চমকহীন গ্যারান্টি!”

 চমকহীন গ্যারান্টি!”
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথা মেনে গত কয়েক বছরের মতো এবারও পয়লা ফেব্রুয়ারী নির্দিষ্ট দিনেই সংসদে বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় মেয়াদের সরকারের এটাই শেষ বাজেট।যেহেতু এই বছরই দেশে লোকসভা নির্বাচন,তাই লোকসভা নির্বাচনের পরে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তিন মাসের জন্য এদিন অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।সেক্ষেত্রে অন্তবর্তী বাজেটের তিনমাস পর জুলাই মাসে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা হবে।তাই অন্তবর্তী বাজেট মানে অস্থায়ী প্রকৃতির বাজেট।অস্থায়ী বা অন্তবর্তী বাজেট হলেও লোকসভার ভোটের মুখে এই বাজেটকে নিয়ে জনমনে প্রত্যাশা তো ছিলই।যদিও আগে থেকেই অবশ্য চোখ ধাঁধালো কোনও ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।

বলেছিলেন,নির্বাচনের আবহে ভোট অন অ্যাকাউন্টের সময় বিশাল কোনও ঘোষণা দেওয়ার সুযোগ থাকে না।তাই জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে জুলাইয়ের পূর্ণাঙ্গ বাজেটের জন্যই।অর্থমন্ত্রী যাই বলুন না কেন,ভোটের বছরে বাজেটকে সামনে রেখে ভোটারদের মধ্যে প্রত্যাশার পারদ চড়বে সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।কারণ ভোটের আগের বাজেটকে রাজনৈতিকভাবে সব শাসকই নিজেদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করে।বিশেষ করে এবারের বাজেটের প্রাক্কালে কর ছাড়ের দিকে নজর ছিল সবারই।কিন্তু এবারের বাজেটে সেভাবে আয়কর ছাড়ের কোনও ঘোষণা করেননি অর্থমন্ত্রী।তবে গত ১০ বছরে কর সংগ্রহ আগের থেকে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। এছাড়াও আয়কর রিটার্নের প্রক্রিয়ার গড় সময় গত ১০ বছরে কমেছে বলে জানান সীতারামন।সংসদ শুরুর প্রথম দিনেই প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছিলেন।প্রথা মেনে নতুন সরকার গঠনের পর দেশবাসীর সামনে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা হবে।এর মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রী যে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তা হলো- এবার ভোটের প্রাক্কালে সুদূর ভবিষ্যতকে মাথায় রেখে বিকশিত ভারতের কথা তুলে ধরা হবে বাজেটে।অর্থাৎ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানো এক দিশা নির্দেশকারী বাজেটের পথে এগোতে চাইছেন কেন্দ্রের সরকার।লক্ষ্যণীয় হলো, প্রধানমন্ত্রীর প্রদর্শিত পথেই আজ সংসদে অর্থমন্ত্রী যে বাজেট পেশ করেছেন তাতে আগামী ভবিষ্যতের স্বপ্ন সাকার করতে সরকার কোন্ কোন ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে কি কি পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তারই রূপরেখা এঁকে দিলেন। অন্তবর্তী বাজেটের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী জানিয়েদেন আগামী ৫ বছর দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সময়কাল।২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হিসাবে নিজের অস্তিত্ব জানান দেবে।অর্থমন্ত্রী তার বাজেটে রেল পরিবহণ শিল্পে ব্যাপক উন্নয়ন ও যাত্রী নিরাপত্তা,আরাম সুবিধার কথা বলেছেন তেমনি মহিলাদের আয় সামাজিক মানোন্নয়নের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য ‘লাখপতি দিদি’ স্কিমে টার্গেট বৃদ্ধি,সৌর প্যানেল চালিত বিদ্যুতের ব্যবহার, পিএম কিষান প্রকল্পের আওতায় শস্য সংক্রান্ত বিমা বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবায় মহিলাদের সার্ভিক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রদানের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ এলাকায় আরও ২ কোটি বাড়ি তৈরির কথা বলা হয়েছে।পর্যটনের বিকাশের ক্ষেত্রে নয়া প্রযুক্তির সংমিশ্রণের সাহায্যের বিষয়টি থাকছে।মোদ্দাকথায় অন্তবর্তী বাজেটে বড় ধরনের কোনও চমক বা আশার কথা না থাকলেও অর্থমন্ত্রী ২০২৪ এর জন্য স্বপ্ন ফেরি করে গেলেন ‘ তার বাজেট ঘোষণায়।যুব, মহিলা ও নিচুতলার মানুষের জন্য কিছু কিছু সেক্টরে মানুষের চেষ্টা থাকলেও ভবিষ্যৎ ভারত নির্মাণের লক্ষ্যকে সামনে নিয়েই বাজেট তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

প্রধানমন্ত্রী এই বাজেটের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বাজেটকে বিকশিত ভারতের প্রতিবিম্ব বলে উল্লেখ করেছেন।

আসলে ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রী বিকশিত ভারতের চার স্তম্ভ যুবক,গরিব, মহিলা ও কৃষকদের ক্ষমতা প্রদান করে তাদের আশা আকাঙক্ষা পূরণের মাধ্যমে আগামীর ভারত গড়ে তোলার যে রূপরেখার কথা বলেছিলেন কার্যত, এদিনের বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সেই রোড ম্যাপই রূপায়িত করার চেষ্টা করলেন অন্তবর্তী বাজেটে। বাজেটে অনুচ্চারিতভাবেই আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরে এসে সেই বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণ করার বার্তাও কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার রেখে গেলেন তার বাজেটের মধ্য দিয়েই।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.