চাকরির নামে বেকারদের সঙ্গে রসিকতা করছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- চাকরির নামে বেকার ঠকাচ্ছে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ, চাকরির নামে রাজ্যের বেকারের সাথে একপ্রকার প্রতারণা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের চাকরি প্রদান দুরঅস্ত। উল্টো চাকরির আবেদনের নামে বেকারের কাছ থেকে নগদ অর্থ পর্যন্ত গায়েব করে দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও এরপর এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেলেও বেকারদের আবেদন মূল্য পর্যন্ত ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। চাকরির নামে আবেদন মূল্য বাবদ দুই হাজার টাকা লুটে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ রাজ্যের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলেও চাকরি যাচ্ছে বহি:রাজ্যে। রাজ্যের বেকার শিক্ষিত যুবক যুবতী বয়স উত্তীর্ণ বেকারে পরিণত হচ্ছে। তবে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের সাথে চাকরির নামে প্রতারণা চললেও শাসক দল বিজেপি সরকার, বিরোধী দল সিপিএম, কংগ্রেস, তিপ্রা মথা নেতৃত্ব কুম্ভনিদ্রায় আচ্ছন্ন। ফলে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীর ক্ষোভ চরমে উঠেছে।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে ফিনান্স অফিসার পদে একজন, কন্ট্রোলার অব এগজামিনেশন পদে একজন, লাইব্রেরিয়ান পদে একজন কলেজ ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল পদে একজন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে চারজন, অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে ছয়জন সহ ইউডিসি, এলডিসি পদে সরাসরি নিয়োগে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়।এরপর বিজ্ঞাপন মোতাবেক বিভিন্ন পদে রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীরা আবেদনও করেন। তবে এক অদৃশ্য কারণে ২০১৮-র এই নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপথে বাতিল হয়ে যায়। এরপর আবার ২০২১ সালে এই পদগুলিতে নিয়োগের জন্য পুনরায় বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। এমনকী ২০১৮ সালে যারা আবেদন করেছিলেন তাদের মধ্যে যেসব বেকারের চল্লিশ বছর পার করে বয়স উত্তীর্ণ বেকার হয়েছিলেন তাদেরকেও ২০২১ সালে অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্টার পদে পুনরায় আবেদনের সুযোগ প্রদান হয়। এমনকী অন্যান্য পদের ক্ষেত্রেও ২০২১ সালে বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের আবেদনের সুযোগ প্রদান হয়েছে। যদিও ২০২১ সালে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপথে বাতিল হয়ে যায়। এখন আবার নতুন করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এই পদগুলিতে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন সংগ্রহ করা হয়। তবে ২০২৩ সালের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১৮ এবং ২০২১ সালে আবেদনকারী রাজ্যের বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের আর আবেদনের সুযোগ প্রদান হয়নি। ফলে তারা অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার সহ অন্যান্য পদে আবেদনের সুযোগ পেলেন না। কিন্তু কেন, ২০১৮ এবং ২০২১ সালের আবেদনকারীদের সুযোগ হলো না। এ প্রশ্নের কোনও সঠিক উত্তর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। এমনকী আঠারো এবং একুশ সালে আবেদনের নামে রাজ্যের বেকারের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।যা বেকারদের ফিরিয়ে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার জন্য ২০১৮ এবং ২০২১ সালে আবেদনকারী রাজ্যের বেকার আজ বয়স উত্তীর্ণ। এমনকী তাদের চাকরির দরজা পর্যন্ত বন্ধ। এভাবেই সর্বক্ষেত্রে রাজ্যের বেকারদের ঠকাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কীভাবে রাতারাতি ২০১৮ এবং ২০২১ সালের আবেদনের নিয়ম পাল্টে গিয়েছে। এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই।তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, রাজ্যের বেকার যুবক যুবতী, ছাত্রছাত্রী গবেষকরা বিগত কয়েক বছর ধরে প্রতারিত সর্বক্ষেত্রে হচ্ছে। এক অদৃশ্য কারণে রাজ্যের শাসকদল বিজেপি সরকার, বিরোধী দল সিপিএম, কংগ্রেস, তিপ্রা মথার নেতৃত্বের কোনও হেলদোল নেই। উল্টো ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে বহি:রাজ্যের আধিকারিকদের উৎসাহ দিতে ব্যস্ত। যার খেসারত দিচ্ছেন ইন্ট রাজ্যের বেকার ছাত্রছাত্রী, গবেষকরা।অভিযোগ, ২০২৩ সালে এসে নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হলেও এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কলেজ ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল অর্থাৎ সিডিসি অধিকর্তার পদটি নেই। যার ফলে রাজ্য সরকারের পঁচিশটি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ এ বছরও সর্বক্ষেত্রে আর্থিকভাবে বঞ্চিত হবে। অভিযোগ, এই পদে এখন পর্যন্ত বহি:রাজ্যের কোনও বেকার প্রার্থীকে চাকরি প্রদানের জন্য পাওয়া যায়নি। তাই এই পদটি বিজ্ঞাপনে নেই। একইভাবে ছয়টি অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্টার পদে বহি:রাজ্যের বেকার প্রার্থী রয়েছে। তাই তাদের চাকরি প্রদানের জন্য নিয়ম লঙ্ঘন করে ২০১৮ এবং ২০২৩ সালের আবেদনকারী বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের সুযোগ প্রদান হয়নি। এমনকী ফিনান্স অফিসার, কন্ট্রোলার অব এগজামিনেশন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, লাইব্রেরিয়ান, এলডিসি, ইউডিসি সহ অন্যান্য পদের চাকরিও বহি:রাজ্যে যাচ্ছে। অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর পদে প্রায় আটচল্লিশজন এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে প্রায় ছেচল্লিশটি পদের চাকরির ক্ষেত্রেও অধিকাংশ চাকরি বহি:রাজ্যে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সব মোটা অঙ্কের বিনিময়ে হচ্ছে। আবার প্রফেসর পদে নিয়োগ বন্ধ।এদিকে, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গঙ্গা প্রসাদ প্রসিন- এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার দাবি, সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী হচ্ছে।

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

17 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

17 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago