খুমুলুঙের বার্তা!!

 খুমুলুঙের বার্তা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

সারা দেশের সাথে উত্তর-পূর্বের সীমান্তবর্তী রাজ্য ত্রিপুরার দুটি লোকসভা (পূর্ব ও পশ্চিম)আসনে ভোট হবে যথাক্রমে ১৯ এবং ২৬ এপ্রিল।সেই ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যেও প্রচার চলছে জোর কদমে।এই ক’দিন আগেও রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ,মেরুকরণ, পরিস্থিতি যা-ই বলি না কেন, সেটা ছিলো অন্যরকম।গত একমাসের মধ্যে সেই পরিস্থিতি পুরোপুরি পাল্টে গেছে।এই পরিবর্তনের মূলে রয়েছে মাত্র আড়াই বছর আগে জন্ম হওয়া একটি জনজাতিভিত্তিক আঞ্চলিক দল, যার নাম তিপ্রামথা।

আর এই দলের জন্মদাতা হচ্ছেন ত্রিপুরার রাজ পরিবারের উত্তরসূরি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ।তিনি এবং তাঁর দলই রাজ্য রাজনীতির গতিমুখকে পাল্টে দিয়েছেন। দিল্লীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে চুক্তি এবং সেই চুক্তি মোতাবেক প্রধান বিরোধী দল থেকে সরাসরি শাসকদল বিজেপিতে যুক্ত হয়ে সরকারের শরিক হতেই রাজ্য রাজনীতির গতিমুখ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায়।রাজনীতির হাঁড়ির খবর যারা রাখেন তারা খুব ভালো করেই জানেন,এই পরিবর্তনটা কীভাবে হয়েছে। ফলে এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার মতো আছে বলে মনে করি না।
কিন্তু যেটা বলতেই হবে সেটা হচ্ছে রাজনীতির এই পরিবর্তনে সব থেকে লাভবান হয়েছে কে বা কারা? উত্তরটাও বোধহয় সকলের জানা।সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছে বিজেপি দল। আর রাজনৈতিক ভাবে সবথেকে বেশি বেকায়দায় পড়েছে কে?বা কারা?এই প্রশ্নের জবাবও সকলের জানা।অবশ্যই সিপিএম এবং কংগ্রেস।শাসক দল বিজেপিকে কোণঠাসা করতে, বিজেপিকে পরাজিত করতে এই ক’দিন আগেও যারা (সিপিএম-কংগ্রেস) প্রদ্যোত কিশোরকে তাঁদের পাশে পাওয়ার জন্য রাতদিন এক করে মালা জপে গেছেন। প্রদ্যোত কিশোরের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে গেছেন, তাঁরা আজ প্রকৃত অর্থেই হতাশ। তাদের কাছে পুরো বিষয়টি এখন ‘আঙুর ফল টক’- এর মতো।ফলে যেটা হওয়ার সেটাই হচ্ছে। সিপিএম- কংগ্রেস একজোট হয়ে এখন আক্রমণের নিশানা করেছে প্রদ্যোত কিশোরকে। উল্টোদিকে প্রদ্যোত কিশোরও এখন সিপিএম কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই নিয়ম করে রীতিমতো কামান দাগিয়ে চলেছেন। রাজনীতির ময়দানে এটাই স্বাভাবিক। আমিই বা আমরাই ভালো, অন্যরা সব খারাপ। তবে ভালো মন্দ বিচার করেন সাধারণ মানুষ।

সেই দিক থেকে বিচার করলে রাজনীতির এই খেলায় খেলতে নেমে সিপিএম এবং কংগ্রেসকে কয়েক গোল দিয়ে দিয়েছেন প্রদ্যোত কিশোর। কেননা, এমনটা যে হবে সেটা তো আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল।প্রদ্যোত কিশোর যে বুদ্ধিমান রাজনৈতিক নেতা, সেটা বোধহয় বুঝতে অনেকটা বিলম্ব হয়ে গেছে বাম কংগ্রেস নেতৃত্বের।কোন্ যুক্তিতে প্রদ্যোত বাম-কংগ্রেসের সাথে হাত মেলাতেন?বাম-কংগ্রেসের সাথে হাত মেলালে প্রদ্যোত কিশোর এবং তাঁর দলের কী লাভ হতো?যে দাবি নিয়ে প্রদ্যোত আন্দোলন শুরু করে রাজ্য রাজনীতির অন্যতম প্রধান শক্তি হিসাবে উঠে এসেছেন, সেই দাবি গুলির মধ্যে অন্তত একটি দাবিও কি পূরণ হতো বাম কংগ্রেসের সাথে হাত মেলালে?উত্তর একটাই- ‘না’।তাছাড়া শাসক দল বিজেপিও কি প্রদ্যোত কিশোরকে এত সহজে ছেড়ে দিতো?ছেড়ে যে দেয়নি সেটা তো এখন সকলের সামনে জলের মতো পরিষ্কার। কেন প্রদ্যোত কিশোর এবং তিপ্রা মথা বিজেপির সাথে গেছে? তা আগেই খোলসা করেছেন প্রদ্যোত কিশোর। সোমবার খুমুলুঙে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে আরও একবার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর এই বক্তব্য তিপ্রাসারা কতটা বিশ্বাস করতে পারছেন,তার প্রতি কতটা আস্থা রাখবেন? সেটা জানা যাবে আগামী ৪ জুন ভোট গণনার পর।

এর আগে সোমবার খুমুলুঙে আয়োজিত সমাবেশ থেকে যে বার্তা পাওয়া গেল, তাতে সিপিএম কংগ্রেসের চিন্তা আরও বাড়লো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.