আজকের দিনে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সব চেয়ে প্রথমে দরকার খাদ্য । যদিও বর্তমান পৃথিবীতে আর পাঁচটা জিনিসের মতো খাদ্য একটি পণ্য । কিন্তু খাদ্য যেন আর সব কিছুর মতোই ধনীর ধন হয়ে না উঠে সে কথা মাথায় রেখেই দেশে গণবন্টন ব্যবস্থা চালু হয়েছিল । যাতে করে সব মানুষের মুখে যথাসময়ে খাদ্য পৌঁছানো যায় । আজকে আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে গেছে । মাথাপিছু গড়ে যা খাদ্য আজ উৎপাদন হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক । বর্তমান সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী । যার ফলে বর্তমান সময়ে খাদ্যের আদান প্রদান ও জোগানো কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু সেটাই হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে সরকারের গণবন্টন ব্যবস্থা পরিচালনায় ত্রুটি এবং দুর্বলতা । সুষ্ঠু গণবন্টন ব্যবস্থার অভাবের কারণেই ন্যায্যমূল্যের দোকানে প্রায় প্রতি মাসেই প্রয়োজনীয় উপকরণ যথা সময়ে পাওয়া যায় না । অথচ ১৩০ কোটির এই দেশে কম করেও ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ কিংবা অপ্রত্যক্ষভাবে গণবন্টন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত । সুষ্ঠুভাবে এই পরিষেবা যাতে সর্বত্র পৌঁছানো যায় তাই ত্রি – স্তরীয় পঞ্চায়েত এবং পৌর সংস্থাগুলোর সঙ্গেও এই ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীভূত করা হয়েছে । এছাড়া জেলা পরিষদ , পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমেও গ্রামীণ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু গণবন্টন ব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে চালু রাখা যায় সেই কর্মসূচিও রয়েছে । কিন্তু সরকারী বন্টন ব্যবস্থায় কোনও ত্রুটি , কিংবা সুযোগ্য নেতৃত্ব ও পরিচালনগত অথবা প্রশাসনিক আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার অভাবে এই গুরুদায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা যাচ্ছে না । ফলে সাধারণ মানুষ এই অব্যবস্থার শিকার । খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর সব প্রত্যক্ষ পরিষেবা নাগরিকদের পৌঁছে দেয় ডিলারের মাধ্যমে । আর এই ডিলারদের ন্যায্যমূল্যের দোকান অর্থাৎ ফেয়ার প্রাইস শপে পণ্য পৌঁছায় এম আর ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে । কিন্তু প্রায় প্রতিমাসেই রেশন ভোক্তারা রেশনে গিয়ে প্রতিশ্রুতি মতো যথা সময়ে রেশন থেকে চিনি এবং ডাল পাচ্ছেন না । ভোক্তাদের অভিযোগ হল , চলতি মাসের একটা বড় সময় অতিক্রান্ত হলেও আগরতলা সহ কোন ন্যায্যমুল্যের দোকানেই ভোক্তাদের জন্য বরাদ্দ ডাল এবং চিনি আসেনি । সরকারী ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলোতে বিগত মাসেও ডাল দেওয়া হয়নি ভোক্তাদের । খাদ্য দপ্তর অনিয়মিতভাবে ডাল ও চিনি সরকারী ন্যায্যমূল্যের দোকানে সরবরাহ করায়ও ভোক্তাদের অসন্তোষ বাড়ছে । যদিও সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার লিটার প্রতি কেরোসিনের মূল্য ১৪ টাকা হ্রাস করেছে । কিন্তু তাতেও ৮৬ টাকা মূল্যে কেরোসিন ক্রয় গ্রামীণ মানুষের জন্য অবশ্যই বড়সড় ধাক্কা , কেন্দ্রীয় সরকার ভর্তুকিতে রেশনে মসুর ডাল সরবরাহের ব্যবস্থা করলেও পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের অনেক রাজ্যেই গণবন্টনে মুগ বা ছোলার ডালের ব্যবস্থা রয়েছে দরিদ্র মানুষের জন্য ৷ রাজ্য সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের অভাবে রাজ্যে সেটা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না । তাছাড়া সরকারী ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে যে সমস্ত পণ্য সরবরাহ হয় তার গুণমান নিয়েও প্রায়ই ভোক্তাদের মধ্যে অভিযোগ উঠেছে । রেশনে যে আটা এবং চিনি সরবরাহ হয় বিভিন্ন সময়েই তা নিম্নমানের হওয়া সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে গ্রামীণ ও দরিদ্র এলাকার মানুষকে তা সংগ্রহ করতে হয় । রয়েছে গণবন্টন ব্যবস্থায় সরকারী নজরদারির অভাব । বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে আঙুলের ছাপ দিয়ে রেশন তোলার ব্যবস্থা চালু থাকলেও দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ভোক্তারা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন । সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের রাজ্যে গণবন্টন ব্যবস্থায়
পরিকল্পনার যথেষ্ট অভাব রয়েছে । রয়েছে কিছু কিছু জায়গায় পদ্ধতি ও কল্পনার সঠিকভাবে রূপায়ণের ঘাটতি । এই গণবন্টন তথা জনসংভরণ ব্যবস্থাকে বিগত আমলে ২৫ বছর বামেরা যেভাবে উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখেছে , বর্তমানে বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকারও একই কায়দায় দুর্বল নেতৃত্বের হাতে এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ভোক্তাদের অসীম দুর্ভোগে ঠেলে দিয়েছে । যে কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগ এবং সদিচ্ছা রাজ্য প্রশাসন ও সরকারের অদক্ষতায় এই গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা থেকে রাজ্যবাসী বঞ্চিত হচ্ছেন । যদিও বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে প্রায় ৬৫ হাজার ভূতুড়ে রেশনকার্ড বাতিল করেছে । কিন্তু এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি ভূয়া কার্ড বাতিল করে সরকারের অর্থ সাশ্রয় করা সত্ত্বেও সেই অর্থ ন্যায্যমূল্যের দোকানে ভোজ্যতেল সহ অন্যসব নিত্যপণ্য বন্টনে উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি । স্বচ্ছতার সঙ্গে উপযুক্ত গুণমান বজায় রেখে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের যথাসময়ে জোগান ও সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখতে না পারলে গণবন্টন ব্যবস্থা শুধুই ভাষণ আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে কার্যকরী করা সম্ভব নয়- সেটা অন্তত এই সময়ের মধ্যে প্রশাসন ও সরকার উপলব্ধি করতে পেরেছে তেমনটাই প্রত্যাশা করছেন রাজ্যের সরকারী ন্যায্যমূল্যের ভোক্তারা । এটা সম্ভব হলেই সত্যিকার অর্থে গনবন্টনে রাজ্য নজির গড়তে সক্ষম হবে — সেটা দৃঢ়তার সাথে বলা যায়।
অনলাইন প্রতিনিধি :-বাংলায় চুনি, ইংরেজিতে রুবি।চুনির রং কতটা টকটকে লাল, তার উপর এই মানিকের দাম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদারজুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো।…
কেন্দ্রে ১০০ দিন পূর্ণ করল তৃতীয় মোদি সরকার।যদিও বর্তমান ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারকে মোদি সরকার আখ্যা…
নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…
অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…
হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…