো কিলোর কাছাকাছি । কয়েকটা আবার একশো কিলো ওজনকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে । অর্থনীতিতে মন্দার আঁচ লাগছে না তিন সপ্তাহ আগের কুরবানির বাজারে । কুরবানি পশু দেখতে আসা ফয়েজ রহমান বলেছেন , ‘ আপাতত যা মনে হচ্ছে দামটা একটু বেশিই চাইছে । তবে আমি প্রতি বছর গরুই কিনি । এবার দুম্বা দিতে চাই । খামারগুলোতে পঞ্চাশ কেজির মধ্যে দুম্বার দাম এক লক্ষ আর একশো কিলোর বেশি ওজনের দুম্বার দাম এখনই চার লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে । ভারতীয় ছাগল পাওয়া যাচ্ছে পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকায় । দামের দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে দুবাইয়ের ছাগল । নধর দেহের দুবাইয়ের ছাগল দাম চাওয়া হচ্ছে দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা । দুবাইয়ের বার্বারি দুই থেকে চার লক্ষ টাকা । —– সন্দীপ বসু

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.