চর্চায় ঝাড়খণ্ড!!
আচমকাই জাতীয় রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ঝাড়খণ্ড।রবিবার পাঁচ বিধায়ককে সাথে নিয়ে প্রাক্তন পার্টটাইম মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন দিল্লী পাড়ি দিতেই,জাতীয় রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায়। খবরে প্রকাশ ঝাড়খণ্ডের জেএমএম দলের বরিষ্ঠ এই নেতা তার অনুগামীদের নিয়ে বিজেপি দলে শামিল হচ্ছেন। এই খবর প্রচার হতেই জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতেও রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।অনেকেই দাবি করেন, ঝাড়খণ্ডেও বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার গঠন শুধু সময়ের অপেক্ষা। যদিও এমন কোনও সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত নজরে আসেনি।তবে রাজনীতিতে কখন কি হয়,তা আগে থেকে বলা খুবই মুশকিল। রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই।ফলে চম্পাই সোরেনের দিল্লী যাত্রার সাথে সাথে জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায়।
জমি দুর্নীতি কাণ্ডে হেমন্ত সোরেন জেলে যেতেই চম্পাই সোরেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।হেমন্ত জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরোতেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছিল চাম্পাই সোরেনকে। এর পর থেকে দু’মাসও কাটেনি।দলে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায়।আর এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চম্পাই সোরেন।তিনি স্পষ্টভাবেই বলেছেন হেমন্ত সোরেন জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরে,নিজের দল (জে এমএম) তার সাথে যেভাবে আচরণ করেছিল, তাতে তিনি বিধ্বস্ত। ক্ষুন্ন হয়েছে তার আত্মসম্মান। ক্ষুব্ধ চম্পাই আরও বলেছেন, সাঁওতাল বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়া শহিদ সিদো,কান হু’র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হুল দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানই বাতিল করে দিয়েছে দল। কারণ, সেখানে তার উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল।তার কথায়, তিনি ভিতর থেকে ভেঙে পড়েছিলেন।বুঝতে পারছিলেন না কি করবেন। আত্মসম্মানে লাগা ধাক্কা নিয়ে কার কাছে যাবেন?তার আপনজনদের দেওয়া যন্ত্রণা তিনি কোথায় প্রকাশ করবেন?তিনি স্পষ্টতই বলেছেন, আসন্ন ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে তার সামনে তিন বিকল্প খোলা রয়েছে।এক, রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া।দুই, নিজের আলাদা দল তৈরি করা।তিন, অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়া।এই তিন বিকল্পের মধ্যে কোনটা তিনি বেছে নেবেন, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট হয়নি।
খবরে প্রকাশ, দিল্লী যাওয়ার আগে চম্পাই সোরেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাথে একান্তে বৈঠক করেছেন।এরপরই জল্পনা তুঙ্গে উঠে।৮১ সদস্যের ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় এই মুহূর্তে ইন্ডি ব্লকের ৪৫ জন সদস্য রয়েছে।এদের মধ্যে ২৬ জন জেএমএমের,১৭ জন কংগ্রেসের,১ জন আরজেডি’র এবং ১ জন সিপিআই (এম এল)এর। অপরদিকে এনডিএ শিবিরের দখলে রয়েছে ৩০ টি আসন। এর মধ্যে বিজেপি ২৪ এবং অন্যান্য সহযোগী দলের সদস্য রয়েছেন ৬ জন। চাম্পাই সোরেন সহ ৬ জন বিধায়ক যদি এখনই বিজেপি দলে শামিল হয়, তাতেও এনডিএ সরকার গঠনের আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ বিধানসভার সদস্য সংখ্যা। এনডিএ-কে সরকার গঠন করতে হলে অন্তত পক্ষে ইন্ডিয়া জোট থেকে ১০ জন বিধায়ককে টানতে হবে। তাছাড়া চলতি বছরের নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে বিধানসভার ভোটে অনুষ্ঠিত হবে।হাতে আছে তিন থেকে চার মাস।রাজনৈতিক মহলের অভিমত, বিজেপি এখনই ঝাড়খণ্ডে সরকার গড়তে যাবে না।বরং বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠনের লক্ষ্যে ঝাঁপাবে।এই সম্ভাবনাই সব থেকে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি যেহেতু ব্রাজনীতি। তাই এখানে কি ঘটছে, সে দিকে নজর রাখা ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা খুবই মুশকিল।