গলি হইতে রাজপথ, সর্বত্রই অবরোধ চলিতেছে । কোথাও কলসী কাঁখে,লইয়া কোথাও বা উওজিত মানুষ সকল রাগ,দুঃখ বুকে লইয়া অবরোধ করিতেছে । কলসী কাঁখে লইয়া অবরোধের অর্থ এই নহে যে তাহাদের ব্যবহৃত জলের উৎস শুকাইয়া গিয়াছে । প্ৰাক্ বর্ষার বৃষ্টিপাত যথেষ্ট হইয়াছে , তুলনায় বর্ষার ধারাও মারিয়া কাটিয়া কোনও অংশে কম নহে । অর্থাৎ শুখা মরসুমের ফাঁড়া আমরা কাটাইয়া উঠিয়াছি । জলের জোগানে পুষ্ট রাজ্যের সকল ছড়া , নদী , জলধারা , জলাশয় । কিন্তু সরাসরি আমরা আর আজকাল এই সকল উৎসের জলে নির্ভর নই । স্বাস্থ্যকর নহে ।
যুগ যুগ ধরিয়া এই প্রচার করিয়া আমরা মানুষকে পরিশ্রুত পানীয় জলের কথা বুঝাইয়াছি । পরিশ্রুত পানীয় জলের আধা কেসরা অভ্যাস তৈয়ার করা গেলেও বিদ্যুতের অভাবে সেই জল দেওয়া যাইতেছে না ।ঢাকঢোল পিটাইয়া নানা নামের জলধারার নামে কোটি কোটি টাকার জল প্রকল্প বরাদ্দ আনা হইয়াছে । গ্রামে গ্রামে সেই সকল প্রকল্পের বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হইতেছে । পরিশ্রুত পানীয় জল আসিবে পাইপের জলধারায় । এই ধারা সচল থাকিবে বিদ্যুতের জোগানে । কিন্তু হায় , কোথায় বিদ্যুৎ ?
চিরাচরিত উন্নয়নের ধারণা হইতে যাহারা বাহিরে এবং নিজেদের অগ্রগামী এবং চিন্তাশীল বলিয়া জাহির করিয়া থাকেন তাঁহারা প্রথম হইতেই শুনাইতেছেন , বেসরকারী হইলে পরিষেবা ভালো হইবে । আমাদের রাজ্যের বিকাশকামী সরকারও উন্নয়নে উদোম বেসরকারীকরণের পক্ষে রহিয়াছে । ফলত আমাদের রাজ্যে সরকার বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য বেসরকারীকরণের পথে হাঁটিয়াছে ।অধিকাংশ জেলা , মহকুমায় পরীক্ষামূলকভাবে বেসরকারীকরণ করা হইয়াছে । ইহাতে পরিষেবা তো ভালো হইল না বরং ভুক্তভোগী মানুষ আগের মতন করিয়া নিগমের নিজস্ব পরিচালনা দাবি করিতেছেন ।
নিগমের বেসরকারী লোকজন সম্পর্কে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ পাহাড় সমান । কোথাও কোথাও মানুষ অধৈর্য হইয়া অনভিপ্রেতভাবে নিগমের অফিসে হামলাও করিতেছে । নিগম জনস্বার্থে যে ফোন নম্বরটি দিয়া রাখিয়াছে উহা কেহ তুলিতেছে না বলিয়া লোকজন ছুটিয়া গিয়া সেই ফোন সেট ভাঙ্গিয়া দিয়া আসিয়াছে এমন ঘটনাও বিরল নহে । কোথাও কোথাও একবার ঝড়জলে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হইলে ছয় সাত দিন আর বিদ্যুতের দেখা মিলিতেছে না । ফলে সেই সকল বিস্তীর্ণ এলাকায় সজল কিংবা অটল জলধারা দুর্গত মানুষের অশ্রুধারায় পর্যবসিত হইতেছে । বিদ্যুতের অভাবে মার খাইতেছে আমাদের কৃষিখামার , কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র , মাঝারি শিল্পগুলি ।
