সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীদের সম্পত্তি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে কে ধনীতম মুখ্যমন্ত্রী কে দরিদ্রতম মুখ্যমন্ত্রী তা জানা গেছে।দেশের মানুষ তা জেনেছেন।দেশে এখন রাজতন্ত্র নেই। গণতান্ত্রিক দেশ এবং একই সাথে আমাদের দেশ ভারতের যে অবস্থান বিশ্বের নিরিখে তা ভারত এখনও উন্নয়নশীল দেশ। তৃতীয় বিশ্বের দেশ ভারত। অর্থাৎ বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির সাথে একসারিতে এখনও ভারত আসেনি। এ দেশের ৮০ কোটি মানুষকে এখন বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ ৮০ কোটি মানুষের কাছে রেশনসামগ্রী কেনার সামর্থ নেই। এই অবস্থায় দেশে দেশে সরকারে রয়েছে কিংবা রাজ্যে রাজ্যে সরকারে রয়েছে তারা জনসেবা করছে বলে প্রচারের ফানুস উড়াচ্ছে। আদতে রাজতন্ত্র থেকেও গণতন্ত্রের ধ্বজাধারীরা গণতন্ত্রকে নিয়ে একদিকে যেমন ছিনিমিনি খেলছে, ভোটের নামে মানুষকে ব্যবহার করছে, অন্যদিকে তাদের সম্পত্তি দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। কি রাজ্যের ক্ষমতাশালীরা, কি কেন্দ্রের ক্ষমতাশালীরা একবার ক্ষমতায় বসলে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ দিন কে দিন কোনও এক ক্ষমতার যাদুবলে বেড়েই চলে। এতে কোনও বিরাম নেই। সেজন্য রাজ্যনেতাদের পেছনে এখন ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সের অভিযানও চলে। এই অবস্থায় নির্বাচনের সময় প্রার্থীদের সম্পত্তির হিসাব হলফনামার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। এর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বেসরকারী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন কর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস বা এডিআর। সম্প্রতি তারা ৩১টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্পত্তির হিসাব প্রকাশ্যে এনেছে। মূলত তাদের নামে পুলিশের খাতায় অভিযোগ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদিও প্রকাশিত করে থাকে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্য থেকে সবচেয়ে ধনী মুখ্যমন্ত্রী অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। তার সম্পত্তির পরিমাণ ৯৩১ কোটি টাকা। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের সাথে অন্ধ্রপ্রদেশেরও বিধানসভা নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনের সময় তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে তার সম্পত্তির হিসাব হলফনামার মাধ্যমে দাখিল করে। সেই সম্পত্তির হিসাব থেকে জানা যায় যে, দেশে মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তির মালিক তিনি। তার এই সম্পত্তির পেছনে কি রহস্য কিংবা তার সম্পত্তির উৎস কি তা নিয়ে সাধারণ্যে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু এটা সত্য যে, ক্ষমতায় আসার আগে তিনি কিছুদিনের জন্য জেলে গিয়েছিলেন। বিজেপি তার সাথে জোট করে গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোটে যায়। সঙ্গে ছিল পবন কল্যাণের পার্টি এবং তাতেই বাজিমাত করে টিডিপি। সেই চন্দ্রবাবু নাইডু যেমন এবারে কেন্দ্রে এনডিএ সরকারের চালিকাশক্তি তেমনি রাজ্যেও তিনি জগনমোহনকে হেলায় হারিয়ে বাজিমাত করে। এবার সম্পত্তি নিয়ে চর্চায় চন্দ্রবাবু নাইডু। ভারতের মতো গরিব দেশে যেখানে ধনী, গরিবের মধ্যে আয়ের সঙ্গতি নেই। ধনী গরিবের মধ্যে পার্থক্য বাড়ছে, গরিব আরও গরিব হচ্ছে, ধনী আরও ধনী হচ্ছে সেই অবস্থায় এক রাজনেতা এও বিপুল সম্পত্তির মালিক- তা ঠিক মানানসই নয়- এই দেশের নিরিখে। বিশেষ করে এক অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এত বিপুল সম্পত্তি রয়েছে তা ঠিক এ দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থানের সাথে খাপ খায় না।এডিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীদের গড় মাথাপিছু আয় ১৩ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার মতো। যেখানে ২০২৩-২৪ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। সেই জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীদের মাথাপিছু আয় প্রায় তার ৭.৩ গুণ বেশি। মুখ্যমন্ত্রীদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ৫২.৫৯ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীরা শেষবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার সময় দেওয়া হলফনামায় যে সম্পত্তির উল্লেখ করেছিলেন তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ীই এডিআর মুখ্যমন্ত্রীদের সম্পত্তির এই তথ্য পেশ করেছে। সবচেয়ে ধনীতম মুখ্যমন্ত্রী যেমন রয়েছে তালিকায় তেমনি গরিব মুখ্যমন্ত্রীর নামও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সম্পত্তির পরিমাণ ১৫ লক্ষ টাকা।
এডিআরের রিপোর্টে আরও বলেছে, ৩১ জন মুখ্যমন্ত্রীর মোট সম্পত্তির মূল্য ১৩৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ জন বাদে সব কোটি পতি। দুজনের সম্পত্তি একশো কোটির বেশি। অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু এবং অরুণাচল প্রদেশের প্রেমা খান্ডুর সম্পত্তি ১০০ কোটির বেশি। প্রেমা খান্ডুর সম্পত্তি ৩৩২ কোটি। ভাবা যায়- একজন মুখ্যমন্ত্রীর এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। তৃতীয় ধনীতম মুখ্যমন্ত্রী কর্ণাটকের সিদ্ধারামাইয়া। তিনি ৫১ কোটি টাকার মালিক। ১৩ জন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
সব মিলিয়ে বলা যায় রাজনেতাদের মধ্যে যেভাবে ধনী হবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তা গণতন্ত্রের পক্ষে ঠিক মানানসই নয়। গণতান্ত্রিক কাঠামোতে রাজনেতারা প্রায়ই বলে থাকেন যে, তারা সমাজসেবাতে নেমেছেন। তারা জনগণের সেবা করতে রাজনীতিতে এসেছেন।এই অবস্থায় রাজনেতারা নিজেরাই যদি কোটি কোটি সম্পত্তির মালিক হন তা সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখে না।আখেরে তা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ বার্তার পরিচায়ক নয়।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…