জটিল পাঁকে হরিয়ানা!!

 জটিল পাঁকে হরিয়ানা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজনৈতিক সংকট হরিয়ানায়।শুধু তাই নয়,সে রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকারের উপর ডবল ঝটকা লেগেছে।একে তো তিন নির্দল বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করে বিজেপি সরকারকে ঝটকা দিয়েছে।অন্যদিকে জাট-রাজপুত-গুঞ্জর বিক্ষোভে উত্তাল হরিয়ানা। হরিয়ানায় রাজ্য সরকারের সামনে মহাসংকটের মুহূর্তে প্রাক্তন শরীক দুষ্মন্ত চৌতালাও আবার রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য বলেছেন।বিরোধী কংগ্রেস অবশ্য বেশি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে না। কেননা চলতি বছরই হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট। এখনই সরকার ভেঙে ফেলার অতিসক্রিয়তা তাই কংগ্রেস দেখাচ্ছে না আপাতত।এরই মধ্যে হরিয়ানায় আগামী ২৫মে (দেশের ষষ্ঠ দফা ভোটের দিন) রাজ্যের ১০টি লোকসভা আসনে ভোট। হরিয়ানার আকাশে বাতাসে এবার একটাই কথা ভেসে বেড়াচ্ছে এবং তা হল হরিয়ানায় এবার ১০-০ হচ্ছে না। কেউ বলছেন ৫-৫, কেউ বলছেন ৬-৪ আবার কেউ বলছেন উল্টোদিকে ৯-১ ও হতে পারে।কেননা কৃষক আন্দোলনের আঁতুড়ঘর হরিয়ানাতে এমনিতেই বিজেপির অন্দরে এবার আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে।
গত মার্চ মাসে আচমকা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরকে সরিয়ে দেয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর পরিবর্তে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হোন নায়েব সিং সাইনি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এটি একটি বড় টনিক। যখনই কোনও রাজ্যে সরকার বিরোধী একটা পরিবেশ তৈরি হয় সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী বদল করে দেয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।সেই টোটকাতে সব সময়ই যে কাজ হয় তা কিন্তু নয়। উত্তরাখণ্ড,ত্রিপুরা, কর্ণাটকে এই টোটকা চালায় বিজেপি।কিন্তু কর্ণাটকে এই টোটকা কাজে দেয়নি। হরিয়ানায় এবার একই টোটকা কাজে লাগায় বিজেপি।আচমকা লোকসভা ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী বদল করে দেয় কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
এরই মধ্যে হরিয়ানার সরকারের সামনে যে লোকসভা ভোট চলাকালীন এই রাজনৈতিক সংকট দেখা দেবে তা কোনওভাবেই আঁচ করতে পারেনি বিজেপি।
তাই রাজনৈতিক মহল মনে করছে লোকসভা ভোটে বেজায় ঝটকা লাগতে পারে বিজেপির সামনে।এমনিতেই কৃষক জাঠ বিক্ষোভ বিকল্প বিজেপি সামলে দেবে তাই ভেবে পাচ্ছে না।তাই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে কৃষকদের সাথে আলোচনা চালানোর পরামর্শ দেয়।শুধু তাই নয়, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার একটি পর্যবেক্ষক দলও পাঠাচ্ছেন হরিয়ানায় পরিস্থিতি মোকাবিলায়।স্বয়ং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা হরিয়ানা যাচ্ছেন। উপরন্তু গোঁদের উপর বিফফোড়ার মতো আচমকা রাজ্য সরকারের উপর এসে রাজনৈতিক সংকট হামলে পড়ে।এতে লোকসভা ভোট চলাকালীন রাজ্য বিজেপিতে এক প্রকার অস্থিরতা আরও বেড়ে যায়।
তিন নির্দল বিধায়কের আচমকা সরকারে উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারে সরকার পুরোপুরি অপ্রস্তুত হয়ে যায়।৯০ আসন বিশিষ্ট হরিয়ানায় বর্তমানে- বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৪০। কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৩০। দুষ্মন্ত চৌতালার জেজেপির (জননায়ক জনতা পার্টি) সদস্য সংখ্যা ১০।গত মার্চ মাসে জেজেপি সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। নির্দল বিধায়কদের সমর্থনে সরকার চলছিল। এর মধ্যে তিন নির্দল বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সরকার বর্তমানে সংখ্যালঘু।রাজ্যে ২ টি আসন বর্তমানে খালি।তাহলে ৮৮ আসনের মধ্যে এখন সংখ্যা গরিষ্ঠতার জন্য বিজেপির দরকার ৪৪ জন বিধায়ক। সাতজন নির্দলের মধ্যে তিনজন বাদে ৪২ জনে সমর্থন রয়েছে সরকারের পাশে। ফলে সরকারকে আরও একজন বিধায়কের সমর্থন দরকার। ইতিমধ্যেই দুষ্মন্ত চৌতালা রাজ্যপালের কাছে চিঠি দিয়ে রাজ্যে সরকারকে গরিষ্ঠতা প্রমাণের দাবি জানান। কংগ্রেস ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। কংগ্রেস যদিও রাজ্যপালের কাছে দাবি জানিয়েছে যে, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হোক। এবার রাজ্যপালের কোর্টে বল চলে গেছে। রাজ্যপাল কি করবেন তা রাজ্যপালই জানেন। আপাতত লোকসভা ভোটের মরশুম চলাকালীন হরিয়ানার বিজেপি সরকারের উপর যে দুর্যোগের কালোমেঘ এসে হাজির হয়েছে তা বিজেপিকে বেজায় অপ্রস্তুত করে দিয়েছে। লোকসভা ভোট বিজেপি একে কীভাবে সামাল দেয় তাই এখন দেখার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.