ক্রিকেট ও রাজনীতি!!

 ক্রিকেট ও রাজনীতি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-এই উপমহাদেশে ক্রিকেট ও রাজনীতি,অথবা রাজনীতি ও ক্রিকেট,একে অপরের পরিপূরক।একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটাকে ভাবা যায় না। শুধু ক্রিকেট কেন?এই উপমহাদেশে যে কোনও খেলার সাথে রাজনীতি এবং রাজনীতির সাথে খেলাধুলা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। এটা নতুন কিছু নয়।বরং এই উপমহাদেশের ডিএনএ বলা যায়। তাই খেলাধুলা নিয়ে রাজনীতি বা রাজনীতি নিয়ে খেলাধুলা হবে না?এটা ভাবাটাই মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়।বরং এই উপমহাদেশে এইসব না হলে,অস্বাভাবিক বলে মনে হবে।এইতো গত মাস ছয়েক আগেও,দেশের বর্তমান সরকারের একজন প্রথম সারির জনপ্রিয় নেতা এবং অত্যন্ত অভিজ্ঞ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহারাষ্ট্রে একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘রাজনীতি, অনেকটা ক্রিকেট খেলার মতো, যখন তখন যা কিছু হতে পারে।ক্রিকেটের মতো রাজনীতিও অপ্রত্যাশিত বিষয়।ক্রিকেটের মতোই রাজনীতিতেও কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না।’ তার এই বক্তব্য কতটা বাস্তব এবং যুক্তিসঙ্গত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।সদ্য শেষ হয়েছে ক্রিকেটের বিশ্বকাপ।যার উত্তাপ এখনও কমেনি। আর এই উত্তাপ ঘিরে রাজনীতি হবে,এটাই তো স্বাভাবিক।বিশ্বকাপের মঞ্চে টানা দশ ম্যাচ অপরাজিত থেকে শেষ পর্যন্ত ফাইনালে থেমেছিল ভারতীয় দলের দৌড়।গোটা প্রতিযোগিতায় অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েও ফাইনালেই হারতে হয়েছে রোহিত বাহিনীকে অর্থাৎ ভারতীয় টিমকে। বিশ্বকাপে ভারতের এই অপ্রত্যাশিত হারের ফলে অনেকেই রাজনৈতিক গন্ধ পেতে শুরু করেছেন।যা ভারত সহ গোটা উপমহাদেশের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।কেন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল ম্যাচ আমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে করা হলো?কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরাজয়ের পর বিধ্বস্ত ভারতীয় দলের প্লেয়ার রোহিত-বিরাট-সামিদের সান্ত্বনা দিতে তাদের ড্রেসিং রুমে গিয়েছিলেন?এই বিশ্বকাপে সেরা বোলার মহম্মদ সামিকে বুকে জড়িয়ে তার পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন ?কেন ভারতীয় দলের প্লেয়ারদের ট্রেনিং জার্সির রং গেরুয়া করা হলো?ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে এখন দেশের জাতীয় রাজনীতি আলোড়িত হচ্ছে। যে সব রাজনৈতিক দল এবং দলের নেতা-নেত্রীরা এই সব প্রশ্ন তুলে রাজনৈতিক হাওয়া গরম করছেন,তাদের বিরুদ্ধেও পাল্টা জবাব দেওয়া হচ্ছে।এমন নয় যে, সমালোচনার জবাব দেওয়া বন্ধ।সমান তালে জবাব দেওয়ার পাল্টা রাজনীতিও চলছে।আগামীদিনেও চলবে। কেন না, ভারত জয়ী হলে এরাই আবার অন্য কথা বলতো।এটাই ভারতীয় রাজনীতির মূল বৈশিষ্ট। তাছাড়া ক্রিকেট মাঠ থেকে রাজনীতির ময়দান কাঁপানো খেলোয়াড়ের সংখ্যাও কম কিসে?যুগে যুগে এই পরম্পরা লক্ষ্য করা যাচ্ছে গোটা উপমহাদেশে।ফলে ‘ক্রিকেট ও রাজনীতি’ একে অপরের পরিপূরক বললে, একেবারে ভুল বলা হবে না।তথ্য বলছে ক্রিকেট থেকে রাজনীতির ময়দানে নামা প্রথম ভারতীয় হচ্ছেন বাবাজি পালওয়াঙ্কর বালু।এরপর মনসুর আলি খান পতৌদি, কীর্তি আজাদ, চেতন চৌহান,মহঃ আজাহার উদ্দিন, বিনোদ কাম্বলী, শ্রীশান্ত, নবজিৎ সিং সিধু, গৌতম গম্ভীর, শচীন তেণ্ডুলকর, মহম্মদ কাইফ, প্রয়াত মাধব রাও সিন্ধিয়া। তালিকাটা বেশ লম্বা। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানে ইমরান খান, ওয়াহাম রিয়াজ।শ্রীলঙ্কার অর্জুনা রাণাতুঙ্গা সনাৎ জয়সুরিয়া, বাংলাদেশের মাশরাফি বিন মোর্তজা, নাইসুর রহমান দুর্জয়।এমন আরও অনেকেই আছে।ফলে এই উপমহাদেশে ক্রিকেট যেমন জনপ্রিয়, তেমনি রাজনীতিও।ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ দুর্দান্ত খেলা সত্ত্বেও,ভারতকে ফাইনাল খেলায় হারতে হয়েছে।প্রতিটি ভারতীয়ের কাছে এই পরাজয় যেমন দুঃখের, বেদনার, তেমনি এই দুঃখের সময়ে ভারতীয় ক্রিকেট টিমের সাথে থাকা দেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মনে করি।তাই প্রধানমন্ত্রী যেটা করেছেন, সেটা একজন দেশনায়কের এবং একশ চল্লিশ কোটি ভারতবাসীর অভিভাবক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মনে করি।আর ‘রাজনীতি’ ছিলো-আছে থাকবে।এই নিয়েই চলতে হবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.