ক্যান্সার হাসপাতালে অচলাবস্থা তুমুল হট্টগোলে উত্তপ্ত বিধানসভা।

 ক্যান্সার হাসপাতালে অচলাবস্থা তুমুল হট্টগোলে উত্তপ্ত বিধানসভা।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতালে অচলাবস্থা নিয়ে শাসক বিরোধী শিবিরের হট্টগোলে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রেফারেন্স পিরিয়ডে সিপিআইএম বিধায়ক দীপঙ্কর সেন এবং বিধায়ক নির্মল বিশ্বাসের আনীত ক্যান্সার হাসপাতালে অভূতপূর্ব অচলাবস্থা- এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মুখ্যমন্ত্রী,তথা স্বাস্থ্য দপ্তরের মন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এর জবাব দেন। সিপিআইএমের দুই বিধায়ক ক্যান্সার হাসপাতালের পরিষেবার দুর্বলতার দিকগুলি মেলে ধরেন। এ নিয়ে শাসক এবং বিরোধী পক্ষ তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে। পরিষেবার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সিপিএম পরিষদীয় দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী সহ বাম বিধায়কগণ ক্যান্সার হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তীকে সমিতি থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দায়ী করেন। সম্মিলিতভাবে ট্রেজারি বেঞ্চ তার কড়া জবাব দেয়। ক্যান্সার হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিধায়ক রতন চক্রবর্তীও জুতসই উত্তর দেন বাম বিধায়কদের। তাতে যোগ দেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ এবং সুশান্ত চৌধুরী। তারা অভিযোগের পাল্টায় বাম আমলের আদা কেলেঙ্কারি এবং ২০০২ সালে ক্যান্সার হাসপাতালের ১২ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ মেলে ধরে বিরোধী পক্ষকে চেপে ধরেন। এদিন এর মধ্যেই রেফারেন্স পিরিয়ডে ক্যান্সার হাসপাতালের পরিষেবার সার্বিক চিত্র মেলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তিনি জানান, ক্যান্সার,চিকিৎসায় ব্যবহৃত অত্যাধুনিক মেশিনগুলি হল LINAC ACCE- LARATOR, PET-CT SCAN, CT-Simulator, Brachy Therapy সহ আরও অনেক। এই সমস্ত মেশিনগুলি যেমন True Beam, Unique সবটাই সচল এবং রোগীরা এই মেশিনগুলি থেকে প্রতিদিন পরিষেবা পেয়ে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় ১৬০-১৬৫ জন ক্যান্সার রোগী এই পরিষেবা নিয়ে থাকেন। এই হাসপাতালে কেমোথেরাপি ওষুধ যথেষ্ট পরিমাণে মজুত রয়েছে। অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওনাল ক্যান্সার সেন্টারে প্রতিদিন প্রায় ৭০-৮০ জন রোগী কেমোথেরাপি নিয়ে থাকে। এপিএল, বিপিএল সবাই বিনামূল্যে এই পরিষেবা পেয়ে থাকেন৷ এছাড়াও ABPMJAY (Ayushman Bharat Pradhan Mantri Jan Arogya Yo- jana) RAN (Rashtriya আরগ্যা Nidhi) প্রকল্পগুলি থেকে রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ছোট ছোট মেশিন Bronchoscopy, Colonoscopy এর মতো মেশিন দিয়ে FNAC & Biopsy করা হয়। এইসব ছোট ছোট যন্ত্রগুলি রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে। FNAC ও Biospy জাতীয় ছোট ছোট টেস্টগুলি অন্য মেশিন দিয়ে করা যায় যেমন CT-Guided FNAC / Biopsy, USG Guided FNAC/Biopsy এই সুবিধাগুলি ABV RCC দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, FNAC বা Biopsy করতে গিয়ে একটা মেশিন বিকল হলে একই টেস্ট অন্য মেশিন দিয়েও করা যায়। Bronchoscope মেশিনে সম্ভব হল না তখন CT/USG মেশিন দিয়ে একই টেস্ট করা যায়। তাই এই সমস্ত টেস্ট নিয়ে রোগীদের কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় না। মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা জানান, রাজ্যের একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতালে অত্যাধুনিক মেশিনের মাধ্যমে রোগীদের পরিষেবা দিয়ে থাকে, তাই পাশের রাজ্যগুলি ও প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের রোগীরাও পরিষেবা নিতে এই হাসপাতালে আসে। রোগীর সংখ্যা বেশি তাই পরিষেবা দিতে একটু বিলম্ব হতে পারে বলেও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, ক্যান্সার হাসপাতালে কোলন ক্যান্সার, গলব্লাডার ক্যান্সার, গাইনি ক্যান্সার, হেড এন নেক ক্যান্সারের মতো বড় সার্জারি হয়ে থাকে। কোবাল্ট দুটি মেশিনের মধ্যে একটি মেশিন ডি কমিশন হয়ে গেছে এবং একটি সচল অবস্থায় আছে।এই মেশিনটি দিয়ে দুই বেলা রোগীর পরিষেবা দেওয়া হয়। এতে ডি কমিশনের জায়গা পূরণ হয়ে যায়। তাতে রোগীর ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হয় না। এই হাসপাতালে বোন স্ক্যানের জন্য ব্যবহৃত Source বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। যদি আমদানিতে কিছুটা বিলম্ব হয় তাহলে পরিষেবা দিতেও কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে কর্তৃপক্ষ এই সমস্যাগুলি নিরসনের জন্য আগাম ব্যবস্থা নেয়। ABV-RCC জরুরিভিত্তিক বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার জন্য আলাদা বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আছে। তিনি বলেন, ফ্যাজ চেঞ্জ করতে কিছুটা সময় লাগে। তাতে আংশিক সময় পরিষেবা বিঘ্নিত হয় তাও শুধুমাত্র ওয়ার্ড আইসিইউর মতো জরুরি বিভাগগুলিতে ২৪ ঘন্টা পরিষেবা চালু থাকে বলে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানান।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.