চিনপন্থীদের মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা শোভা পায় না!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই শাসকদল বিজেপি দুই কেন্দ্রে প্রচার তেজি করে চলেছে। এককথায় গোটা রাজ্যে শাসক দল সর্বশক্তি নিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়েছে।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দলের সকল স্তরের নেতা-নেত্রী এবং কার্যকর্তারা প্রচার কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।একেবারে এলাকা ধরে ধরে প্রতিটি ভোটারের কাছে যাওয়ার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে শাসক দল।এই ক্ষেত্রে বিরোধী দল থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে শাসক দল। পাশাপাশি পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব গোটা কেন্দ্রেই প্রচারে রীতিমতো ঝড় তুলেছেন। তার প্রতিটি নির্বাচনি জনসভাতে উপচে পড়ছে জনতার ভিড়।তাকে ঘিরে দলীয় কার্যকর্তা থেকে শুরু করে, সাধারণ কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।আর প্রতিটি নির্বাচনি সভাতেই তিনি রাজ্যের সিপিএম-কংগ্রেস জোটকে তীব্রভাবে নিশানা করে চলেছেন।
শুধু জোটকে নিশানা করেই ক্ষান্ত থাকছেন না, সিপিএম ও কংগ্রেস দলের বর্তমান নেতৃত্বকেও তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করে চলেছেন।বিশেষ করে রাজ্যের চার বারের মুখ্যমন্ত্রী, সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন।নাম না করে তীব্রভাবে সমালোচনায় বিদ্ধ করছেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের বিরুদ্ধেও। বুধবারও বাগমা, মাতাবাড়ি এবং কাকড়াবনে আয়োজিত তিনটি জনসভাতে কংগ্রেসের জোট জমানা এবং পঁয়ত্রিশ বছরের বাম জমানার রাজনৈতিক খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, দুর্নীতি থেকে শুরু করে শোষণ, বঞ্চনার খতিয়ান তুলে ধরে সিপিএম কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলেন।তিনি বলেন, সিপিএম, কংগ্রেস এই রাজ্যের চল্লিশ লক্ষ মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। মানুষের আবেগ নিয়ে তারা রাজনীতি করে গেছে শুধু নিজেদের স্বার্থে।দুই দলই একে-অপরের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।
এদিন মাতাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের গামারিয়াতে আয়োজিত জনসভাতে ভাষণ দিতে গিয়ে শ্রীদেব প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন,আপনি এবং আপনারা কোন্ গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলছেন? আপনারাতো চিনপন্থী। লেলিন, স্তালিন, মাও-এর পূজারী।গণতন্ত্রের প্রতি যাদের আস্থা, বিশ্বাস নেই। যারা দলীয় অফিসে ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে না। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই রাজ্যে রাজনীতির নামে কি চলেছে, তা রাজ্যবাসী ভুলে যায়নি। আপনাদের কারণেই এই রাজ্যে শত শত শহিদ বেদী তৈরি হয়েছে। আপনাদের কারণেই এই রাজ্যে দাঙ্গা হয়েছে। আপনাদের কারণেই এই রাজ্যে শত শত মা-বোন তাদের ইজ্জত হারিয়েছে। হাজার হাজার বাড়ি ঘর আগুনে পুড়েছে।হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ঘর ছাড়া হয়েছে, এলাকা ছাড়া হয়েছে। আজ আপনারা শুধু অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার জন্য লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে নির্লজ্জের মতো একে- অপরের হাত ধরে মানুষকে বলছেন ভোট দিতে।ত্রিপুরার মানুষ এবার আপনাদের উচিত শিক্ষা দেবে।
এদিন গামারিয়া জনসভায় উপস্থিত ছিলেন তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণও।তিনি বলেন,এই কেন্দ্র থেকেই এক সময় আমার মা বিভুকুমারী দেবী বিধায়ক হয়েছিলেন।এই মাতাবাড়ি আসলে একটি বিধানসভা কেন্দ্র নয়, এটি ত্রিপুরা রাজ্যের পরিচিতি। আমি এখানে বিজেপি দলের প্রচার করতে আসিনি।আমি এসেছি আমার বন্ধু, ভাই বিপ্লব কুমার দেবের জন্য। কারণ,বিপ্লব দেবের মধ্যেই আমি তিপ্রাসাদের জন্য প্রকৃত অর্থে ভালোবাসা দেখেছি। ত্রিপুরার জাতি-জনজাতি মানুষের জন্য ভালোবাসা দেখেছি। তাই প্রকৃত নেতাকে চিনুন।এতে উপকৃত হবে এই রাজ্য, এই রাজ্যের মানুষ। এদিনও ভাষণ দিতে গিয়ে সিপিএম-কংগ্রেসকে তুলোধুনো করেন প্রদ্যোত কিশোর।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, এদিন তিনটি জনসভাতেই জাতি-জনজাতি মানুষের উপস্থিতি ছিলো ব্যাপক।এদিন সভাগুলোতে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, তিপ্রা মথার ডেভিড মুড়াসিং, বীরলাল নোয়াতিয়া এবং বিজেপির মণ্ডল সভাপতিরা।