কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপক প্রচার সত্ত্বেও,হাসপাতালে জনঔষধির সস্তা ওষুধ সংকটে রোগীরা বঞ্চিত!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সস্তায় ভালো গুণমানসম্পন্ন জনঔষধি তথা জেনারিক মেডিসিন সুস্থ হতে রোগীকে ব্যবহার করার জন্য সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও নানাভাবে ব্যাপক প্রচার করে চলেছে। অথচ বিস্ময় ও পরিতাপের ব্যাপার হলো ত্রিপুরা তথা রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে সস্তায় জনঔষধির (জেনারিক মেডিসিন) ঔষধ সংকটে রোগীরা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের এই সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। সেই কারণে চিকিৎসক যে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন সেই ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী রোগীকে চড়ামূল্যে ওষুধের দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে।ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের সস্তা জনঔষধি প্রকল্পের ওষুধ রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে না পেয়ে রোগীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। রবিবার মহারাষ্ট্রের নাগপুরে আরএসএসের সদর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বক্তব্য রাখার সময় খুব জোর দিয়ে বলেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের সস্তা জনঔষধি প্রকল্পের ওষুধের সুবিধা পাচ্ছেন দেশের মানুষ তথা রোগীরা। অথচ এখানে অভিযোগ ব্যতিক্রম হলো ত্রিপুরা রাজ্য। রাজ্যের মানুষ তথা রোগীরা কেন্দ্রীয় সরকারের ঢালাও প্রচার সত্ত্বেও সস্তা জনঔষধির ওষুধ হাসপাতাল কাউন্টার থেকে পাচ্ছেন না বলে সবসময়ই এই অভিযোগ করছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য প্রকল্পের সুফল ও সুবিধা যাতে রাজ্যের মানুষ পুরোমাত্রায় পায় তাতে সচেষ্ট থাকলেও সস্তা জনঔষধির ওষুধ প্রকল্পের ওষুধ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের সব ওষুধ যাতে রোগীরা রাজ্যের সব হাসপাতালের কাউন্টারে পান সেই উদ্যোগ ও সচেষ্ট পুরোমাত্রায় কেন নেই।
কেন্দ্রীয় সরকার শয়ে শয়ে কোটি টাকা খরচ করে সংবাদ মাধ্যমেও নানাভাবে বিজ্ঞাপনে প্রচার করে সস্তায় জনঔষধির ওষুধ রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করার জন্য দেশের মানুষকে সচেতন ও অবগত করলেও রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে কেন রাজ্যবাসী তার পুরো সুবিধা পাচ্ছেন না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।দীর্ঘদিন ধরেই তাতে ডবল ইঞ্জিন সরকারের দিকেই রোগীরা আঙুল তুলছেন রাজ্যের প্রধান দুই সরকারী হাসপাতাল হলো জিবি এবং আইজিএম। এই দুটি হাসপাতালে জনঔষধির সস্তা ওষুধ বিক্রির জন্য দুটি কাউন্টার রয়েছে। তার মধ্যে জিবি হাসপাতালের কাউন্টারটি এমন জায়গায় খোলা হয়েছে যে রোগীরা কাউন্টার খুঁজে পেতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। জিবির কাউন্টারটি রোগী ও রোগীর আত্মীয়ের চোখের আড়ালে থাকায় বহু রোগী প্রতিদিন আবার কাউন্টার খুঁজে না পেয়ে প্রেসক্রিপশন নিয়ে বেসরকারী ওষুধের দোকানে ছুটে যাচ্ছেন। জিবি এবং আইজিএম হাসপাতালে জনঔষধির সস্তা ওষুধের কাউন্টার থাকলেও রোগীরা প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাচ্ছেন না বলে প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করছেন। ফলে ওষুধের দোকান থেকে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনের ব্র্যান্ডেট ওষুধ খুব চড়া মূল্যে কিনতে গিয়ে পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের বিরাট অংশের চিকিৎসক আবার প্রেসক্রিপশনে শুধু নামিদামি কোম্পানির ব্র্যান্ডেড ওষুধ লিখে দিলেও সস্তা জনঔষধির ওষুধের নাম বা জেনারিক নাম কোনও কিছুই লিখে দিচ্ছেন না বলেও প্রতিদিনই রোগীরা এই অভিযোগও করছেন।
এমনিতেই জিবি, আইজিএম ও অন্যান্য সরকারী হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর সব সময়ই আকাল ও সংকট থাকে বলে অভিযোগ। ফলে ওষুধের দোকান থেকেই প্রেসক্রিপশনের সিংহভাগ ওষুধপত্র রোগ নিরাময়ে কিনে নিতে হচ্ছে। যদিও স্বাস্থ্য দপ্তরের খাতাপত্রে ও হাসপাতালের খাতাপত্রে হাসপাতালে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর কোনও সংকট নেই বলে সব সময়ই প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবটা সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে রোগীরা বলছেন।
এদিকে, হাসপাতালগুলিতে জনঔষধির সস্তা ওষুধ সরবরাহ করার দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ মার্কফেড সংস্থা। এই কো-অপারেটিভ সংস্থার চেয়ারম্যান হলেন অভিজিৎ দেব।কো-অপারেটিভ সংস্থার তরফে
হাসপাতালগুলিতে জন ঔষধির সস্তা ওষুধ সরবরাহ করার জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না বলে সংবাদ সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু কো-অপারেটিভ সংস্থার তরফে চেষ্টা করা হলেও দিল্লীর যে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা থেকে রাজ্যের জন্য জনঔষধির ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে সেখানেই ত্রিপুরা রাজ্যকে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ায় নিয়মিত সব ধরনের ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী থেকে রাজ্যবাসী বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ফার্মাসিউটিক্যাল মেডিসিন ব্যুরো অব ইন্ডিয়া ডিভাইজ নামক একটি সংস্থা সারা দেশে জনঔষধির ওষুধ সরবরাহ করে। এই সংস্থার কাছে মার্কফেডের তরফে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ওষুধ নিয়মিত যথাসময়ে পাঠানোর জন্য মার্কফেড থেকে দরবার করা হলেও উপযুক্ত সাড়া না পাওয়ায় তার প্রভাব পড়ছে হাসপাতালে। রাজ্য সরকার ও তার স্বাস্থ্য দপ্তর এ বিষয়ে নির্বিকার বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার দাবি উঠেছে অনেক আগেই। এদিকে, রাজ্যের সব হাসপাতালে ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও জনঔষধির কাউন্টার নেই। সব হাসপাতালে জনঔষধির কাউন্টার চব্বিশ ঘন্টা চালু রাখারও দাবি উঠেছে।

Dainik Digital

Recent Posts

হৃদরোগে হঠাৎ মৃত্যু: কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…

17 hours ago

প্রশ্নের মুখে বৈধ সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানির তুলনায় রপ্তানি নামমাত্র, পরিস্থিতি চিন্তাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…

17 hours ago

আঠাশের বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা প্রদ্যোতের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…

18 hours ago

হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…

18 hours ago

সতর্কতাই বাঞ্ছনীয়!!

নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…

18 hours ago

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

2 days ago