কোর্টের রায় মানছে না সরকার আন্দোলনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা!!

 কোর্টের রায় মানছে না সরকার আন্দোলনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-শিক্ষক-কর্মচারী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট- কোনও কোর্টের রায়ই মানছে না রাজ্যের বিজেপি সরকার। উল্টো শিক্ষক- কর্মচারীদের কীভাবে বঞ্চিত করে রাখা যায় তার ফন্দিফিকির বের করতেই ব্যস্ত থাকছে সরকার।অথচ ২০১৮ সালে বিজেপির ভিশন ডকুমেন্টে লিখিত প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা ছিল বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে কোনও অনিয়মিত, চুক্তিবদ্ধ, ক্যাজুয়েল, ডিআরডব্লিউ,স্থির বেতনের কর্মচারী থাকবে না।সকল শ্রেণীর অনিয়মিত কর্মচারীকে নিয়মিত করা হবেবাস্তবে দেখা গেল রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গত সাত বছর ধরে কোনও অনিয়মিত কর্মচারীকে নিয়মিত করা হয়নি।উল্টো বামফ্রন্ট আমলের চালু থাকা দশ বছর অনিয়মিত পদে চাকরি করার পর স্বাভাবিকভাবে নিয়মিত হওয়ার প্রক্রিয়াও বন্ধ করে দেয় বিজেপি সরকার।এতে হাজার হাজার অনিয়মিত কর্মছারীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। বিজেপি সরকারের এ ধরনের কর্মচারী স্বার্থবিরোধী ভূমিকায় সারা জীবন অনিয়মিত পদে চাকরি শূন্য হাতে অবসরে যাচ্ছেন কর্মচারীরা।তাছাড়া বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে বছর
বছর বেতনভাতা বৃদ্ধির যে প্রক্রিয়া চালু ছিল,বিজেপি ক্ষমতায় এসে কার্যত তাও বন্ধ করে দেয়।সব দিক দিয়েই বিজেপি সরকার রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের বঞ্চনা করে চলছে।শুধু অনিয়মিত শিক্ষক কর্মচারীই নয়,নিয়মিত শিক্ষক-কর্মচারীদেরও বিজেপির ভিশন ডকুমেন্টের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরাসরি সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকরী না করে চরমভাবে প্রঞ্চনা করেছে সরকার। এমনকী উচ্চ আদালতের দুবার রায় সত্ত্বেও বিজেপি। সরকার সর্বশিক্ষার শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত করেনি।উল্টো নিয়মিত না করে সর্বশিক্ষার শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে আমলাদের কুপরামর্শে রাজ্য সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবার জন্য ফন্দিফিকির খুঁজতে শুরু করেছে।অপরদিকে বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পারদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ও কার্যকরী করছে না বিজেপি সরকার। ফলে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পাররা।শুক্রবার আগরতলার রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে হাজার হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পাররা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করা সহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীতে মিছিল করে। মিছিলশেষে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসকের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে গণডেপুটেশন প্রদান করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পাররা।গণডেপুটেশন প্রদানের পর অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পারদের পক্ষে মজদুর মনিটরিং সেলের ত্রিপুরা প্রদেশের সভাপতি বিপ্লব কর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, তাদের আশা দুর্গা পুজোর আগেই বিজেপি সরকার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পারদের আর্থিক বঞ্চনা দূর করবে এবং হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করবে। সরকার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পারদের স্বার্থের বিষয়ে ইতিবাচক কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে তারা বাধ্য হবেন। বিপ্লব কর জানান, কোর্টের রায় অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতনভাতা ২১ হাজার টাকা এবং হেল্পারদের ১৬ হাজার টাকা করা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পেনশন ৫ হাজার টাকা ও হেল্পারদের পেনশন ৩ হাজার টাকা করা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের গ্র্যাচুইটি তিন লক্ষ টাকা ও হেল্পারদের গ্র্যাচুইটি দেড় লক্ষ টাকা করা, তিন মাসের মেডিকেল লিভ চালু করা, নিয়মিত ডিএ প্রদান, সিনিয়রিটি লিস্ট অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সুপারভাইজর পদে পদোন্নতি প্রদান করা ইত্যাদি।শ্রীকর জানান, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ত্রিপুরার বিজেপি সরকার কোর্টের রায় মতো উক্ত সুযোগসুবিধা না দিলেও পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামের বিজেপি সরকার ইতিমধ্যেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের গ্র্যাচুইটি হিসেবে চার লক্ষ টাকা ও হেল্পারদের দুই লক্ষ টাকা প্রদান করছে।এদিকে কর্মচারী বঞ্চনা নিয়ে একের পর এক দপ্তরের কর্মচারীরা রাজপথে নেমে আন্দোলন শুরু করায় শিক্ষক-কর্মচারী ইস্যুতে সম্পূর্ণ ব্যাকফুটে চলে গেছে বিজেপি সরকার। লাগামহীন বঞ্চনার কারণে শিক্ষক- কর্মচারীরা বিজেপি সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।কিছুদিন আগে নিয়মিতকরণ সহ আর্থিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে স্বাস্থ্য দপ্তরের অনিয়মিত কর্মচারীরা।ভিশন ডকুমেন্ট কার্যকরী না করে সাত বছর ধরে চলা বঞ্চনার জন্য সকল শ্রেণীর অনিয়মিত কর্মচারীরা বিজেপি সরকারের লাগামহীন বঞ্চনার প্রতিবাদে যৌথভাবে আন্দোলনে যাবার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। দুর্গা পুজোর পর যৌথ বৈঠকে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি গৃহীত হবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.