চাপে গান্ধী পরিবার!

 চাপে গান্ধী পরিবার!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

নানা জল্পনা – কল্পনার পর শতবর্ষ প্রাচীন কংগ্রেস দলের শীর্ষপদে নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। সূচি অনুযায়ী আগামী ১৭অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা । এখন এই নির্বাচনকে কেন্দ্ৰ করেই সোনিয়া গান্ধী , রাহুল গান্ধীর মাথাব্যথা বেড়েছে কয়েকগুণ । কাশ্মীর থেকে কেরল , সর্বত্র বেসুর শোনা যাচ্ছে । সক্রিয় হয়ে উঠেছে কংগ্রেসের ‘ জি -২৩ ’ বলে খ্যাত বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী । এই গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে অন্যতম বরিষ্ঠ নেতা গুলাম নবি আজাদ ক’দিন আগে দলই ছেড়ে দিয়েছেন । দল ছাড়ার পর থেকে তিনি গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে লাগাতর তোপ দেগে চলেছেন ।

একেবারে কোনও রাখঢাক না রেখে , সরাসরি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন । প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা নিয়ে । এখানেই থেমে থাকেননি গুলাম নবি আজাদ । তাকে নিশানা করায় পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে বলেন , গোটা দেশজুড়ে কংগ্রেস দলকে শেষ করে দেওয়ার জন্য অন্য কোনও দল বা নেতা – নেত্রীর প্রয়োজন নেই । একজনই যথেষ্ট । আজাদের তির যে রাহুল গান্ধীকেই নিশানা করেছে , তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । আজাদ আরও বলেছেন , গান্ধী পরিবারের বাইরেও যদি কেউ দলের সভাপতি হন , তাহলেও সকলেই জানে যে , তিনি হবেন গান্ধী পরিবারের নিছক ফাইল বাহক ।

আরও স্পষ্ট করে বললে গান্ধী পরিবারের তল্পিবাহক । যিনি গান্ধী পরিবারের কথায় উঠবেন , গান্ধী পরিবারের কথায় বসবেন । ফলে সভাপতি মনোনয়ন স্রেফ একটা লোকদেখানো তামাশা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে , কাশ্মীর উপত্যকার পোড়খাওয়া নেতা গুলাম নবি আজাদ ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে , তিনি একা নন । তার সাথে আরও অনেকেই আছে । অর্থাৎ লাইনটা বেশ দীর্ঘই বলা যায় । কেননা , ইতিমধ্যে কাশ্মীরে কংগ্রেস দল ছেড়েছে ৬৪ জন নেতা । যাদের মধ্যে হেভিওয়েট নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রীরাও আছেন । যারা কাশ্মীরে প্রভাবশালী বলেই পরিচিত । এরা সকলেই গুলাম নবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন ।

মোদ্দাকথা বার্তাটা পরিষ্কার । আজাদের একের পর এক তোপের মধ্যেই দক্ষিণের রাজ্য কেরল থেকে বেজে উঠেছে অন্য সুর। কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতা তথা তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুরের মুখে উল্টো সুর শোনা যাচ্ছে । কংগ্রেসের শীর্ষ পদে নির্বাচন নিয়ে একটি পত্রিকায় বিস্ফোরক নিবন্ধ লিখে জল্পনা আরও উস্‌কে দিয়েছেন । তিনি লিখেছেন , কংগ্রেসের সভাপতি মনোনয়নে নির্বাচন হওয়া দলের পক্ষে ভালো । গণতন্ত্রের জন্য এবং দলের মনোবল বাড়ানোর ক্ষেত্রেও নির্বাচন হওয়া জরুরি । গান্ধী পরিবারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া উচিত যে , সভাপতি মনোনয়ন নিয়ে তাদের প্রকৃত অবস্থান কী ?

রাহুল গান্ধী বলেছেন যে , গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে কেউ হোন । কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটি কী ? সেটা নিয়ে তারা কোনও স্পষ্টীকরণ দিচ্ছে না । স্বাভাবিকভাবেই খেলা জমে উঠেছে । এখন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে , আদৌ কি কংগ্রেসের শীর্ষপদে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে ? যদি সত্যিই হয় , সেটা হবে দীর্ঘ বাইশ বছর পর । এর আগে ২০০০ সালে সোনিয়া গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জিতেন্দ্র প্রসাদ হেরে গিয়েছিলেন । তার আগে ১৯৯৭ সালে সীতারাম কেশরী সভাপতি নির্বাচনে শারদ পাওয়ার , রাজেশ পাইলটকে হারিয়ে সভাপতি হয়েছিলেন । এখন দেখার শেষ পর্যন্ত কী হয় । তল্পিবাহক সভাপতি নাকি অন্য কেউ ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.