আধুনিক কৃষিব্যবস্থায় বিদ্যুৎ একটি অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ । মৎস্য , পশুপালন , পাখী পালনের মতন উদ্যোগগুলি দিনের পর দিন বিদ্যুতের অভাবে চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হইতেছে । এই সকল লইয়া যেন কাহারও মাথা ব্যথা নাই । আবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ফসল বা উৎপাদন মার খাইলে সরকারী বা বেসরকারী কোনওখানেই বিমার ব্যবস্থা নাই । কৃষকের এই লোকসান কোনও মতেই পুষাইবার নহে , আর কৃষকের আয় দ্বিগুণ করিবার যেই পরিকল্পনা তাহা বোধহয় এই রাজ্যে বাস্তবের মুখ দেখিবার মতন নয় । অথচ বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা স্বয়ম্ভর । ত্রিপুরায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে বিক্রয় করা হয় ।
বহিঃরাজ্যে যাইয়া থাকে। আর প্রদীপের নীচের নিকষ অন্ধকারের মতন ত্রিপুরার গ্রাম পাহাড় থাকিতেছে অন্ধকারে । প্রশ্ন আসিতেছে তাহা হইলে বিদ্যুৎ দপ্তর কী করিতেছে ? বিদ্যুতের জন্য অপরের মুখাপেক্ষী নহে এই রাজ্য । বিদ্যুৎ কিনিতে হয় না বরং উদ্বৃত্ত বিক্রয় করা হয় । তাহাদের কাজ হইতেছে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কেবল গ্রাহকের ঘরে পৌঁছাইয়া দেওয়া । এই কাজটিও করিয়া উঠিতে পারিতেছে না সাড়ে চার বৎসরে ? এই বিস্ময় রাজ্যের সাধারণ গ্রাহক , ভুক্তভোগীর । তাহারা মহল্লার গলি পথের অবরোধ সারিয়া ক্রমশ রাজপথে আসিয়াছেন । শুধু রাজপথই নহে , জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটিল সম্প্রতি উত্তর ত্রিপুরার সিদংছড়ায় ।
রাতভর গ্রামবাসী গ্রাম ছাড়িয়া জাতীয় সড়ক জুড়িয়া বসিয়াছিলেন । এই ঘটনা আমাদের রাজ্যের স্বাভাবিক জনজীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ । মাঝে মাঝেই নানান জায়গায় সাধারণ বিদ্যুৎ কর্মীদিগের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটিতেছে অনভিপ্রেতভাবে । এই ঘটনাগুলি লইয়া এখনই ভাবনাচিন্তা করা দরকার । কিন্তু এই কথা বলিবার সঙ্গে সঙ্গে আরও প্রশ্ন আসিয়া জুড়িতেছে , ভাবনাচিন্তা কে করিবেন ? কাহার দায় । যিনি বা যাহারা দায়গ্রস্ত , তাঁহারা কি নিজ দায় স্বীকার করিতেছেন ? নাকি কেবলই দিনাতিপাত করিতেছেন ?
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের লাইনচ্যুত ট্রেন। ছিটকে গেছে তিনটি কামড়া। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার তিতলাগড় স্টেশনের কাছে।…
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথম সংক্রমণের ৫ বছরের রেষ কাটতে না কাটতেই নতুন করে চিনে খোঁজ মিলেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-গত ৫ আগস্ট হাসিনা জামানার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। তবে…
শুক্রবার মরিশাসের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন আসন্ন ন্যাশনাল ডে বা জাতীয় দিবসের উদযাপনে প্রধান অতিথি…
কোনও চাওয়া যখন পথের থেকে বেশি সংখ্যায় পথবন্ধক তৈরি করে, তাকে পরিত্যাগ করাই বিধেয়। কারণ…
অনলাইন প্রতিনিধি:- নারী নির্যাতন কিংবা মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা রাজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি…