গন্ধ যেন পচা মাংস, বিরল ফুল দেখতে ভিড় ক্যালিফোর্নিয়ায়
আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম ‘সুন্দর’, সুন্দর হল সে। কবিতায় লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। যে বস্তু সুরভিত, তার সৌরভ কেমন? না, ‘ফুলের মতো’। কিন্তু দুনিয়ার সমস্ত ফুলই যে সুরভিত নয়, বরং চরম দুর্গন্ধা ফুলও ফোটে এই ধরায়, তেমনই একটি ফুল ‘কর্পস ফ্লাউয়ার’। ইংরেজিতে ‘কর্পস’ মানে মৃতদেহ। মানুষের সমান লম্বা, উজ্জ্বল বর্ণের এই ফুলের ‘গন্ধ’ নাকি অবিকল পচা মাংসের মতো। এতই দুর্গন্ধ যে, এই ফুলের সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। আমাদের দেশে ঝোপঝারে এখনও মাকাল ফল দেখা যায়। চৈত্র বৈশাখে মাকাল গাছে সাদা ধবধবে ফুল ধরে। শ্রাবণ-ভাদ্রে মাকাল ফল পাকে। তখন মনকাড়া এই ফলটিকে আপেলের মতো দেখা যায়। গাছে ধরা অবস্থায় মাকালের মতো সুন্দর ফল খুব কম দেখা গেলেও তার ভিতর কদর্য। কর্পস ফ্লাউয়ার তেমনই এক বিচিত্র ফুল। তবে এই ফুল বিরল।বছরে মাত্র একবার ফোটে, তাও প্রতি বছর নয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কর্পস ফুলের গন্ধ সহ্য করাই কঠিন। আবার অতি দুর্গন্ধের জন্যই এই ফুলের ক টানে উৎসাহী মানুষ ভিড় করেন ই ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের পাশে হান্টিংডন পাঠাগারে সম্প্রতি একটি কর্পস ফুল ফুটেছে। উৎসাহী লোকজন ফুলটি দেখতে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন । কয়েক বছর পরপর এ ফুল ফুটে থাকে। ওই পাঠাগাে মালি ব্রাইসি ডান বলেন, ‘মাংস পচে গেলে যেমন গন্ধ ছড়ায়, এ ফুলের গন্ধ একেবারে সেই রকম।কেন একটি ফুলের এমন বিকট গন্ধ, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরাগায়নের জন্য ক্যারিয়ন মাছিকে আকৃষ্ট করতে এই ফুল পচা মাংসের মতো গন্ধ ছড়িয়ে দেয়। এ গন্ধ যত প্রকট হয়, ফুলটির প্রতি মাছি তত বেশি আকৃষ্ট হয়। এ ধরনের মাছি পশুর পচে যাওয়া মাংসের উপর বসে।’ দেখতে বিশাল ও স্বল্প সময়ের জন্য ফোটার কারণে ফুলটির প্রতি মানুষের আগ্রহও বেশি বলে জানান • ব্রাইসি ডান। ডায়ানা ডু নামের এক – নারী ফুলটি দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই বিরল একটি ফুল। আমি ভাগ্যবান, এ ফুলের দেখা পেয়েছি।’ কর্পস ফুলের আর একটি বৈশিষ্ট্য এর আকার। এ ফুল মানুষের সমান লম্বা হয়। অনেক সময় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চেয়েও বেশি লম্বা হয়। আদতে শত শত ছোট ফুলের সমাহার।