ঘর ভাঙার রাজনীতি রাজ্যসভায়

 ঘর ভাঙার রাজনীতি রাজ্যসভায়
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্যসভা ভোট নিয়ে চরম নাটক । ফল প্রকাশের প্রথম পর্ব যদি হয় কংগ্রেসের মাস্টারস্ট্রোক , তাহলে দ্বিতীয় পর্ব বিজেপির জয় । যদিও নাটকীয় চাপানউতোর , নির্বাচন কমিশনে নালিশ পাল্টা নালিশ। ভিডিওগ্রাফির তদন্ত এবং বিচার । সব কিছু গড়ালো সারারাত । আর সেই পর্বে শেষ হাসি হেসে কংগ্রেসে চরম পাল্টা ধাক্কা দিয়েছে বিজেপি ৷ রাজ্যসভা নির্বাচনকে ঘিরে শেষরাত পর্যন্ত টানাপোড়েন নতুন নয় । এর আগে শেষবার সোনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেলের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেখা গিয়েছিল এই মধ্যরাতের অভিযান । এবার যেন সেই চিত্রই ফের ফিরে এসেছিল শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে । রাজ্যসভায় মোট ৫৭ আসনের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ১০ জুন । অর্থাৎ শুক্রবার । কিন্তু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন ৪১ জন প্রার্থী শেষ ১৬ টি আসনের প্রার্থীদের জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি হয়েছে শুক্রবার । চার রাজ্যের ১৬ আসনকে ঘিরে টানটান উত্তেজনা ও টেনশন ছিল ।

কারণ কর্ণাটক , রাজস্থান , হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র – সর্বত্রই বিভিন্ন দল নিজেদের বিধায়ক শক্তির বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত একজন করে প্রার্থী দিয়েছিল । রাজস্থানে বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিলেন জি টিভি নেটওয়ার্কের মালিক সুভাষ চন্দ্রা । কিন্তু কংগ্রেসের রণকৌশলে সেখানে তাকে পরাজিত হতে হয়েছে । কারণ , বিজেপিকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে বিজেপির এক বিধায়ক ক্রস ভোট করে কংগ্রেসকে ভোট দেয় । আর অন্যদিকে অন্য কিছু দল ও নির্দল সমর্থনও কংগ্রেস আদায় করে । কিন্তু এই সাফল্য হরিয়ানায় ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস । সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী অজয় মাকেনের জয়ের জন্য নিজেদের পক্ষে যথেষ্ট সংখ্যক বিধায়ক ( ৩১ ) থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস প্রার্থী পরাস্ত হন । কারণ , কংগ্রেসের বিধায়ক কুলদীপ বিশনয় ক্রস ভোট করেন বিজেপির পক্ষে । পাশাপাশি আরও এক বিধায়কের ভোট খারিজ হয়ে যায় । হরিয়ানা থেকে তাই শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে কংগ্রেসকে । যা বড়সড় ধাক্কা । কৰ্ণাটকেও চতুর্থ আসনে কংগ্রেস পরাস্ত হয়েছে ।

কারণ , নির্দল ও সংযুক্ত জনতা দলের ভোট সংগ্রহে সফল হয়ে যায় বিজেপি । আর মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে শিবসেনার জন্য বড়সড় এক হতাশা নিজেদের প্রার্থী জিততে না পারা । কারণ , এখানেও গভীর রাত পর্যন্ত প্রবল টেকনিক্যাল টানাপোড়েনের পর জানা যায় বিজেপির অতিরিক্ত প্রার্থী জয়ী হয়ে গিয়েছেন । যা যথেষ্ট অক্সিজেন বিজেপির কাছে । কারণ , মহারাষ্ট্রে ঘুরপথে মধ্যপ্রদেশের ধাঁচে ক্ষমতা ও সরকার দখলের প্রয়াসে রয়েছে বিজেপি । কয়েকবার চেষ্টা করেও সফল হয়নি । এবার কয়েকজন বিধায়ককে নিজেদের পক্ষে ম্যানেজ করা গিয়েছে । সুতরাং আগামীদিনে আবার বিজেপি মরিয়া হয়ে ঝাঁপ দিতে পারে এই রাজ্যে । সব মিলিয়ে চার রাজ্যের রাজ্যসভা ভোটে ১৬ আসনের মধ্যে ৮ টি আসন পেলো বিজেপি । এদিকে , রাজ্যসভার ভোটে হরিয়ানা , রাজস্থান এবং মহারাষ্ট্র , কর্ণাটকে হিসাব খানিকটা পাল্টে গেছে ক্ৰশ ভোটিংয়ের জন্য । হরিয়ানার এক কংগ্রেস বিধায়ক , রাজস্থানের এক বিজেপি বিধায়ক এবং কর্ণাটকের এক জেডি ( এস ) বিধায়ক নিজ দলের প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে অন্য দলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় ওই প্রার্থীরা হেরে গেছেন । এর জেরে রাজস্থানের বিজেপি বিধায়ক শোভারাণী কুসওয়াহাকে দল সাসপেণ্ড করেছে । দলীয় হুইপ অমান্য করে তিনি কংগ্রেস প্রার্থীর পক্ষে ক্রশ ভোটিং করেছেন । অন্যদিকে কংগ্রেসও ক্রশ ভোটিং করায় হরিয়ানার কংগ্রেস বিধায়ক কুলদীপ বিশনইকে দল সাসপেণ্ড করেছে । এর জেরে কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী অজয় মাকেন রাজ্যসভায় হেরে গেছেন ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.