কেন্দ্র ভাড়া নিয়ন্ত্রণের সার্কুলার তুলে নিতেই ফের বিমান মহার্ঘ
দুর্গাপুজোর আরও ২৫ দিন বাকি থাকলেও পুজোর দিন যত এগিয়ে আসছে বিমান সংস্থাগুলিও ক্রমেই সেই লক্ষ্যে ভাড়া বৃদ্ধি করে চলেছে । বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির উপর যেমন রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই বলে ভোক্তারা সব সময় অভিযোগ তোলেন , ঠিক বিমান ভাড়ার ক্ষেত্রেও বিমান সংস্থাগুলিও নিজেদের মর্জিমতো ভাড়া বৃদ্ধি করে নিচ্ছে । বিমান ভাড়ার উপর এখনন আর কেন্দ্রীয় সরকারেরও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই । মাঝে কোভিড পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক গোটা দেশের অভ্যন্তরে সব রুটের বিমান ভাড়ার উপর নিয়ন্ত্রণ এনে গত ২১-৬ ২০২০ এক সার্কুলার জারি করেছিল । তারপরই বিমান সংস্থাগুলি বিমান ভাড়া বৃদ্ধির ঊর্ধ্বসীমায় নিতে আটকে গিয়েছিল । সেই সার্কুলারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক কত মিনিটের আকাশপথে কত টাকা পর্যন্ত ভাড়া ঊর্ধ্বসীমায় নিতে পারবে তার গাইডলাইনও দিয়েছিল । সর্বনিম্ন ভাড়া কত টাকা নিতে পারবে সেই গাইডলাইনও বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান মন্ত্রক । তারপর সেই সার্কুলার পেয়ে বিমান সংস্থাগুলি ভাড়া যাত্রীর নাগালের মধ্যেই রেখে দেয় । বিমান যাত্রীরাও বিমানে বিভিন্ন রুটে যাতায়াতে স্বস্তিতে ছিলেন । বিস্ময়ের ব্যাপার হলো বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর থেকে দায়িত্ব উঠিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সরকারই । আগের সার্কুলার উঠিয়ে দিয়ে গত ৩১ আগষ্ট কেন্দ্রীয় সরকার পুনরায় এক সার্কুলার জারি করে বিমান সংস্থাগুলিকে জানিয়ে দেয় এখন থেকে বিমান সংস্থাগুলি নিজেরাই ভাড়া নির্ধারণ করবে । কোন্ রুটে কত টাকা ভাড়া নেবে তা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হলো বিমান সংস্থাগুলির হাতে । আর তাতেই বিমান সংস্থাগুলি নিজের মর্জিমতো যথেচ্ছ ভাড়া বৃদ্ধি করতে পারবে বলে বিমান সংস্থাগুলি স্বস্তিতে পড়ে । আর তাতে বিমান যাত্রীদের বাড়ছে ক্রমেই চওড়া অস্বস্তি । সামনে দুর্গাপুজো । আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পুজো দিয়ে শারদোৎসব শুরু হচ্ছে । কিন্তু তার কয়েকদিন আগে থেকে বিমান সংস্থাগুলি আগরতলার সঙ্গে যাতায়াত রয়েছে এমন বিমানগুলিতে ক্রমেই যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করে চলেছে। রাজ্যের অসংখ্য পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী ও বেসরকারি সংস্থায় চাকরিজীবী ছেলেমেয়ে থাকেন বহিঃরাজ্যে। পুজোর দু – তিন দিন আগে থেকে পুজোর ছুটি কাটাতে পুজোয় পরিবারের সঙ্গে থাকতে বাড়িতে আসতে শুরু করেন। বহিঃরাজ্যের যে জায়গার আগরতলার সঙ্গে সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু রয়েছে সেই বিমানগুলিতে এই সুযোগে যথেচ্ছভাবে ভাড়া পুজোর আগে থেকেই বৃদ্ধি করে রেখেছে বিমান সংস্থাগুলি।বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি বিমান আগরতলায় আসে। বেঙ্গালুরুতে প্রচুর সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য থাকেন। পুজোয় আসবেন তারা। কিন্তু বুধবার খবর নিয়ে জানা গেছে বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি বিমানে আগরতলা আসতে যাত্রীপিছু ভাড়া সাড়ে চব্বিশ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে টিকিট নিলে । এই অস্বাভাবিক চওড়া ভাড়া বিমান সংস্থাগুলি এই পথে নির্ধারণ করে রাখায় রাজ্যের ছাত্রছাত্রী ও অন্যান্যরা পুজোয় বাড়িতে ফিরতে মহাবিপাকে পড়েছেন। পুজোর ৪-৫ দিন আগে থেকেই বিমানে এই চওড়া ভাড়া নির্ধারণ করে রেখেছে বিমান সংস্থাগুলি । দিল্লী থেকে সরাসরি বিমানে এই সময়ে আসতে কোনও বিমানে ১২ হাজার আবার কোনও বিমানে ১৬ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে রেখেছে বিমান সংস্থা । বহিঃরাজ্য থেকে কলকাতায় এসে লিঙ্ক ফ্লাইটে আগরতলায় আসতেও অস্বাভাবিক
বিমান ভাড়া নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। কলকাতা থেকে আসার ক্ষেত্রেও ভাড়া প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে । কলকাতা থেকে পুজোর সময়ে আগরতলায় আসতে বিমানে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকায় ভাড়া দাঁড়িয়েছে এখনই । গুয়াহাটি থেকে আগরতলায় আসতেও বিমান ভাড়া অস্বাভাবিকই বুকিং সিস্টেমে দেখাচ্ছে । অথচ আগরতলা থেকে পুজোর সময় বহিঃরাজ্যে যেতে এখনও সেই মাত্রায় চওড়া ভাড়া পৌঁছেনি । পুজো শেষ হলে যখন আবার ছাত্রছাত্রী ও অন্যরা বহিঃরাজ্যে ফিরে যাওয়ার জন্য টিকিট নিতে যাবেন ঠিক সেই সময় আবার সুযোগ বুঝে বিমান সংস্থাগুলি অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধি করে দেবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা ।