জাদুঘর সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্বের আহ্বান সুশান্তর
অনলাইন প্রতিনিধি || ‘জাদুঘর, স্থায়িত্ব ও সমৃদ্ধি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের সাথে বৃহস্পতিবার রাজ্যেও ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে উদ্যাপিত হলো আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস।দিবসটি উদ্যাপনের অঙ্গ হিসেবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী আগরতলার উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ ও স্টেট মিউজিয়াম পরিসরে পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনাচক্র ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মঙ্গলদীপ প্রজ্জলিত করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ববলেন,সারা বিশ্বের সাথে আমাদের রাজ্যেও পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে আজ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস।তিনি বলেন, আমি খুবই আনন্দিত যে দিবসটি উদ্যাপনের অঙ্গ হিসেবে আজ উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ ও স্টেট মিউজিয়াম প্রাঙ্গণে প্রবেশ মূল্য ব্যতীত নিখরচায় মহিলাদের জাদুঘর দর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি রাজধানী আগরতলার অভয়নগরস্থিত চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউশনের আবাসিকদের পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে জাদুঘর ভ্রমণ করানো হয়েছে। প্রতি বছরই একটি স্লোগান সামনে রেখে এই দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরা হয় যাতে করে ছাত্র-শিক্ষক- গবেষক এবং পণ্ডিত ব্যক্তিদের গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং বিশ্ব নাগরিকরা জাদুঘর/সংগ্রহশালা/ মিউজিয়াম ও তার আপন ঐতিহ্য সম্পর্কে ভাবতে শেখে।এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে,‘জাদুঘর স্থায়িত্ব এবং সমৃদ্ধি’।তিনি বলেন, আমরা সকলেই জানি মিউজিয়াম হচ্ছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে।জাদুঘরে বৈজ্ঞানিক,শৈল্পিক ওঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বস্তুসমূহ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয়। জাদুঘর রক্ষিত প্রতিটি সামগ্রী এক-একটি ইতিহাস তার সঙ্গে বয়ে নিয়ে চলেছে।সংগ্রহশালা বা জাদুঘর সম্পর্কে আগ্রহ বা কৌতুহল আজও আমরা দেখতে পাই নূতন প্রজন্মের মধ্যে।জাদুঘর যেন একেকটি ইতিহাসের বই,এর একেকটি নিদর্শন যেন ইতিহাসের কোনও বইয়ের একেকটি পাতা।
সত্যিকারের জাদুঘর এমন একটি জায়গা যেখানে সময়কে যেন বদলে ফেলা হয়েছে স্থানের আদলে!তাইতো আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসে আমাদের সকলকে জাদুঘর নিয়ে জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি জাদুঘরগুলোর সংরক্ষণ করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে করে নূতন প্রজন্মের পাশাপাশি যে কোনও সময়ের মানুষ তাদের অতীতের বা তাদের পূর্ব প্রজন্মের ঐতিহ্য,সংস্কৃতি, সভ্যতা,দর্শন,জ্ঞান সবকিছু জানতে পারে।তিনি বলেন, বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চাহিদার প্রভাবে পূর্ববর্তী যুগের সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠার ধারণার প্রতিফলনই হচ্ছে আজকের জাদুঘর।পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যতো ইতিহাস জমা হচ্ছে তারই প্রতিচ্ছবি হলো জাদুঘর। আমাদের রাজ্য সংগ্রহশালা উজ্জয়ন্ত প্রাসাদেও আমাদের রাজ্যের সাথে সম্পর্কিত অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মারক যত্ন সহকারে রক্ষিত আছে।এখানে রয়েছে বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন, মুদ্রা, বাসন, তৈজসপত্র, মানচিত্র, মানবতার সাথে সম্পৃক্ত বস্তুগত ও অবস্তুগত নানা উপাদান, আরও আছে লিপিবদ্ধ ইতিহাস। তাই এটিকে সংরক্ষণের ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমার-আপনার-সবার। আজকের এই অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেডের অধিকর্তা তপন কুমার দাস।এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা,কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন দপ্তরের ম্যানেজার অজয় কৃষ্ণা সহ অন্যান্য অতিথিরা।