গণতন্ত্রে লজ্জাজনক!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

পূর্বোত্তর নিয়ে বড়াই কেন্দ্রের শাসক বিজেপির।কিন্তু গত এক বছর ধরে মণিপুর অশান্ত।সেই পূর্বোত্তরের এক রাজ্যের এক বৃহৎ অংশে লোকসভার প্রথম দফার ভোটে ভোট দেয়নি জনতা। নাগাল্যাণ্ডের এক তৃতীয়াংশ বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা শুক্রবার লোকসভা ভোটে অংশ নেয়নি।ভারতের মতো বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের পক্ষে তা অত্যন্ত উদ্বেগের এবং একই সাথে লজ্জারও।দেশে যখন গণতন্ত্রের উৎসব চলছে, গোটা বিশ্ব তাকিয়ে দেখছে কীভাবে ১৪০ কোটির দেশে ভোট হয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে।সেই সময় পূর্বোত্তরের এক চিলতে রাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ রাজ্যবাসী (পড়ুন ভোটার) সে অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ভোট বয়কট করেছে। কেন্দ্র তাদের দাবি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে।এজন্য রাজ্যের কুড়িটি আসনের ভোটাররা ভোট বয়কট করেছেন শুক্রবার।

নাগাল্যাণ্ডের ছয়টি জেলার ভোটাররা শুক্রবার লোকসভার একটি আসনের জন্য ভোট দেয়নি। মূলত ইস্টার্ন নাগা পিপলস অর্গানাইজেশন তাদের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে।গত ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে ইস্টার্ন নাগা পিপলস অর্গানাইজেশন কেন্দ্রের কাছে দাবি জানায় যে, ছয়টি জেলা মিলিয়ে ফ্রন্টিয়ার নাগাল্যাণ্ড টেরিটরি গঠন চায়।এজন্য পৃথক বিধানসভা, পৃথক আর্থিক ক্ষমতা ইত্যাদি চায় তারা।তারা এও দাবি জানায় যে, কেন্দ্র তাদের দাবি না মানলে রাজ্য এবং লোকসভা ভোট বয়কট করবে তারা। এরই মধ্যে গত বছর বিধানসভা ভোটের মুখে কেন্দ্র তাদের সাথে কথা বলে বিষয়টির নিষ্পত্তি করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
কিন্তু লোকসভা ভোটের মুখে ফের এই ইস্যু মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এবারের লোকসভা ভোট বয়কটের ডাক দেয় ইএনপিও।এর পরিপ্রেক্ষিতে গত আঠারো এপ্রিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক ইএনপিওকে শোকজ করে। এরই মধ্যে নাগাল্যাণ্ডের ছয় জেলার ভোটাররা ভোট বয়কট করে। উল্লেখ্য, নাগাল্যাণ্ডে লোকসভার আসন একটি। এই ভোটে ক্ষমতাসীন এনডিপিপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন চুমবেন সারি, কংগ্রেসের সুপংথেরেন জামির এবং নির্দল হিসাবে রয়েছেন এইচ টংগিলথা।
গত ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নাগাল্যাণ্ডের একমাত্র আসনে ভোটের হার দাঁড়িয়েছিল ৮৩.০৮%। যে ছয় জেলার ভোটাররা ভোট বয়কট করেছেন শুক্রবার এই জেলাগুলি হলো কিফিরে, লংপ্লেলং, মন, নকলাক, শামাধর, টুংসেং।যদিও ভোট বয়কটের সপক্ষে ইএনপিওর বক্তব্য হলো, মানুষ স্বত:স্ফূর্তভাবে ভোট বয়কট করেছে।এতে তাদের কোনও কিছু করার ছিল না।
প্রশ্ন হলো, স্বাধীন দেশের একপ্রান্তে এক বিশাল অংশের মানুষ তাদের কিছু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভোট বয়কট করলো- এই বার্তা কী গণতন্ত্রের পক্ষে স্বস্তির? কেন্দ্র আগে থেকে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ফের আলোচনা চালাতে পারতো কিংবা সময় চাইতে পারতো ফের।কিন্তু তা হলো না। পূর্বোত্তর প্রসঙ্গে কেন্দ্র বড়াই করে বলে যে, পূর্বোত্তরে এখন উন্নয়নযজ্ঞ চলছে এবং সেই যজ্ঞ শুরু হয়েছে মোদি যুগ থেকে। তাহলে কেন পূর্বোত্তরের এক চিলতে রাজ্যের এক- তৃতীয়াংশ অংশের মানুষ গণতন্ত্রকে মেনে নিতে পারছে না। ভোট বয়কট মানেই গণতন্ত্রে তাদের আস্থা নেই। নাগাল্যাণ্ডের কুড়িটি বিধানসভা আসনের ভোটারদের গণতন্ত্রে আস্থা ফেরাতে রাজ্য বা কেন্দ্র কী ভূমিকা নেয় তাই এখন দেখার।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

গয়নার ল্যাবে তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম রুবি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলায় চুনি, ইংরেজিতে রুবি।চুনির রং কতটা টকটকে লাল, তার উপর এই মানিকের দাম…

2 hours ago

মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে পুলিশ প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদারজুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো।…

2 hours ago

কাজের বাজারে মন্দা!!

কেন্দ্রে ১০০ দিন পূর্ণ করল তৃতীয় মোদি সরকার।যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে মোদি সরকার আখ্যা…

3 hours ago

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

1 day ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

1 day ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago