Categories: দেশ

জিএসটির ৫ বছরে ঠোকাঠুকি

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

জিএসটি নিয়ে প্রবল টানাপোড়েন । জিএসটির পঞ্চম বর্ষপূর্তি সমাপ্ত হল । প্রত্যাশিতভাবেই শুক্রবার থেকে কেন্দ্রীয় সরকার বিগত পাঁচ বছরে কীভাবে জিএসটি ভারতের অর্থনীতি ও বাণিজ্যকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে ইতিবাচকভাবে সেই প্রচার শুরু করেছে । কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক বলেছে , এই পাঁচ বছরে জিএসটি যেভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে , সেটা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পক্ষে লাভজনক ও সরল হয়েছে । পাশাপাশি ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ , উৎপাদন সেক্টর থেকে অনলাইন , প্রতিটি ব্যবসায়ীকে অনেক সুবিধা প্রদান করেছে । অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এদিন জিএসটি দিবস উদ্বোধন করেন দিল্লীতে ।

তিনি বলেন , জুন মাসে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার কোটি টাকা জিএসটি আদায় হয়েছে । গত পাঁচ বছরে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে জিএসটি ব্যবস্থাকে সফল করার জন্য । কিন্তু অর্থমন্ত্রক এবং জিএসটি ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মী অফিসারদের অক্লান্ত পরিশ্রম এই নয়া করকাঠামোকে সফল ও আধুনিক করে তুলতে সমর্থ হয়েছে । সীতারামনের এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ খন্ডন করে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন , জিএসটি জন্মলগ্ন থেকেই একটি ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা । আজ পাঁচ বছর সম্পন্ন হওয়ার পর এই করকাঠামোর সম্পূর্ণ ভুল ত্রুটি এবং বিপজ্জনক অংশগুলি প্রকাশিত ।

ভারতের অর্থনীতিকে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে জিএসটির এই নতুন মডেল । ২০১৪ সালের আগে যে জিএসটি কাঠামো ইউপিএ সরকার গঠন করেছিল , সেই কাঠামোকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে নতুন যথেচ্ছাচার সংবলিত ভ্রান্তিপূর্ণ এবং বিভ্রান্তিমূলক ট্যাক্স ব্যবস্থা চালু করেছে মোদি সরকার । যা এই পাঁচ বছর পর বস্তুত এখন গোটা অর্থনীতিকেই ধ্বংস করে দিয়েছে এই জিএসটি । তাই অবিলম্বে জিএসটি ব্যবস্থার এই কাঠামো বাতিল করে দেওয়া হোক । পরিবর্তে একটিমাত্র ট্যাক্সই দিতে হবে , এই ব্যবস্থা চালু হোক । এই দাবি করে চিদাম্বরম এদিন এআইসিসি দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ।

তিনি তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন , সবথেকে বেশি লোকসানে পড়েছে রাজ্যগুলি । তাদের ২০১৭ সালে বলা হয়েছিল প্রতি বছর ১৪ শতাংশ হারে রাজস্ব বৃদ্ধিহার ঘটবে । আর যে রাজস্ব ঘাটতি অথবা লোকসান হবে সেই ক্ষতিপূরণ ওই ১৪ শতাংশ বৃদ্ধিহার ধরে নিয়ে কেন্দ্ৰ প্রদান করবে । কিন্তু রাজ্যগুলি ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ লোকসানের সম্মুখীন হল । কারণ রাজ্যগুলির অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঋণের বোঝা চাপানো হয়েছে তাদের উপর । আর এখন একদিকে যেমন জিএসটি আদায় কমে যাচ্ছে , আবার মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাণিজ্যিক লেনদেন প্রায় শ্লথ হয়েছে , ঠিক তখন আগামীদিনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না সেটা নিয়েও কেন্দ্ৰীয় সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে । জানানো হচ্ছে না ।

একইভাবে চিদাম্বরমের দাবি , ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাকে প্রবল ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল নোটবন্দি প্রকল্পে । আর তারপর এই সেক্টরকে ধনেপ্রাণে মেরে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে এই জিএসটির মাধ্যমে । সুতরাং আজ মোদি সরকার যে জিএসটির এত সাফল্য প্রচার করছে , অর্থনীতির মন্দার অন্যতম কারণই এই করকাঠামো ।

Dainik Digital

Recent Posts

নি:শব্দে এগোচ্ছে চিন!!

প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…

13 hours ago

নেতা-মন্ত্রীদের বারবার ঘোষণা সত্ত্বেও গ্রুপ ডি নিয়োগ হচ্ছে না!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…

13 hours ago

স্মার্টসিটি প্রকল্পের কাজে বন্ধ উড়াল সেতু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…

13 hours ago

বার্ষিক পরীক্ষার সূচি নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের রসিকতায় চরম ক্ষোভ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…

13 hours ago

রাজ্যের প্রতীকে স্বীকৃতি কেন্দ্রের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…

13 hours ago

চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে ১০টি সাংগঠনিক জেলা সভাপতির নামে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…

13 hours ago