বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
চমক নির্ভর প্রতিশ্রুতি!

ভোট আসে যেমন, তেমনি ভোট চলেও যায়। তেমনি ভোটের দিকে চেয়ে বাজেটও হয়।বাজেটে লোভনীয় সমস্ত ঘোষণাও থাকে। কিন্তু ভোটও যেমন ফুরিয়ে যায়, মানুষ আর বাজেটের ঘোষণার কথাও মনে রাখে না। বাজেটে কী প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার তাও মনে রাখে না সাধারণ মানুষ। প্রতি বছরই বাজেট এলে মানুষের মনে একটি কৌতূহল সৃষ্টি হয় বাজেটে কী থাকবে তা নিয়ে। বাজেটে নতুন কোনও ঘোষণা থাকে কিনা, বাজেটে মধ্যবিত্ত থেকে সাধারণ মানুষ কোনও রেহাই পায় কিনা। তার দিকেও নজর থাকে সাধারণ্যের। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাজেটের ঘোষণাও ভোটের প্রতিশ্রুতির মতো হয়ে গেছে অনেকটা। ভোটের প্রতিশ্রুতি যেমন মানুষকে লোভের ফাঁদে ফেলার একটি কৌশলমাত্র তেমনি বাজেটও বর্তমান সময়ে চমক ছাড়াও কিছু নয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত বছর ছিল দেশে লোকসভা ভোট। গত বছর এপ্রিল-মে-জুন মাস পর্যন্ত দেশে লোকসভা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে নয়া ঘোষণাও হয়েছিলো। যদিও ভোটে জেতার পর ফের নরেন্দ্র মোদি সরকারের তরফে বাজেটে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো বিশেষ করে চাকরির ক্ষেত্রে তা আজও অধরা। অর্থমন্ত্রী নিমলা সীতারামন ঘোষণা করেছিলেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিন কোটি চাকরি হবে। কিন্তু এক বছর পর ফের আগামীকাল বাজেট পেশ হতে চলেছে দেশের। সরকারী পরিসংখ্যান বলছে একজনেরও চাকরি হয়নি। বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন চাকরির বাজার চাঙ্গা করতে তিনটি প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। এর মধ্যে দুটি প্রকল্প ছিল প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিএফ ভিত্তিক। অর্থমন্ত্রী নির্মলা ঘোষণা করেছিলেন তিনটি স্কিম থেকে সংগঠিত ক্ষেত্রে প্রায় দুই কোটি নবুই লক্ষ চাকরি হবে দেশে। কিন্তু সরকারী পরিসংখ্যানই বলছে, তিন কোটি চাকরি তো দূরের কথা, কোনও চাকরিই হয়নি কোনও স্কিমে। ২০১৪ সালে মোদি সরকার যখন দেশে ক্ষমতায় আসে সেবার ভোটের প্রচারে প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে দুই কোটি চাকরি হবে। মোদি সরকার ইতোমধ্যেই এগারো বছর সম্পন্ন করে ফেলেছে কেন্দ্রে। তাহলে দেশে ২x১১=২২ কোটি চাকরি হবার কথা ছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা কী? সরকারী পরিসংখ্যান কী বলছে? চমক, প্রতিশ্রুতি আর বেসরকারী স্তরে কিছু চাকরি মেলা করা ছাড়া মোদি জমানায় কি কিছু হয়েছে?আগামীকাল, শনিবার নির্মলা সীতারামন ফের দেশের পরবর্তী এক বছরের জন্য বাজেট পেশ করতে চলেছেন। স্বভাবতই সেই বাজেট ঘিরে একরাশ প্রতিশ্রুতিও থাকবে। সরকার বাজেটের বাহবা কুড়োবে। বিরোধীরা বলবে বাজেট অন্তঃসার শূন্য। সেই ট্র্যাডিশন চলেই আসছে বছরের পর বছর ধরে।
গত বছর নির্মলা সীতারামনের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বছরে তিন কোটি চাকরির কী হল। যে তিনটি স্কিমে বছরে প্রায় তিন কোটি চাকরি কথা বলা হয়েছিলো তাতে প্রথম স্কিমে বলা হয়েছিলো, বেসরকারী সংস্থায় নতুন চাকরি পাওয়া কর্মীদের এক মাসের বেতন দেে সরকার। সর্বাধিক পনেরো হাজার টাকা পাওয়া যাবে এই স্কিমে। দ্বিতীয় স্কিমে কর্মচারী এবং কর্মদাতা সংস্থা উভয়ের জন্যই ইনসেনটিভঘোষণা করা হয়েছিলো। আর তৃতীয় স্কিমে শুধু কর্মদাতা সংস্থানে মাসিক তিন হাজার টাকা করে দুবছরের জন্য আর্থিক সহায়তার কথ জানানো হয়েছিলো। প্রশ্ন হল- এই সুবিধাগুলি গত এক বছতে কেন পেলেন না সুবিধাভোগীরা? এক্ষেত্রে যুক্তদের বক্তব্য হলো-বাজেটে বলতে হয় সেজন্য বলা হয়েছিলো, অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তার দাওয়াই ছিল না সেদিকে কারোর নজর নেই। ভোটে জেতা হয়ে গেছে। পাঁচ বছে মতো সরকার গদিতে বসে গেছে। এবার সাধারণ মানুষ চাকরি পেল কি পেলো না, সুবিধা পেলো কি পেলো না তা নিয়ে সরকারের নে মাথাব্যথা থাকবে? এই চাকরিগুলির ক্ষেত্রে ঘোষণা করার কথা ছি কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের। কিন্তু শ্রম মন্ত্রক সেই ঘোষণার ধারও ধারে এখনও। কিন্তু সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে বলে খবর প্রথম স্কিমে কথা ছিল তিন কিস্তিতে সর্বোচ্চ পনেরো হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এতে দুই কোটি দশ লক্ষ চাকরির দাবি করা হয়েছিলো। দ্বিতীয় স্কিমে ত্রিশ লক্ষ নতুন চাকরির কথা বলা হয়েছিলো। তৃতীয় স্কিমে পঞ্চাশ লক্ষ নতুন চাকরির কথা বলেছিলো কেন্দ্র। কিন্তু বাস্তব হলো এই প্রকল্পে একজনও এখন পর্যন্ত চাল পায়নি বলে খবর। তাহলে এটাও কেন্দ্রের অপর একটি বড়সড় জুমলা ধরে নেওয়া যেতে পারে। শুধু তাই নয়, করোনাকালে নেওয়া একাধিক প্রকল্পের সুবিধা এখনও বহু মানুষ পায়নি। যেমন সেসময় চালু হয়েছিলো আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনা। খবর হলো-এখনও এই প্রকল্পে বরাদ্দের অর্ধেক টাকা খরচ করা হয়নি।লক্ষ লক্ষ আবেদনকারীকে কোন আর্থিক সুবিধা এখনও
দেওয়া হয়নি। পুরনো স্কিমের সুবিধাই যেখানে অধরা, সেখানে গত বাজেটে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সুবিধার আশা করাই বৃথা – সাধারণ মানুষের বক্তব্য তাই-ই। আসলে মোদি জমানায় চমকই হলো আম তা বাজেট হোক আর নির্বাচনি ভাষণ, চমক ভরা রাজনীতি কাকে বলে!