চিরঘুমের দেশে প্রশান্ত (বাচ্চু)!!

 চিরঘুমের দেশে প্রশান্ত (বাচ্চু)!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-একেবারে আচমকাই চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন দৈনিক সংবাদ পত্রিকার অন্যতম কর্মকর্তা, শুভানুধ্যায়ী,পরামর্শদাতা প্রশান্ত দাস।সকলের পরম প্রিয়,কাছের মানুষ ‘বাচ্চু দা’। শুক্রবার সকাল ৯.৪৫ মিনিট নাগাদ কলকাতায় একটি বেসরকারী হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর।তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসতেই দৈনিক সংবাদ আগরতলা,কলকাতা এবং দিল্লী অফিসের সমস্ত বিভাগের কর্মীদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।সকলের প্রিয় ‘বাচ্চু দা’ আর নেই- এই সংবাদ প্রত্যেকের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়।যেন বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছিল।সম্প্রতি শারীরিক কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাঁকে কয়েকদিন আগে কলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়।কিন্তু চিকিৎসকদের সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ করে শুক্রবার সকালে তিনি চিরঘুমের দেশে পাড়ি দেন।সদাচারী,সদালাপী,সুবিনয়ী এবং সুমিষ্ট স্বভাবের অকৃতদার প্রশান্তবাবু দৈনিক সংবাদের সকল স্তরের কর্মীদের কাছে ‘বাচ্চুদা’ নামেই সব থেকে বেশি পরিচিত ছিলেন।তিনি ছিলেন দৈনিক সংবাদের প্রাণপুরুষ প্রয়াত ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিকের ভাগ্নে এবং দৈনিক সংবাদের প্রাক্তন প্রকাশক স্বর্গীয়া মলিনা দাস ও স্বর্গীয় পরিতোষ দাসের একমাত্র পুত্র।পাশাপশি তিনি ছিলেন পত্রিকার কার্যনিবাহী সম্পাদক পারমিতা লিভিংস্টোনের অগ্রজ। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন একাধারে ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য এবং দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ফিচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।তিনি প্রধানত কলকাতা অফিসেই তেন এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আন্তরিকভাবেই সেই দায়িত্ব পালন করে গেছেন।সর্বস্তরের কর্মীদের সাথে বন্ধুর মতো মিশে যাওয়ার সহজাত অভ্যাস ও গুণ ছিল তাঁর। কেউ বিপদে পড়েছে শুনলেই অকপটে পাশে দাঁড়াতেন। চেনা, অচেনা কত মানুষকে তিনি অবলীলায় সাহায্য করেছেন, কিন্তু পাশের মানুষটিকে সেকথা ভানওদিন জানতে দিতেন না।নীরবে অপরের উপকারে সর্বদা নিজেকে য়োজিত রেখেছিলেন।দারুণ রসবোধের একজন মানুষ। তিনি প্রায়ই বলতেন, দৈনিক সংবাদ পত্রিকা আমার বৃহৎ পরিবার।বিবাহ করলে এত বড় পরিবার পেতাম না। রাজনীতির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখতেন।একজন দুঁদে রাজনৈতিক ব্যক্তির মতোই রাজনীতির জগৎটাকে নিতেন।বিশ্লেষণ করতেন।বহু রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী-মন্ত্রীর সাথে তাঁর অক্তিগত যোগাযোগ ছিল। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে ছিল তাঁর রিচয়।দৈনিক সংবাদ পত্রিকাকে তিনি প্রাণের চাইতেও বেশি ভালোবাসতেন।পত্রিকার অগ্রগতিই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান।প্রশান্তবাবুর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ভাস্টের চেয়ারম্যান সঞ্জয় পাল।তিনি বলেন, আমরা ওকে ‘বাচ্চি’ বলে ডাকতাম।বয়সে ছোট হয়েও অনেক তাড়াতাড়ি আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।বাচ্চি ছিল বড় মনের মানুষ।ওর মৃত্যুতে আমি আমার পরিবারের একজন সদস্যকে হারালাম। নীরবে অনেক সেবামূলক কাজ করেছে ‘বাচ্চি’। পত্রিকার সার্বিক উন্নতি নিয়ে ওর ছিল বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি। বিশেষত,বিনোদনের পাতা, নান্দনিক, অপরূপা, বিচিত্রা, এই বিভাগগুলি আরও কিভাবে সময়োপযোগী ও জনপ্রিয় করা যায়,সেই বিষয়ে ছিল তাঁর সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি।প্রায়ই এ বিষয়ে আলোচনা করতো। প্রশান্তবাবুর মৃত্যুতে গভীর শোক ব্যক্ত করে দৈনিক সংবাদ পত্রিকার বার্তা শম্পাদক প্রদীপ দত্ত ভৌমিক বলেন,বাচ্চু ছিল আমার ছোট ভাই,সহকর্মী।পরবর্তীকালে ট্রাস্টের সদস্য হিসাবে ওকে পেয়েছি।বাচ্চু ছিল খুবই সাহসী এবং পরোপকারি। একজন রসবোধ সম্পন্ন মানুষ।পত্রিকার মানোন্নয়নে ছিল সদা সচেষ্ট। দৈনিক সংবাদ পত্রিকার জেনারেল ম্যানেজার এবং নর্থ ইস্ট কালার্স পত্রিকার প্রকাশক মিহির গুপ্ত গভীর শোকজ্ঞাপন করে বলেন, ওর সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের।বাচ্চুদা ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই প্রতিষ্ঠনের প্রতি দরদী একজন মানুষ। অসম্ভব বুদ্ধিদীপ্ত এবং মজ্জাগত পরোপকারী। মানুষের সাথে সহজিয়া মেলামেশা ছিল ওর বিশেষ গুণ। যে কোনও সমস্যাকে সহজেই বুঝে ফেলতে পারতেন এবং সমাধানের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। মৃত্যুকালে প্রশান্তবাবু রেখে গেছেন মাতৃসমা দিদি পারিজাত সাহা,বোন পারমিতা লিভিংস্টোন এবং দুই ভাগনি পূজা সাহা ও আকাংশ ক্রিস্টিনা লিভিংস্টোন সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধদের।উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রশান্ত দাসের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন তাঁর মাতৃসমা দিদি পারিজাত সাহা।ব্যক্তি জীবনে পারিজাত সাহা ছিলেন প্রশান্ত দাসের মায়ের মতো।আদরে শাসনে তাঁকে সন্তানস্নেহে আগলে রাখতেন তাঁর প্রিয় পারিদি। অসুস্থতা থেকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং শেষ সময় পর্যন্ত ভাগনি পূজা ও তার বান্ধবী শ্রাবন্তী নিরন্তর চেষ্টা করেছেন তাদের মামুকে সুস্থ করে তুলতে।কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়।এদিকে প্রশান্ত দাসের প্রয়াণে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী জওহর সাহা ও বিধায়ক রতন চক্রবর্তী।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.