গান-আবৃত্তি-নৃত্যের ছন্দে রাজ্যজুড়ে কবিপ্রণাম

 গান-আবৃত্তি-নৃত্যের ছন্দে রাজ্যজুড়ে কবিপ্রণাম
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || মঙ্গলবার দিনভর নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হলো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে এদিন সকালেই আগরতলার রবীন্দ্র কাননে অনুষ্ঠিত হয় মূল অনুষ্ঠানটি। এছাড়াও ‘ছন্দনীড়ের উদ্যোগে প্রভাতফেরী থেকে শুরু করে আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণে আবৃত্তি, নাচ, গান, নৃত্য পরিবেশনের মতো নানা অনুষ্ঠানও হয় ৷ সন্ধ্যায় পৃথকভাবে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং হল ঘরে এদিন আরও একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় কবিপ্রণাম অনুষ্ঠান।

May be an image of 9 people, child and text that says "উন্নয়ন সংঘ আয়োজিত"


দিনের শুরুতে রবীন্দ্র কাননে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজন্য আমল থেকেই কবিগুরুর সাথে এ রাজ্যের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মহারাজা বীরচন্দ্র মাণিক্য বাহাদুর থেকে শুরু করে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুর পর্যন্ত এই সম্পর্ক স্থায়ী ছিল । তিনি বলেন, তাকে ভারতভাস্কর উপাধিতেও ভূষিত করেছিলেন সেই মহারাজা। তার রচিত রাজর্ষি, বিসর্জন, মুকুট মনে করিয়ে দেয় যে ত্রিপুরাকে নিয়ে জানার কতো চেষ্টা যে চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, তার মাধ্যমেই গোটা বিশ্বের সামনে রাজ পরিবারের মহিমাকেও তুলে ধরেছিলেন কবিগুরু। যে কারণে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, এসব সাহিত্যের জন্যই পটভূমি বলা যায় উদয়পুরের ভুবনেশ্বরী মন্দিরকে।

May be an image of 2 people and people dancing



মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হচ্ছেন ভারতীয় সংস্কৃতির প্রাণপুরুষ। তাকে ছাড়া আমরা কোনও কিছুই ভাবতেই পারি না। সমাজ, চেতনা, সংস্কৃতি, এমনকী দেশপ্রেমে বরাবরের মতোই জড়িয়ে রয়েছেন কবিগুরু। অর্থাৎ চলার পথে যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কবিগুরুর রচিত গান, নাটক, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ এমনকী কবিতাগুলি থেকেই পাওয়া যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কবিগুরুরই রচিত দুটি গান ভারত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পায়। অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী এদিন ১৯৭০ সালের গোড়ার দিকে ঠিক এমন দিনেই রবিঠাকুরের চিত্ত ব্যথা ভয় শূন্য’ গানটি ইংরেজিতে পাঠ করে শুনিয়েছিলেন। এদিন আরও একবার একই গান পাঠ করে শোনালেন উপস্থিত সকলের সামনে অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা সহ উপস্থিত মুখ্যসচিব জে কে সিন্হা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী, অধিকর্তা রতন বিশ্বাস সহ অন্য অতিথিরা। সকলেই কবিগুরুর মর্মর মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে শিশু শিল্পীদের মাধ্যমে রবীন্দ্র নৃত্য, সঙ্গীত এবং আবৃত্তিও পরিবেশিত হয় । এদিকে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন চত্বরে ছন্দনীড়ের আয়োজনে ‘উদীচী’ এবং ‘ফাল্গুনি’ মঞ্চে একই সাথে শুরু হয় কবিপ্রণাম অনুষ্ঠান। এছাড়াও মুক্তমঞ্চে চলে নৃত্য পরিবেশন। সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টাব্যাপী চলতে থাকে মোট চারটি গ্রুপের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। এতে কম করেও ৪৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়।

May be an image of 4 people, temple, dais and text


অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক আসরের মধ্যে সমবেত নৃত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত পরিবেশনের আয়োজনও হয় জাঁকজমাটপূর্ণ। তবে এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ থাকবে আগামী ১৫ এবং ১৬ মে। পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মনোজ মুরলী নায়ার, মনীষা মুরলী নায়ার এবং চন্দ্রানী চট্টোপাধ্যায়ও আকর্ষণীয় এই পর্বে উপস্থিত থাকবেন বলে ছন্দনীড়ের পক্ষে জানানো হয়। অন্যদিকে নানা স্কুল, কলেজ, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, ক্লাব কিংবা বিভিন্ন কমিটির পক্ষ থেকেও পালন করা হয় কবিগুরুর ১৬২তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানটি। কলেজটিলার আনন্দমার্গ হাই স্কুল, নরসিংগড়ের ভবনস ত্রিপুরা বিদ্যামন্দির, অল ত্রিপুরা ব্লাইও কমিটি, স্বামী ধনঞ্জয় দাস কাঠিয়াবাবা মিশন কলেজ এবং বিভিন্ন পুর পরিষদ, নগর পঞ্চায়েত সহ সরকারী অন্যান্য স্বশাসিত সংস্থাগুলিতেও নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয়। আগরতলার চিত্তরঞ্জন রোডস্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রদেশ কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে দলীয় নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠানে প্রদেশ যুব তৃণমূল সভাপতি শান্তনু সাহা, মহিলা নেত্রী পান্না দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.