কোন্ দিকে মহারাষ্ট্র-ঝাড়খণ্ড!!

 কোন্ দিকে মহারাষ্ট্র-ঝাড়খণ্ড!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দেশে লোকসভা নির্বাচনের পর হরিয়ানা এবং জম্মু কাশ্মীর,এই দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।ওই দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল ইতিমধ্যে সকলের জানা হয়ে গেছে।সমস্ত বুথ ফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণিত করে হরিয়ানায় বিজেপি তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে।ভোট শেষে যাবতীয় সমীক্ষার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল,হরিয়ানায় কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতে চলেছে। কিন্তু ভোট গণনা শুরুর পর বেলা বাড়তেই যাবতীয় হিসাব পাল্টে যায়। জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর প্রথম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।ফলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনও অনেকটা চ্যালেঞ্জের ছিল।ভোট গণনার পর দেখা যায়,বিজেপি অর্থাৎ এনডিএ জোট ক্ষমতায় আসতে না পারলেও,আগের তুলনায় জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপি অনেকটাই ভালো ফলাফল করেছে।তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো,এর ক’মাস আগে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে হরিয়ানা এবং জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপি তেমন একটা ভালো ফলাফল করতে পারেনি। ফলে সকলে একপ্রকার ধরেই নিয়েছিল যে, হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা
ভোটে বিজেপির ভরাডুবি ঘটবে। কিন্তু ফল হলো উল্টো।
হরিয়ানা এবং জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট মিটতেই আরও দুই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে উঠেছে।ওই দুটি রাজ্য হলো মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ড। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি,সাম্প্রতিক কালে কোনও রাজ্যের বিধানসভা ভোটে পদ্ম শিবিরের এমন নজিরবিহীন তৎপরতা দেখা যায়নি।যেমনটা দেখা যাচ্ছে মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে।অনেকের মতে, পদ্মশিবির কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না।তাই গেরুয়া শিবিরের এমন তৎপরতা। একই দিনে দুই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
আগামী ২০ নভেম্বর একদফায় মহারাষ্ট্রে ২৮৮টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হবে।অন্যদিকে,৮২ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ভোটগ্রহণ করা হবে দুই দফায়, ১৩ এবং ২০ নভেম্বর। ২৩ নভেম্বর একসাথে দুই রাজ্যের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা করা হবে। মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপির সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় বিজেপি। ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চার জোট সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে চায় বিজেপি।
কিন্তু ছ’মাস আগে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে এনডিএ জোটের ফলাফল পদ্ম শিবিরের প্রত্যাশা পূরণ করেনি।মোদ্দাকথা,দুই রাজ্যেই এনডিএ জোটকে ধাক্কা খেতে হয়েছে।মহারাষ্ট্রে লোকসভার ৪৮টি আসনের মধ্যে বিরোধী জোটের ঝুলিতে গিয়েছিল ৩০টি আসন।কংগ্রেস পেয়েছিল ১৩টি,উদ্ধব সেনা ৯টি এবং শারদপন্থী এনসিপি ৮টি। এরমধ্যে একজন জয়ী নির্দল প্রার্থীও পরে কংগ্রেস শিবিরে ভিড়ে গিয়েছেন।অন্যদিকে, বিজেপি ৯টি এবং তার দুই শরিক শিবসেনা (শিন্ডে) এবং অজিত গোষ্ঠী এনসিপি জিতেছে ৭টি আর ১টি আসনে।ঝাড়খণ্ডের ছবিটাও ঠিক একই রকম। লোকসভার ১৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি জয়ী হয়েছে ৮টি আসনে। অথচ ২০১৯ লোকসভায় বিজেপির ঝুলিতে ছিল ১২টি আসন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি,ছ’মাস আগে অনুষ্ঠিত লোকসভা ভোটের ফলই পদ্মশিবিরকে চিন্তায় ফেলেছে।এজন্যই মহারাষ্ট্রে ও ঝাড়খণ্ডে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছে পদ্ম শিবির। অনেকের মতে, ঝাড়খণ্ড নিয়ে বিজেপি খুবই আশাবাদী,চিন্তা মহারাষ্ট্র নিয়ে।যদিও বিজেপি শিবিরের দাবি, মহারাষ্ট্রেও ধাক্কা কাটিয়ে উঠে এবার নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে তারা। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, দাবি করলেই যে বাস্তবে তা পূরণ হবে এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। এমন হলে লোকসভায় ২৪০ আসনে থেমে যেতে হতো না। তাই অনুমানের উপর ভরসা না করে, ভোট গণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করাটাই বাস্তবসম্মত বলে মনে করি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.