খেজুরের রস আজও প্রাসঙ্গিক!
খেজুরের রসের প্রাসঙ্গিকতা আজও গ্রামীণ জীবনে হারিয়ে যায়নি। শীতকালে প্রকৃতির এ দান খাদ্য রসিকদের কাছে অনন্য। শীত পড়তেই সাব্রুমের বিভিন্ন গ্রামে খেজুরের রস সংগ্রহ অনেকের কাছে পেশা হিসাবে গণ্য হয়।শীত মানে খেজুরের রস।শীত মানে পুলি পিঠা।শীত মানে খেজুরের গুড়।শীতের মরশুমে খেজুরের রসের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। আজ থেকে চার দশকের স্মৃতি, স্মৃতির সারণিতে গিজগিজ করছে।শীতের এই ভরা মরশুমে সকালে এক গ্লাস খেজুরের রস খেতে মুখিয়ে থাকতাম।সকাল হলে গাছ থেকে সংগৃহীত খেজুরের রস বিক্রি করতো টিনের ভার নিয়ে শহরের বিভিন্ন জনপদ রস বিক্রেতারা। সন্ধ্যায় গাছে কলস বেঁধে আসতেন।খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা একটি সুনিপুণ কাজ।সবার পক্ষে এটা করা সম্ভব হয় না। সুনিপুণভাবে, সুকৌশলে চিকন বাঁশ দিয়ে গাছের সঙ্গে অনেকটা ডগার মতো করে পুঁতে দেওয়া হয়।সারা রাত চুয়ে চুইয়ে রস পড়ে।শীত যত জাঁকিয়ে বসে রস তত বেশি পরিমাণে সংগৃহীত হয়।মরশুমের এই মহার্ঘ জিনিসটির দিকে মুখিয়ে থাকে অনেকে।খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হয় পরি সুস্বাদ রাব।পুলি পিঠের সাথে রাবের বিধা সংযোগ সর্বজনবিদিত। গ্রাম ত্রিপুরার বহু লোক এই মরশুমে খেজুরের রস, খেজুরের গুড় ও খেজুর রাব বিক্রি প্রতি করে আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হয়।খেজুরের রাবের চাহিদা এ সময় তুঙ্গে থাকে। চাহিদার সাথে যোগান আকাশ পাতাল তফাৎ। তাই খেজুরের রাবের দাম বরাবরই ঊর্ধ্বমুখী। তবুও সাধ্যের মধ্যে থেকে সবাই কমবেশি বাজার থেকে ক্রয় করে।তবে অনেকে ঠকেও যায়।কেননা, নির্ভেজাল রাব সব সময় মেলে না।অনেকেই বাড়তি লাভের চিন্তায় মিশ্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করে। পৌষ সংক্রান্তিতে গ্রামীণ বাজারগুলোতে খেজুরের গুড় ও রাবের রমরমা থাকে। ক্রেতারা হুমড়ি বিভি খেয়ে পড়ে।এই প্রতিবেদক দৌলবাড়ি দুই গ্রামে গিয়েছিল। প্রত্যক্ষ করেছে বহু বাড়িতে খেজুর গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করার তৎপরতা চলছে।বিশেষ করে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার আগে গাছ থেকে খেজুর সংগ্রহ করার জন্য মাটির পাত্র বেঁধে রাখা হয়। রাত শেষে ভোরে তা সংগ্রহ করা হয়।শীতের মরশুমে এটাই পরিচিত দৃশ্য গ্রামগুলোতে।