দেশে ঢাকঢোল পিটাইয়া স্বাধীনতার অমৃত উৎসব পালনের সূচনা হইতেছিল মোদি সরকারের অষ্টম বর্ষ পূর্তির প্রচার দিয়া। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সকল মন্ত্রী সহ বিজেপি নেতৃত্বাধীন সকল রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা পালা করিয়া মোদি সরকারের অষ্টম বর্ষের সাফল্য কীর্তন শুরু করিয়াছেন। আবার কাশী মথুরায় শিবলিঙ্গ বিতর্ক নতুন পথ মাপিতে শুরু করিল। সব মিলাইয়া মোদি শাহের বিজেপি যখন দুর্বল বিরোধী দলের বিপরীতে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সকল কৌশল পরিষ্কার দেখিতেছিল ঠিক তখনই বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতন ঘটিয়া গেল এক ঘটনা। তীব্র চাপের মধ্যে পড়িলেন মোদি সরকার, ঘরে বাইরে।
দেশে যেহেতু নির্মম সংখ্যাগরিষ্ঠতার সরকার তাই সংখ্যাগতভাবে বিজেপি সরকারকে কখনওই কোনও ইস্যুতে কাবু করিতে পারে না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু সমস্যা এখন আর দেশের অভ্যন্তরে নাই। সমস্যা আসিয়া হাজির হইয়াছে বিদেশের মাটি হইতে। ভারতে হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকারে বিজেপি গত এক দশক ধরিয়া প্রকাশ্যে ইসলামের বিরোধিতার যে চর্চা করিতেছে তাহা এইবার লাগাম ছাড়া হইলো। কাতারের মতন উপসাগরীয় দেশে এই ঘটনার সূচনা। মহানবির প্রতি বিজেপির জাতীয় মুখপাত্রের কটুক্তি লইয়া কাতার সরকার ভারতীয় দূতকে ডাকাইয়া পাঁচ কথা শুনাইয়া দিল। জানাইয়া দিল, এই ঘটনায় ভারত সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে।
কাতারের এই অবস্থানের পাশে আসিয়া দাঁড়াইলো সৌদি আরব, আরব আমিরশাহি, ইরান সহ সকল মুসলিম দেশ। দেখা গেল তাঁহারা সকলে এইবার নয়াদিল্লীর উপর চাপ সৃষ্টিতে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত জানাইয়া দিল। আবার ইসলাম ফোবিয়ার কারণে ভারত বিরোধিতা কেবল মধ্যপ্রাচ্যেই থামিয়া থাকিল না। ইহার বাহিরে এশিয়ার অন্য দেশেও ছড়াইতে শুরু করিল। মোদি অমিত শাহ যেহেতু দলে এবং সরকারে সবখানেই দন্ডমুন্ডের কর্তা তাই তাঁহারা এই সমস্যা হইতে কিমতে ক্ষমা চাহিয়া বা মুচলেকা দিয়া পার পাইবেন তাহা সম্পূর্ণতই তাহাদের বিষয়। সেই ক্ষেত্রে ভারতের রাষ্ট্রগত যে সহাবস্থানের ঐতিহ্য তাহা কতটা অমলিন রাখিবেন বিশ্বমাঝারে তাহাও তাহাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করিতেছে।
তবে যে সকল দেশ আজ ভারতীয় পণ্য বয়কটের কথা বলিতেছে তাঁহারা কেহই কোনও কালে ভারতের শুত্রু দেশ নহে, বরং মিত্র। এদের এক দেশে প্রধানমন্ত্রী মোদি সেই দেশটির সর্বোচ্চ সম্মান গ্রহণ করিতে যাইয়া বলিয়াছিলেন, এই দেশ আমার দ্বিতীয় ঘর। আজ সেই দেশে ভারতীয় পণ্যের সারি পলিথিনে মুড়াইয়া রাখা হইয়াছে। বেচা হইবে না। মোদি, অমিত শাহদের সমস্যা ঘরে বাইরে। দুই জাতীয় মুখপাত্রকে বহিস্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়া ফাটিয়া পড়িতেছে দুই নেতার ঘর অয়াপ্সির দাবিতে। আবার কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ করিয়া দিয়া মোদি সরকার কেল্লা ফতে করিবার দাবি করিয়া আসিতেছিল তাহাও দিনে দিনে অসাড় হইয়া সামনে আসিতেছে। কাশ্মীরি পন্ডিতেরাই মোদির সমালোচনা করিতে শুরু করিয়াছে।
