খুব শীঘ্রই রাজ্যে চালু হতে পারে ভেটেরিনারি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি!
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেখেছি, ভারতবর্ষে জিডিপি কন্ট্রিবিউশান এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজবুত করার ক্ষেত্রে কৃষি দপ্তর ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পাশাপাশি এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো, আমাদের সমস্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামীদিনে যেসমস্ত চাহিদা ও প্রয়োজন রয়েছে সেগুলোকে কতটা পূরণ করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা। শনিবার ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি দিবস উপলক্ষে ত্রিপুরা ভেটেরিনারি কাউন্সিলের উদ্যোগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথাগুলি বললেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস।
এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত দপ্তরের অধীন সমস্ত পশু চিকিৎসক এবং আধিকারিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি অনুরোধ করেন, দপ্তরের স্বার্থে যেন সকলেই বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এবং তিনি এটাও স্পষ্ট করে দেন, পরিকল্পনা যেন শুধুমাত্র ভাষণেই সীমাবদ্ধ না থাকে। পরিকল্পনাগুলোকে বাস্তবায়নে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান মন্ত্রী শ্রী দাস। তিনি আরও বলেন, বৈচিত্র্যময় এই ত্রিপুরায় অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের মানুষের আর্থিক ও খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, রাজ্যে যে পরিমাণ মাংস-ডিম-দুধ ইত্যাদির চাহিদা রয়েছে, সে অনুযায়ী উৎপাদন নেই। ফলে খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে অন্য রাজ্যগুলির ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। এ বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করে যদি এই সমস্যা সমাধান করা যায় তবে খাদ্যের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রাজ্যে বেকারদেরও কর্মসংস্থানের সূযোগ করে দেওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস।
সেক্ষেত্রে দপ্তরের সমস্ত আধিকারিকদের সদর্থক ভূমিকা গ্রহণের আহবান জানান তিনি। এছাড়াও তিনি যতদিন এই দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন ততদিন দপ্তরের স্বার্থে সততার সঙ্গে কাজ করে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে।
তিনি এদিন জানান, নিজের দপ্তর সংক্রান্ত কাজে গত তিন দিন আগে দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নিজের দপ্তর সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের সঙ্গে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, রাজ্যের ভেটেরিনারি ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে রাজ্যে ভেটেরিনারি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি স্থাপনের বিষয় টি। তিনি এই ব্যাপারে লিখিত আবেদন জানান। এবিষয়ে ভেটেরিনারি কাউন্সিল অভ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ড: উমেশ শর্মাও এই আবেদনে সন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, খুব শীঘ্রই ত্রিপুরায় স্থাপন হতে চলেছে ভেটেরিনারি সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি। এবং এই ইউনিভার্সিটি স্থাপনের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবে বলেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী শ্রী দাস। এছাড়াও তিনি জানান, আগামী মে মাসের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহে ভেটেরিনারি কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মিলত হবেন।
সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে কবে নাগাদ রাজ্যে এই ইউনিভার্সিটির শিলান্যাস হবে। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড: মানিক সাহা-র এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার যে লক্ষ্য রয়েছে, তার জন্য শুধু ভাষনে কিংবা কাগজে কলমে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা বললেই চলবে না। এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়তে হলে সমস্ত ক্ষেত্রে সমস্ত দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে প্রয়াস নিতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় কিছু সংখ্যক সরকারি কর্মচারী শুধুমাত্র নিজের মর্জিমাফিক কাজ করার মানসিকতা আর কিভাবে আন্দোলন করে নিজের সুবিধা বাড়ানো যায় সেই চিন্তাধারা পোষণ করে রাখে। এধরনের মানসিকতা কিংবা চিন্তাভাবনা থাকলে কোনোভাবেই ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এমন অনেক ছোট ছোট দেশ বা রাজ্য আছে যেগুলো আর্থিক ও সামাজিক দিক দিয়ে উন্নত। ভারতবর্ষ এখনও সেভাবে উন্নত হতে পারেনি। তার কারণ, এখানে কোথাও না কোথাও সততার অভাব রয়ে গেছে। তাই সকলকে সততার সঙ্গে কাজ করার আহবান জানান মন্ত্রী সুধাংশু দাস।