চিকিৎসার অমানবিক মুখ বাদলকে ছাড়া নিয়ে প্রশ্ন!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:- পুলিশি নির্যাতনে গুরুতর জখম বাদল ত্রিপুরা সুস্থ না হয়ে কী করে দক্ষিণ জেলা হাসপাতালের ট্রমা সেন্টার থেকে বাড়ি ফিরে গেলো এই প্রশ্ন উঠেছে। পনেরো অক্টোবর সন্ধ্যায় মনু বাজার গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে রেফার হয়ে আসে বাদল। তার পুরো শরীরে কালশিটে আঘাতের চিহ্ন। জখম চোখ দুটি। ষোল অক্টোবর সকাল নটায় তাকে জিবি হাসপাতালে রেফার করে দেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
কিন্তু বাদল ত্রিপুরা জিবি হাসপাতালে যায়নি। যেতে পারেনি। কারণ তার কাছে আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। এমনকী জেলা হাসপাতাল থেকেও অ্যাম্বুলেন্স জুটেনি। ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে ভর্তি থাকার সময় বাদল এমন অবস্থা কী করে হয়েছে এ সম্পর্কে অনেকের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। এক মদমত্ত পুলিশ কর্মী তার চোখে অনবরত ঘুষি মেরেছে বলে ব্যক্ত করেছে। বাদল পুলিশি অত্যাচারের শিকার এ খবর চিকিৎসকও জেনেছেন। প্রেসক্রিপশনে সেটা স্পষ্টত উল্লেখও রয়েছে।একজন অজপাড়া গাঁয়ের উপজাতি যুবক আগরতলায় রেফার করে দিলে সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারবেন কি না নিশ্চিত না হয়ে কী করে তাকে হাসপাতাল ছেড়ে দিলো? বিভিন্ন মহলে এই প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে আহত ব্যক্তি পুলিশি মারে গুরুতর জখম এবং এটি নিশ্চিতভাবে মামলা মোকদ্দমা সংক্রান্ত ইস্যু। জেলা হাসপাতালের প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী বাদল ট্রমা সেন্টার থেকে
বের হয়ে পিচ রাস্তা ধরে পায়ে হেঁটে ট্রাইজংশন যায়। তার পেছন পেছন দুইজন মহিলাও ছিল। যাদের একজন সম্ভবত তারই স্ত্রী। সেখান থেকে সরাসরি সাক্রমের গাড়িতে উঠে চলে যায় বলে জানা গেছে। ওইদিন অর্থাৎ যোল অক্টোবর রাতে বাড়িতে মৃত্যু হয় বাদলের। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলে বাদল বেঁচে যেতো। কারণ শান্তিরবাজারস্থিত দক্ষিণ জেলা হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও রয়েছেন। সাম্প্রতিককালে এই হাসপাতালে বেশ কয়েকটি বিরল অথচ সফল অপারেশন হয়েছে। অনেক অসাধ্য চিকিৎসা করেছেন এখানকার দক্ষ অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বা মুমূর্ষু রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিতে এখানে পৃথকভাবে গড়ে উঠেছে ট্রমা সেন্টার। দেড় বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী এই ট্রমা সেন্টারের উদ্বোধনও করেন। এহেন একটি উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র আঘাতপ্রাপ্ত বাদলের চিকিৎসার দায় কেন নেয়নি তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, রেফার করে দেওয়াতে আর্থিক ও মানসিক অনটনে বাদলকে আগরতলায় নিয়ে যাবার সাহস করেনি তার পরিজনেরা। রেফার না হলে জেলা হাসপাতালেই চিকিৎসার জন্য থেকে যেতো। রেফার হওয়াতে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং জেলা হাসপাতাল ত্যাগ করে বাড়ি চলে যায়। ফলে বাড়িতেই বিনা চিকিৎসায় মার যায়।
শান্তিবাজার জেলা হাসপাতাল থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটারেরও বেশি দূলে বাদলের বাড়ি। এত দূর থেকে এসেও চিকিৎসার সুযোগ পায়নি জখম বাদল এমন একজন গ্রামের অসহায় দরিদ্র ব্যক্তিকে নির্দয়ভাবে চলে যেতে দিলো হাসপাতাল?

Dainik Digital

Recent Posts

হার্ভের বিরুদ্ধে ৮ জনে খেলে, এক ম্যাচ আগেই নকআউটে ব্লাডমাউথ।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-হার্ভেকে গত ম্যাচে হারানোর পরই এ গ্রুপ থেকে সমীরণ চক্রবর্তী স্মৃতি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের…

16 hours ago

জলের দরে বিকোচ্ছে সবজি, মাথায় হাত কৃষকের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শীতকালীন সবজির মতো দ্রুত দাম পড়ছে গ্রীষ্মকালীন সবজিরও।জলের দরে বিকোচ্ছে নতুন উঠে আসা…

16 hours ago

কৃত্রিম ধাতব হৃদপিণ্ড নিয়ে একশো দিন বেঁচে রেকর্ড সৃষ্টি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বিশ্বের প্রথম মানুষ হিসেবে টাইটানিয়াম ধাতুর তৈরি কৃত্রিম হৃদ্যন্ত্র নিয়ে ১০৫ দিন বেঁচে…

17 hours ago

শুদ্ধিকরণ ও রাজনীতি!!

এই উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনি ব্যবস্থায় অনিয়ম ও এ গড়মিল নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।স্বৈরাচারী কিংবা…

17 hours ago

মধ্যপ্রদেশের সরকারি হাসপাতালে আগুন!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রের একটি হাসপাতালে রবিবার সকালে অগিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় হতাহতের খবর নেই…

2 days ago

ভয়ঙ্কর আত্মঘাতী হামলায় ছিন্ন ভিন্ন ৯০ সেনার দেহ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রবিবার বেলুচিস্তানে একটি সেনা কনভয়ে হামলা চালানো হয়। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এই হামলার…

2 days ago