সকল সমস্যা ঘরোয়া। এই লইয়া দেশের সকল নাগরিকের মাথাব্যথা না করিলেও চলিবে, কিন্তু ভারতীয় পণ্যের বিক্রি যদি বিদেশে বন্ধ হইয়া যায় তাহা হইলে দেশের আর্থিক ক্ষতির ধারাবাহিকতা ঠেকাইয়া রাখা যাইবে না। প্রসঙ্গত, ভারতীয় পণ্যের বাজার সুদুর ইউরোপে নাই, অধিকাংশই এশিয়া মহাদেশে, মধ্যপ্রাচ্যে। চিরাচরিত বাজারে যদি ভারতীয় পণ্য অছুত হইয়া যায় তাহা হইলে আরও চাপ আসিবে মোদি-শাহের উপর, আসিবে দেশের অর্থনীতির উপর। অর্থনীতি লইয়া মোদি-শাহের মাথাব্যথা নাই, যদি ধরিয়া লওয়া হয় রাজনীতি লইয়া অবশ্যই থাকিবে। ভারতীয় বহুজাতি সংস্থার পণ্য যদি বিদেশে বিক্রি বন্ধ হইয়া যায় কেবল ইসলামফোবিয়ার কারণে তাহা হইলে ধরিয়া লইতে হবে এইবার বিজেপির সহিত করপোরেটের সংঘাত অনিবার্য।
সে না হয় সামলানোর দায় বিজেপির নিজস্ব, কিন্তু সেই সকল দেশে ভারতের যে বিশাল সংখ্যক শ্রমিক শ্রম বেচিয়া ডলার পাঠাইতেছে দীর্ঘদিন ধরিয়া, তাহাদের কি হইবে? যদি তাঁহারা কর্মচ্যুত হইয়া ঘরে ফিরিতে বাধ্য হয় তাহাদের সহিত এই দেশের সরকার কেমন আচরণ করবে? লকডাউনে ঘরের উদ্দেশ্যে ফেরা মানুষগুলির মতোই কি? আমাদের দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ক্রমেই নিম্নগামী। পর পর সকল ত্রৈমাসিকের এই ধারাবাহিকতা লইয়া মাথায় হাত দিতে হইতেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট এক মাসে দুই বার বৃদ্ধি করিতে হইলো। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির উপর চাপ বাড়িতেছে যার প্রভাব পড়িবে সাধারণ গ্রাহকের উপর। এই যখন আমাদের দেশের হাড়ির হাল তখন শাসক দল ব্যস্ত রহিয়াছে হিন্দু-মুসলমানের বিভাজন লইয়া। গত আট বৎসরে এই সরকারের প্রধান কখনওই তার দলের জাতীয় বিজাতীয় কোনও মুখপাত্রের হেইট স্পিচ বা সহনাগরিকের প্রতি অপমানকর বা অসম্মানকর কথার প্রতিবাদ করেন নাই। দেশের কাহারো আপত্তি, প্রতিবাদ, কর্ণপাত করেন নাই। সেই দিক হইতে বহিষ্কৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা, যাহা করিতে হইলো দেশ বহির্ভূত এক চাপের ফলে। তাহা হইলে রাষ্ট্রবাদী এই দলটির অভ্যন্তরীণ নীতি, কর্মপদ্ধতি ইত্যাদি কি আগামীদিনে দেশের বাহিরের কথায় স্থির হইবে?
অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…
অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…
অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…
নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…