দ্বিতীয়দিন ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো হাজারো দর্শক-শ্রোতা!!
চমকপ্রদ!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজস্থানের সদ্যসমাপ্ত একটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থীর চমকপ্রদ ফলাফল ফের জাতীয় রাজনীতিতে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।কেননা মাত্র ২ মাসও হয়নি রাজস্থানে বিধানসভা ভোট গেছে।সেই নির্বাচনে কংগ্রেসকে পরাজিত করে ক্ষমতাসীন হয়েছিল বিজেপি।এই ফলাফল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত ছিল কংগ্রেসের কাছে।এমনকী জাতীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে দেশের তাবড় ভোটপণ্ডিতরা পর্যন্ত রাজস্থানের এই ভোটের ফল দেখে চমকে উঠেছিলো। রাজস্থানে ২০০ আসনের মধ্যে ভোট হয় ১৯৯টি আসনে।কংগ্রেস পেয়েছিলো মাত্র ৬৮টি আসন।বাদবাকি ১১৬টি আসনে জয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছিলো বিজেপি।একটি আসনে ভোট হয়নি প্রার্থীর মৃত্যুতে।কিন্তু এক মাসের মধ্যে সেই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাজস্থানে তো বটেই,গোটা দেশেই।এ ধরনের নজির খুব একটা পাওয়া যায় না যেখানে মাত্র ক্ষমতায় আসার এক মাসের কিছু বেশি সময়ের ব্যবধানে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল পরাজিত হয়। হ্যাঁ,রাজস্থানে তাই হয়েছে। এবং তা-ই এখন জাতীয় রাজনীতিতে প্রবল আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।এর মধ্যে তিন রাজ্যে বিজেপি,এক রাজ্যে কংগ্রেস এবং অপর এক রাজ্যে আঞ্চলিক এক দল জয়ী হয়েছিল।জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট ধরলে বিজেপি কংগ্রেসকে এই ভোটে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে।রাজনৈতিক পণ্ডিতরা এক সেমিফাইনাল বলেও আখ্যায়িত করেছিলেন। যেহেতু লোকসভা ভোট দোরগোড়ায়,তাই লোকসভা ভোট যদি ফাইনাল হয় সেজন্যই পাঁচ রাজ্যের ভোটকে অনেকেই সেমিফাইনাল বলে ধরে নিয়েছিলেন।এর মধ্যে উত্তর ভারতের তিন রাজ্যে ভোট ছিল।মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে জয়ী হয় বিজেপি।ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস।অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি।রাজনৈতিক ভোট বিশ্লেষক,এমনকী সর্বভারতীয় মিডিয়ারও তরফেও আভাস দেওয়া হয়েছিলো যে তিন রাজ্যেই ভালো ফল করবে কংগ্রেস।কিন্তু ফলাফলে দেখা গেলো এর উল্টোটা হয়েছে। তিন রাজ্যেই ধরাশায়ী হয়ে পড়েছে কংগ্রেস।কংগ্রেসের কাছে তা ছিল চূড়ান্ত ধাক্কার শামিল।কেননা কংগ্রেস সহ জাতীয় সংবাদমাধ্যম, এমনকী দেশের বহু তাবড় তাবড় ভোট বিশ্লেষকরা পর্যন্ত ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন তিন রাজ্যে না হোক,অন্তত ২ রাজ্যে ক্ষমতায় কংগ্রেস থাকবে।কংগ্রেসের কাছে উত্তর মধ্য ভারতের তিন রাজ্যে জয়টা ছিল ব্যাপক হতাশার।কিন্তু যেভাবে রাজস্থানে মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে উপনির্বাচনে ফের
কংগ্রেস কামব্যাক করলো একে কী বলা যায়- এক কথায় বলা যায় চমকপ্রদ। করণপুরে বিজেপি প্রার্থী তো আর যে কেউ ছিলেন না। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুরিন্দর সিং পাল। তাকে কিনা হারতে হল উপনির্বাচনে।সাধারণত কোন রাজ্যে বিধানসভা কিংবা লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে শাসক দলের আধিপত্যই দেখা যায়। ব্যতিক্রম ২/৩টি ক্ষেত্রে বিরোধী দলগুলির প্রার্থীরা জয়ী হয়।কিন্তু রাজস্থানে যে রাজনৈতিক ঘটনাটি ঘটেছে তা এককথায় নজিরবিহীন। কেননা মাত্র ১ মাস আগে ওই রাজ্যে কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপি জয়ী হয়েছিলো। যদিও বিজেপি জিতলেও দলে শান্তি ছিল না।দলের মধ্যে যে চোরাস্রোত বইছিল তা টের পাওয়া গেছিল মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে।অখ্যাত এবং অনামীকেই বিজেপি হাইকমান্ড মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করে।এতে রাজ্যে, বিশেষ করে বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়াকে বার্তা দেয় কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব।কিন্তু তাতেও বিজেপির অন্দরের আগুন যে নেভেনি তা উপনির্বাচনের ফলাফলেই স্পষ্ট।মাত্র একমাস আগে যে রাজ্যে কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে সেই রাজ্যে এক মাসের মধ্যে এমন কী হল যে বিজেপি প্রার্থী এমন কী রাজ্যের মন্ত্রীকে পর্যন্ত হারতে হল।এটা কী বার্তা দিচ্ছে বিজেপিকে?কংগ্রেস এই জয়ে ব্যাপক খুশি। কংগ্রেস আশাবাদী যে, লোকসভা নির্বাচনে তারা চমকপ্রদ ফল করবে। রাজস্থানের বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলকে খুব সিরিয়াসলি দেখছে কংগ্রেস। এতে ঝিমিয়ে পড়া কংগ্রেস নিঃসন্দেহে উজ্জীবিত হবে। এরই সাথে বিজেপির কাছেও অনেক চরম শিক্ষা।গোষ্ঠী কলহে জেরবার রাজস্থান বিজেপির দ্বন্দ্ব যে প্রকট তা এই ফলাফলে আরও একবার প্রকাশ্যে এসে গেলো। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এটাও এক বার্তা।