গরিবের উপহার!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-করোনাকাল থেকে শুরু হয়েছিলো।এরপর কখনও ৩ মাস ক কখনওবা ৬ মাসের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল। এবার একেবারে ৫ বছরের জন্য।গরিবদের জন্য ফ্রি রেশনের মেয়াদ বাড়ানো হলো ২০২৯ পর্যন্ত।
প্রধানমন্ত্রী জনসভায় এ সংক্রান্ত ঘোষণা করেছেন। ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখেই যে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা তা বলার অপেক্ষা রাখে না।ছত্তিশগড়ে ভোটের প্রচারে গিয়ে এই ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। এর প্রাপক দেশে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ।অর্থাৎ দেশে ৮০ কোটি মানুষ গরিব।অর্থাৎ তারা কিনা মাসে ৫ কেজি চালও কিনতে পারেনা।তাই তাদের জন্য কোভিডকালে শুরু হয়েছিল মাথাপিছু ৫ কেজি শস্য।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের বাড়তি হিসাবে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় তা চালু হয়েছিলো দেশজুড়ে। কিছুদিন আগে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত ১১১তম স্থান পেয়েছিলো ১২৫টি দেশের মধ্যে।পার্শ্ববর্তী শ্রীলঙ্কা, নেপাল,বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকেও খারাপ ভারতের অবস্থা।যদিও কেন্দ্রীয় সরকার তা মানতে চায়নি।তারা পাল্টা যুক্তি খাড়া করেছিল যে, এই ক্ষুধাসূচক তথ্যনির্ভর নয়, এটিতে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে প্রধানমন্ত্রীর অতিসম্প্রতি ৮০ কোটি মানুষকে ৫ কেজি করে ফ্রি রেশন দেওয়ার ঘোষণায় তাহলে ক্ষুধাসূচকে ভারতের মানকে অনেকটাই কি স্বীকৃতি দিল না?ভারত যে ক্রমেই গরিবের দেশ তা কি স্বীকৃত নয় এই ঘোষণায়?প্রধানমন্ত্রী সহ কেন্দ্রের শাসক বিজেপি দল প্রায়শই বলে থাকে বিশ্বের অর্থনীতিতে ভারত এখন অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র। বর্তমানে পঞ্চম অর্থনৈতিক দেশ ভারত।প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ৩য় অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে ভারত অচিরেই। একই সাথে ভারত নাকি এখন অনেক আত্মনির্ভর দেশ। এমনকী ভারত নাকি বিশ্বকে শাসন করছে ইত্যাদি নিয়ে দেশ,এমনকী বিশ্বজুড়ে প্রচার চলছে।এই অবস্থায় ভোটের মুখে কেন একবারে পাঁচ বছরের জন্য গরিবদের জন্য ৫ কেজি ফ্রি রেশনের ঘোষণা দিতে হলো প্রধানমন্ত্রীকে।প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আরও প্রমাণিত, এ দেশের ৮০ কোটি মানুষ এখনও গরিব।বিরোধীরা প্রায়শই প্রশ্ন তোলে যে মোদি জমানায় গরিব বেড়েছে।ধনী গরিবের অন্তরও বেড়েছে।বড়লোক আরও বড়লোক হয়েছে, গরিব আরও গরিব হয়েছে। তাহলে তো বিরোধীদের দাবিকে মান্যতাই দেওয়া হয়েছে।৮০ কোটি মানুষ গরিব।তাদের কিনা মাসে ৫ কেজি চাল কেনার পয়সা নেই। তাদের ৫ কেজি চাল ফ্রিতে দিতে হচ্ছে সরকারকে।২০২০ সালে কোভিড কালে এই ফ্রি রেশনের প্রথা চালু হয়।এ পর্যন্ত কয়দিন অন্তর অন্তর তা বাড়তে থাকে। ২০২২ উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার উত্তরে যায়। বর্তমানে পাঁচ রাজ্যে ভোট চলছে। ৫ রাজ্যে যে বিজেপি এবার বেকায়দায় রয়েছে তা বিলক্ষণ জানেন প্রধানমন্ত্রী ৷শুধু মোদি ম্যাজিকে আর এবার বিশেষ কাজ হবার নয়। ফলে ভোট বড় বালাই।গরিবদের জন্য একেবারে ৫ বছরের জন্য ফ্রি রেশনের ঘোষণাই দিয়ে বসলেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের দাবিমতো এদেশে মোদি জমানায় ক্ষুধার হাহাকার চলছে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা একে মান্যতা দেওয়ার শামিল।শুধু তাই নয়, দেশে গরিবের সংখ্যা ৮০ কোটি তা প্রমাণিত প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায়। একদিকে প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা করে এক ঢিলে দুই পাখি মারার কৌশল নিয়েছেন।
একদিকে পাঁচ রাজ্যের ভোট বৈতরণী পার হওয়া, অন্যদিকে ২০২৪ লোকসভা ভোটেও ভাল ফল করা। অর্থাৎ গরিবদের টোপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।এর আগে পাঁচ রাজ্যের ভোটে যথেষ্ট চাপে রয়েছে বিজেপি শিবির।লোকসভা নির্বাচন আগে অসন্তোষ টের পাচ্ছে বিজেপি।একদিকে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের বৃদ্ধি, সব কিছুই চিন্তায় রেখেছে বিজেপি।পাঁচ রাজ্য জয় এবারএত সহজ হবে না ভেবে এবার নির্বাচনি প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মরিয়া প্রচেষ্টা করেছেন কল্পতরু হয়ে ওঠার। কেননা ভোট যে বড়ই বালাই। সেই পাখির চোখ শুধু এবারের পাঁচ রাজ্যের ভোট নয়। লোকসভা ভোটকে লক্ষ্য রেখেই মোদীর এই বড়সড় ঘোষণা।এবার দেখার, এর ফসল কতখানি ঘরে তুলতে পারে বিজেপি।