চল্লিশের পরেই কমতে পারে হাড়ের ঘনত্ব!!

 চল্লিশের পরেই কমতে পারে হাড়ের ঘনত্ব!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কৃত্রিম উপায়ে নিজেদের নানা ভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করি।কিন্তু বয়স
বাড়লে হাড়ে ঘুণ ধরার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই বিষয়কেও প্রতিরোধ করা ভীষণ জরুরি।এর জন্য চাই রোদ্দুরে ঘোরাঘুরি আর
ক্যালশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।বাইরে থেকে কোনও কিছুই লাগিয়ে বা মেখে হাড় পলকা হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করার উপায় নেই।তাই প্রথম থেকেই সতর্ক হতে হবে।হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস। এছাড়াও আছে নানান ধরনের খনিজ বা মিনারেলস।বয়স বাড়লে বিভিন্ন কারণে হাড়ের ক্যালশিয়ামসহ অন্যান্য উপাদান কমে গেলে হাড় পলকা হয়ে যায়, ফলে সামান্য চোট আঘাতে ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।ডাক্তারি পরিভাষা একে বলে অস্টিওপোরোসিস।
ঋতুনিবৃত্তির পর মহিলাদের পোস্ট মেনোপজাল অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।তবে একথাও ঠিক যে বেশি বয়সে হাড়ের ক্যালশিয়াম কমে গিয়ে হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার সমস্যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবারই হতে পারে।মেনোপজ বা ঋতুনিবৃত্তির পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাব হলে হাড়ের ক্যালশিয়াম ডিপোজিশন -কমতে শুরু করে।হাড় ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাওয়ার এটাই মূল কারণ। মাঝবয়সি মহিলাদের অস্টিওপোরোসিসের মূলে আর যে সব কারণ আছে সেগুলি হল–ঋতুনিবৃত্তির পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম শোষণ হতে পারে না বলে হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করে।প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য খনিজের অভাব হলেও হাড় পলকা হয়ে যায়।এক্সারসাইজের অভাবেও হাড়ের ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে।ক্রনিক কিডনির অসুখে হাড় দ্রুত ক্ষয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।যাদের রোগা পাতলা হালকা কাঠামোর চেহারা তাদের হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি।
যাদের রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা অন্য কোনও ইনফ্ল্যামেটরি অসুখের কারণে নিয়ম করে কর্টিকোস্টেরয়েড খেতে হয় তাদের হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।যাদের তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে এই জাতীয় ওষুধ খেতে হয় তাদের অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়াম খাওয়া উচিত।অতিরক্ত ধূমপান করলে পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের কার্যক্ষমতা কমে গিয়ে হাড় পলকা হতে শুরু করে।নিয়ম করে মদ্যপান করলে শরীরে নতুন হাড় তৈরির পদ্ধতি ব্যহত হয় বলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।বংশপরম্পরাগত ভাবে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি।যদিও এই বিষয়ে এখনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি কিন্তু ধারণা করা হয়, যাদের হাড়ের গঠনে কোনও বিচ্যুতি আছে তাদের মধ্যে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।তাই বংশে এই অসুখের ইতিহাস থাকলে ছোট থেকেই সাবধান হওয়া উচিত।অস্টিওপোরোসিসের সব থেকে বড় সমস্যা হল, এই রোগ নিঃশব্দে আসে।যখন আচমকা পড়ে গিয়ে হাড় ভেঙে যায় তখনই চিকিৎসা করাতে গিয়ে রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়।পিঠের দিকে অল্পস্বল্প ব্যথা দিয়ে অসুখের সূত্রপাত হলেও বেশিরভাগ মানুষ খুব একটা গা করেন না। যখন বেশি ব্যথা হয়,তখন বুঝতে হবে হাড়ের ক্ষয় অনেক বেড়ে গেছে। নিঃশব্দে রোগের বিস্তার হয় বলে অনেকে একে ‘সাইলেন্ট থিফ’ বলেন।এই সমস্যাকে রুখতে শুরু থেকেই রোগ নির্ণয় করে হেলদি লাইফস্টাইল মেনে চলতে হবে।বংশে ফেমোরাল ফ্র্যাকচার বা বৃদ্ধ বয়সে পড়ে গিয়ে চোট পাওয়ার ইতিহাস থাকলে ছোট থেকেই হেলদি লাইফস্টাইল মেনে চলা উচিত।আর চল্লিশ পেরোনর পর থেকে বিএমডি অর্থাৎ বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট করে হাড়ের অবস্থা জেনে নিয়ে ক্যালশিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে রোদ্দুর লাগান এবং ভিটামিন ডি-থ্রি ও ক্যালশিয়াম খাওয়া শুরু করতে হবে।মনে রাখবেন,ভিটামিন ডি সপ্তাহে ১ দিন খেতে হয়।ভাল কাজ হবে বলে রোজ খেলে হাইপারভিটামিনোসিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে।এছাড়া নিয়ম করে ওয়েট বিয়ারিং এক্সারসাইজ ও সপ্তাহে ন্যূনতম ৫ দিন ৩০ মিনিট হাঁটা জরুরি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.